একবেলা খাবারের জন্য হয়েছিলেন আম্পায়ার, এখন ছক্কা মেশিন

কাল ৩১ বলে ৬৬ রান করেছেন আশুতোষবিসিসিআই

আশুতোষ শর্মা একজন ছক্কা মেশিন। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ৩২ ম্যাচে ৬১ ছক্কা মারা এই ডানহাতি ব্যাটসম্যানের কদরটাই ছক্কা মারতে পারার জন্য। কাল আইপিএলের সৌজন্যে পুরো বিশ্ব আরও একবার আশুতোষের সামর্থ্য দেখল।

সহজেই ছক্কা মারা আশুতোষের জীবনের গল্পটা অবশ্য সহজ নয়। একটা সময় গেছে এমন যখন একবেলা খাবার জোগাড় করতে খেলার পাশাপাশি আম্পায়ারিংও করেছেন এই ক্রিকেটার।

কাল ইমপ্যাক্ট ক্রিকেটার আশুতোষ যখন উইকেটে আসেন, দিল্লির রান তখন ৫ উইকেট ৬৬। দলটির জন্য ২১০ রানের লক্ষ্য ছোঁয়া তখন অসম্ভব মনে হচ্ছিল। আশুতোষ ইনিংসের প্রথম ২০ বলে করেন ২০ রান। তখন দিল্লির হাতে উইকেট আছে ৪টি, জিততে দরকার ৫ ওভারে ৬২। সেখান থেকে নিজের ইনিংসে পরের ১১ বলে ৫ ছক্কায় ৪৬ রান করে দলকে ১ উইকেটের জয় এনে দেন আশুতোষ।

আবার আলোচনায় আশুতোষ
বিসিসিআই

আশুতোষের জীবনের গল্পটাও তাঁর ইনিংসের মতো ফিরে আসার গল্প। জন্ম মধ্যপ্রদেশের রাতলামে। শহরটিকে ক্রিকেট খেলার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা ছিল না। আট বছর বয়সে তাই শহর ছেড়ে গেছেন ইন্দোরে। সেখানে গিয়ে থেকেছেন ছোট এক রুমে। ইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, অনেক সময়ই খাবারের জন্য টাকাও থাকত না আশুতোষের। সে কারণেই বাড়তি আয়ের জন্য আম্পায়ারিং করতেন।

২০১৮ সালে প্রথম মুশতাক আলী ট্রফিতে মধ্যপ্রদেশের হয়ে খেলার সুযোগ পান। ২০১৯ সালে মধ্যপ্রদেশের হয়ে করেন ২৩৩ রান। এমন পারফরম্যান্সের পরও ২২ বছর বয়সী আশুতোষ দল থেকে বাদ পড়েন। এরপর প্রায় চার বছর কোনো ধরনের শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটে খেলার সুযোগ পাননি এই ব্যাটসম্যান।

আরও পড়ুন

২০২৩ সালে আশুতোষের রেলওয়ের হয়ে খেলার সুযোগ আসে। আসলে এই সুযোগটাই আশুতোষের জীবন পরিবর্তন করে দিয়েছে। রেলওয়ের হয়ে মুশতাক আলী ট্রফিতে ১১ বলে ফিফটি করে স্বীকৃত টি–টোয়েন্টিতে ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের মধ্যে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়েন এই হার্ড হিটার। চোখে পড়েন পাঞ্জাব কিংসের। মাত্র ২০ লাখ রুপিতে তাঁকে দল নিয়ে নেয় পাঞ্জাব।

২০২৪ সালের আইপিএলে ৯ ইনিংসে ১৬৭ স্ট্রাইক রেটে করেন ১৮৯ রান। আহামরি কিছু নয়! তবে অন্য দলগুলোর চোখে পড়ার জন্য যথেষ্ট ছিল তাঁর স্ট্রাইক রেট। ৩ কোটি ৮০ লাখ রুপিতে তাঁকে দলে নেয় দিল্লি। আর প্রথম ম্যাচেই দিল্লিকে অবিশ্বাস্য জয় এনে দিয়েছেন সেই আশুতোষ।

আরও পড়ুন