সূচি
দল পরিচিতি
দক্ষিণ আফ্রিকা: স্বপ্নভঙ্গের গল্প কি পাল্টাবে
বিশ্বকাপ দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে এক চিরন্তন দুঃখের নাম। ১৯৯১ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফেরার পর টেস্ট ও ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে একাধিকবার শীর্ষে উঠেছে, ওয়ানডেতেও সবচেয়ে সফল দলগুলোর একটি। এই সংস্করণে প্রোটিয়াদের ম্যাচ জয়ের হার ৬০ শতাংশের বেশি। কিন্তু আইসিসির টুর্নামেন্টে সাফল্য বলতে এক ১৯৯৮–এর মিনি বিশ্বকাপ (পরে যেটির নাম চ্যাম্পিয়নস ট্রফি)। আর যে ‘চিরন্তন দুঃখ’–এর কথা বলা হলো, সেটি আসলে বিশ্বকাপের কারণে।
দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য বিশ্বকাপ মানেই করুণ সব গল্প। ১৯৯২ সংস্করণ দিয়ে অভিষেকের পর এ পর্যন্ত ৮টি বিশ্বকাপের মধ্যে ৪টিরই সেমিফাইনাল খেলেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টি-টোয়েন্টি হিসাব করলে ৬টি। কখনো ফাইনালে উঠতে পারেনি। আর হারগুলোও মর্মান্তিক, কখনোবা আশ্চর্যের। ১৯৯২–এ সেমিফাইনালে বৃষ্টি আইনে সেই ১ বলে ২২ রানের অসম্ভব সমীকরণ, ১৯৯৯–এ সেমিফাইনালে ‘টাই’, যেটি ওয়ানডে ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা ম্যাচ। ক্লুজনার-ডোনাল্ডের সেই দৌড় নিয়ে গবেষণা চলে আজও। দলের বিচারে সেই বিশ্বকাপেই সেরা সম্ভাবনা ছিল প্রোটিয়াদের।
নিজেদের দেশে পরের বিশ্বকাপে গ্রুপ পর্ব থেকেই অবিশ্বাস্যভাবে বাদ, হিসাবে ১ রানের সেই ভুল! ২০০৭ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে নিজেদের বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বনিম্ন স্কোর, এরপর ২০১৫–এর সেমিফাইনালে ডেল স্টেইনের শেষ বলে গ্র্যান্ট এলিয়টের সেই ছক্কা—দক্ষিণ আফ্রিকা ‘চোকার্স’ দুর্নাম কীভাবে এড়াবে! তারকায় ঠাসা স্কোয়াড নিয়ে এসে বারবার খুব কাছে গিয়ে পতন হলে এর আর কী ব্যাখ্যা হয়!
এবার বোধ হয় দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিয়ে তেমন প্রত্যাশা নেই। হ্যাঁ, ভালো কিছু ক্রিকেটার আছেন এবারও, কিন্তু অভিজ্ঞতার ঘাটতি যথেষ্ট। অন্তত বিশ্বকাপে খেলার অভিজ্ঞতা। দক্ষিণ আফ্রিকার ১৫ জনের স্কোয়াডে ৮ জনেরই এটা প্রথম বিশ্বকাপ, যেখানে আছেন স্বয়ং অধিনায়ক টেম্বা বাভুমাও। তবে দক্ষিণ আফ্রিকার পেস বিভাগ রোমাঞ্চকর। এনগিডি, ইয়ানসেন ও কোয়েৎজিদের নিয়ে গড়া পেস আক্রমণের নেতৃত্ব দেবেন কাগিসো রাবাদা।
ব্যাটিংয়ে কুইন্টন ডি কক, টেম্বা বাভুমা, রেসি ফন ডার ডুসেন, এইডেন মার্করাম ও ডেভিড মিলাররা পরীক্ষিত নাম। মার্করাম, ক্লাসেন, মিলারের আইপিএল অভিজ্ঞতাও আছে। যেকোনো বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে দ্রুত রান তুলতে পারেন।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্পিন বিভাগও ভালো। দীর্ঘদিন চোটে ভোগা কেশব মহারাজকে দলে ফেরানো হয়েছে। তাঁর সঙ্গে আছেন বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার তাব্রেইজ শামসি। ভারতের স্পিনবান্ধব কন্ডিশনে দুজনেরই ভালো করার সম্ভাবনা আছে। উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান কুইন্টন ডি কিক এই বিশ্বকাপ খেলেই ওয়ানডে ছাড়বেন। শেষটা নিশ্চয়ই রাঙিয়ে যেতে চাইবেন এই ওপেনার।
কিন্তু দক্ষিণ আফ্রিকাও কি পারবে রাঙাতে? এবার খুব বেশি প্রত্যাশা না থাকাটা তো পক্ষেই যায় তাদের। এবারই কি তাহলে বিশ্বকাপে নতুন গল্প লিখবে দক্ষিণ আফ্রিকা?...আরও