জানুয়ারিতে টি-টোয়েন্টি লিগের ছড়াছড়ি, বিপিএলের সঙ্গে আরও ৪ টুর্নামেন্ট
ক্রিকেটকে বাণিজ্যিকীকরণ করে ফেলার পর ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টি-টোয়েন্টি লিগগুলো বছরের অনেকটা সময় কেড়ে নিচ্ছে। বিশ্বজুড়ে এর ব্যাপ্তি এতটাই বেড়ে গেছে যে, কখন কোন লিগ শুরু ও শেষ হচ্ছে, তা মনে রাখাই মুশকিল।
গত কয়েক বছর ধরে তো কয়েকটি টুর্নামেন্ট একই সময়ে কিংবা কাছাকাছি সময়ে চলছে। ২০২৫ সালও এর ব্যতিক্রম হবে না। নতুন বছরের প্রথম মাসেই একই সঙ্গে দেখা যাবে পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্ট—বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল), অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগ, দক্ষিণ আফ্রিকার এসএ২০, নিউজিল্যান্ডের সুপার স্ম্যাশ ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল লিগ (আইএলটি২০)।
বিপিএল, বিগ ব্যাশ, এসএ২০ ও সুপার স্ম্যাশের সূচি আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল। আজ আইএলটি২০-এর সূচিও চূড়ান্ত করে ফেলল আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। অন্য তিন টুর্নামেন্টের মতো আইএলটি২০-এর সূচিও বিপিএলের সঙ্গে সাংঘর্ষিক হতে চলেছে।
জানুয়ারিজুড়েই চলবে এই পাঁচ টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট। তাই যেসব ক্রিকেটার একাধিক লিগের ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন, তাঁরা কোনটি রেখে কোনটিতে খেলবেন, তা নিয়ে দ্বিধায় পড়তে পারেন। ‘গণহারে প্রস্থানের’ কারণে গত মৌসুমের শেষ দিকে অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশ লিগ বিদেশি খেলোয়াড়ের সংকটে ভুগেছে। বিগ ব্যাশ ছেড়ে অনেকে আরব আমিরাতে আইএলটি২০ খেলতে গিয়েছিলেন। এবারও তেমন কিছু দেখা যেতে পারে।
জানুয়ারিজুড়ে যত টি২০ লিগ
লকি ফার্গুসনের কথাই ধরুন। নিউজিল্যান্ডের ফাস্ট বোলার আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া বিগ ব্যাশে সিডনি থান্ডারের হয়ে খেলবেন। ১১ জানুয়ারি আইএলটি২০ শুরু হলে তিনি আরব আমিরাতে যাবেন ডেসার্ট ভাইপার্সের হয়ে খেলতে। অস্ট্রেলিয়ার দুই ক্রিকেটার জেইক ফ্রেজার ম্যাগার্ক (মেলবোর্ন রেনেগেডস ও দুবাই ক্যাপিটালের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ) ও ম্যাথু ওয়েড (হোবার্ট হারিকেন্স ও শারজা ওয়ারিয়র্স), ইংল্যান্ডের ক্রিস জর্ডান (হোবার্ট হারিকেন্স ও গাল্ফ জায়ান্টস), ওয়েস্ট ইন্ডিজের শাই হোপও (হোবার্ট হারিকেন্স ও দুবাই ক্যাপিটালস) কোনো টুর্নামেন্টের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত খেলতে পারবেন না।
এই অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যেতে হবে বাংলাদেশের রিশাদ হোসেনকেও। ২২ বছর বয়সী এই লেগ স্পিনার প্রথমবারের মতো বিগ ব্যাশ লিগে দল পেয়েছেন। বিসিবি থেকে অনাপত্তিপত্র পেলে তাঁকে হোবার্ট হারিকেন্সের জার্সিতে দেখা যাবে। কিন্তু হোবার্ট রিশাদকে বেশি দিন পাবে না। ৩০ ডিসেম্বর থেকে বিপিএলের ১১তম আসর শুরু হবে। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশালের হয়ে খেলতে রিশাদকে দ্রুতই দেশে ফিরতে হবে।
ডেভিড ওয়ার্নারের ব্যাপারটা আবার পুরোপুরি আলাদা। এবার বিগ ব্যাশের পুরো মৌসুম খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওয়ার্নার। সিডনি থান্ডারকে নেতৃত্বও দেবেন। ওদিকে আইএলটি২০-এর দল দুবাই ক্যাপিটালসের সঙ্গে চুক্তি আছে তাঁর। বিগ ব্যাশে প্রথম পর্বে সিডনি থান্ডারের শেষ ম্যাচ ১৭ জানুয়ারি। দলটি ফাইনালে উঠলে ওয়ার্নারকে থাকতে হবে ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত। এর অর্থ, ওয়ার্নার আইএলটি২০-এর শেষ ভাগে গিয়ে দুবাইকে প্রতিনিধিত্ব করতে পারবেন।
আইএলটি২০-এর প্রধান নির্বাহী ডেভিড হোয়াইট জানিয়েছেন, জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারির ঠাসা সূচি এড়িয়ে এই টুর্নামেন্টে অক্টোবর-নভেম্বরে আয়োজনের কথা ভাবা হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত আগের দুই আসরের মতো এবারও একই সময়ে আয়োজনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
এই পাঁচ টি-টোয়েন্টি লিগের মতো আগামী বছর ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) ও পাকিস্তান সুপার লিগও (পিএসএল) প্রায় একই সময়ে হবে। এ নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে নতুন করে ‘সংঘাত’ দেখা দিতে পারে বলে কদিন আগে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই।
পিএসএল সাধারণত ফেব্রুয়ারি-মার্চে হয়, আইপিএল সচরাচর মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের শেষ সপ্তাহ পর্যন্ত চলে। কিন্তু আগামী বছর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ফেব্রুয়ারি-মার্চে হওয়ায় ওই সময়ে পিএসএলের দশম আসর আয়োজন করতে পারবে না পিসিবি। এর পরিবর্তে তারা এপ্রিল-মে মাসে পিএসএল আয়োজন করতে চায়। ঠিক একই সময়ে আইপিএলের ১৮তম আসরও চলবে।