খুলনা টাইগার্স: প্রথম শিরোপার খোঁজে
টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের রোমাঞ্চ নিয়ে আবারও হাজির বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)। আগামী শুক্রবার পর্দা উঠবে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট লিগের। কে জিতবে এবারের বিপিএল, সেই প্রশ্নের উত্তর মিলবে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি। ট্রফিটা হাতে তুলতে সাত ফ্র্যাঞ্চাইজির কে কেমন দল সাজিয়েছে, শক্তিমত্তায় কারা এগিয়ে, কারাই–বা পিছিয়ে—বিপিএল শুরুর আগে এসব নিয়েই এই আয়োজন—
‘বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার লক্ষ্য থাকবে। এ জন্যই আমি এখানে এসেছি।’ বিপিএলে চ্যাম্পিয়ন হওয়া ছাড়া খুলনা টাইগার্সের কোচ খালেদ মাহমুদের অন্য কোনো ভাবনা নেই। গতবার বরিশালকে ফাইনালে তুললেও চ্যাম্পিয়ন করতে পারেননি। ফাইনালের পর হতাশ মাহমুদ বলেছিলেন, ‘আমি রানার্সআপ কোচ হয়ে যাচ্ছি...।’ টানা চারবার রানার্সআপ হওয়ার পর মাহমুদের এবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ারই আশা।
মাহমুদের নতুন ঠিকানা এবার তামিম ইকবালেরও ঠিকানা। এর আগে চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, ঢাকা, রাজশাহীতে খেললেও এবার প্রথমবারের মতো খেলবেন খুলনার হয়ে। দলের সবচেয়ে বড় নামও তিনিই। মাহমুদ বলেছেন, খেলোয়াড় নির্বাচন থেকে শুরু করে সবকিছুতেই প্রত্যক্ষ হাত ছিল তামিমের।
এখন পর্যন্ত বিপিএলের শিরোপা জিততে পারেনি খুলনার কোনো দল। প্রথম আসরেই সেমিফাইনাল খেলেছিল তারা, এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ অর্জন ২০২১ সালে ফাইনালে খেলা। সর্বশেষ মৌসুমে প্লে-অফ থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল খুলনাকে।
এবার খুলনা শেষ পর্যন্ত যাওয়ার মতো দলই নির্বাচন করেছে। ড্রাফটের আগে তিন পাকিস্তানি আজম খান, ওয়াহাব রিয়াজ ও নাসিম শাহর সঙ্গে তারা নিয়েছে শ্রীলঙ্কান ওপেনার আভিস্কা ফার্নান্ডোকে। পরে নেওয়া হয়েছে সারজিল খান, ফখর জামান ও আয়ারল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু বলবার্নিকেও।
দল হিসেবে আমরা খারাপ নই। লড়াই করার মতো একটা দল। তরুণ ক্রিকেটার আছে, যে ব্যাপারটি পছন্দ করি আমি। তামিম, ইয়াসির, সাইফউদ্দিনের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও আছে। ওয়াহাবদের মতো বিদেশি ক্রিকেটার আসবে।
ড্রাফট থেকে খুলনা টেনেছিল শ্রীলঙ্কা অধিনায়ক দাসুন শানাকাকেও। স্থানীয়দের মধ্যে ইয়াসির আলী, নাসুম আহমেদ, নাহিদুল ইসলাম, সাব্বির রহমান, শফিকুল ইসলামদের নিয়ে গড়া দলটির ভারসাম্য ভালো। মাহমুদও দল নিয়ে আশাবাদী, ‘দল হিসেবে আমরা খারাপ নই। লড়াই করার মতো একটা দল। তরুণ ক্রিকেটার আছে, যে ব্যাপারটি পছন্দ করি আমি। তামিম, ইয়াসির, সাইফউদ্দিনের মতো অভিজ্ঞ ক্রিকেটারও আছে। ওয়াহাবদের মতো বিদেশি ক্রিকেটার আসবে। কম্বিনেশন ভালো। আমি বলব না যে আমরাই কাগজে-কলমে সেরা দল। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক দল বলব।’
শক্তি
ভারসাম্য
টপ অর্ডার, মিডল অর্ডার, অলরাউন্ডার, পেস বা স্পিন—খুলনা ‘টিক’ দিয়ে রেখেছে প্রায় সব বিভাগেই। বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ ও অফ স্পিনার নাহিদুল ইসলাম বিপিএলের পরীক্ষিত পারফরমার, তাদের স্পেল ঘুরিয়ে দিতে পারে ম্যাচ। বাঁহাতি পেসার শফিকুল ইসলাম সর্বশেষ মৌসুমে ঝলক দেখিয়েছিলেন। শানাকা, বলবার্নিদের মতো আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররাও শক্তি বাড়াবেন খুলনার।
দুর্বলতা
বিদেশিদের উপস্থিতি
আট বিদেশির পাঁচজনই পাকিস্তানের। নাসিম শাহ, ফখর জামানদের টুর্নামেন্টের শুরু থেকে থাকার কথা নয়। বিপিএলের প্লে-অফের সঙ্গে পিএসএল শুরুর সূচি সাংঘর্ষিক বলে ফিরেও যেতে পারেন আগেভাগে। সে ক্ষেত্রে টুর্নামেন্টের মাঝপথে নতুন করে বাইরের ক্রিকেটার আনতে হতে পারে খুলনাকে।
যাঁদের ওপর চোখ
নাসুম আহমেদ
অলরাউন্ডার মেহেদী হাসান মিরাজের উত্থানে এ সংস্করণেও জাতীয় দলের জায়গাটা নড়বড়ে হয়ে পড়েছে বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদের। বিপিএলের সর্বশেষ মৌসুমে সফল ছিলেন, সম্প্রতি ব্যাটিংয়েও ঝলক দেখিয়েছেন। কোচ মাহমুদ তাঁর ব্যাটিং নিয়েও আশাবাদী, ‘নাসুমের ব্যাটিংয়ের উন্নতি দলের কাজে আসবে। আমার বিশ্বাস, ও ফর্মটা ধরে রাখতে পারবে। বোলারদের কেউ ব্যাটিং করতে পারলে একজন কোচের জন্য এর চেয়ে ভালো কিছু হতে পারে না।’
খুলনা টাইগার্স
তামিম ইকবাল, আজম খান, ওয়াহাব রিয়াজ, আভিস্কা ফার্নান্ডো, নাসিম শাহ, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, ইয়াসির আলী, নাসুম আহমেদ, নাহিদুল ইসলাম, মুনিম শাহরিয়ার, সাব্বির রহমান, দাসুন শানাকা, পল ফন মিকেরেন, শফিকুল ইসলাম, প্রিতম কুমার, হাবিবুর রহমান, মাহমুদুল হাসান, সারজিল খান, ফখর জামান, অ্যান্ড্রু বলবার্নি।