অলৌকিক কিছুর আশায় পাকিস্তান
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সামর্থ্যের চেয়েও বেশি কিছু করতে চায় পাকিস্তান। বাবর আজমদের বিপজ্জনক দল মনে করছে দক্ষিণ আফ্রিকাও।
আফগানিস্তান ম্যাচের আগের দিন ‘নতুন পাকিস্তান’ দেখানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ইমাম-উল-হক। কিন্তু পরদিন যা হয়েছে, তা আর যা–ই হোক, ‘নতুন পাকিস্তান’ ছিল না। ইমামদের তোলা ২৮২ রান আফগানরা টপকে যায় ৮ উইকেট হাতে রেখে। পাকিস্তান হারে টানা তৃতীয় ম্যাচ।
আজ চেন্নাইয়ের দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ সামনে রেখে কাল সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন শাদাব খান। ‘নতুন পাকিস্তানকে দেখবেন’ কথাটা বুমেরাং হয়ে যাওয়া কিংবা একঘেয়ে হয়ে যায় বলেই কিনা কে জানে, ঘুরে দাঁড়ানোর আশ্বাসের সঙ্গে বাড়তি একটা কথাও যোগ করে দিয়েছেন শাদাব, ‘আমরা মিরাকলে বিশ্বাস করি।’
বিশ্বকাপের শেষ চারে ওঠার লাগাম পাকিস্তানের হাত থেকে এখনো ছুটে যায়নি। হ্যাটট্রিক হারের আগে দুটি জয় আছে। লিগ পর্বের শেষ চার ম্যাচ জিতলে সেমিফাইনালে ওঠার ভালো সম্ভাবনাই থাকবে। এখন পর্যন্ত অন্যদের দিকে চেয়ে থাকাটা তাই খুব জরুরি নয়। কিন্তু নিজেদের সামর্থ্য আর পরিকল্পনার বাস্তবায়নে টানা ব্যর্থতা শাদাবদের এতটাই সংশয়ে ফেলে দিয়েছে যে আত্মবিশ্বাসী থাকার জন্য অলৌকিক কিছুর আশাও করতে হচ্ছে।
আজ প্রতিপক্ষ উত্তুঙ্গ আত্মবিশ্বাসী দক্ষিণ আফ্রিকা বলেই অলৌকিক কিছুর আশাটা বেশি করতে হচ্ছে পাকিস্তানকে। প্রতিপক্ষের ওপর রীতিমতো ‘স্টিম রোলার’ চালাচ্ছে প্রোটিয়ারা। পাঁচ ম্যাচের চারটিতে আগে ব্যাট করে তিন শর বেশি রান; যার একটিতে স্কোর ৪২৮, অন্য দুটিতে ৩৯৯ ও ৩৮২।
ছন্দে না থাকা পাকিস্তানি বোলিংয়ের জন্য যা যথেষ্টই আতঙ্কের। তবে বাভুমা–বাহিনী যে অজেয় নয়, নেদারল্যান্ডস সেটি দেখিয়ে দিয়েছে। ধর্মশালায় বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে প্রোটিয়াদের ৩৮ রানে হারিয়েছে ডাচরা।
পাকিস্তান অবশ্য দক্ষিণ আফ্রিকার চেয়ে নিজেদের দিকেই বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। এই ম্যাচ দিয়ে তাদের জয়ের ধারা শুরু হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন সহ–অধিনায়ক শাদাব, ‘আমরা জানি, কীভাবে এই পরিস্থিতি থেকে বের হতে হয়। আর আমরা মিরাকলেও বিশ্বাস করি। দলের প্রতি পূর্ণ আস্থা আছে। কখনো কখনো খারাপ দিন আসে। আশা করি আগামীকাল (আজ) থেকেই আমাদের জয়ের ধারা শুরু হবে।’
৫ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে পাকিস্তান এখন ছয়ে। সমান ম্যাচে ৪ পয়েন্ট সাতে থাকা আফগানিস্তানেরও। এখান থেকে সেরা চারে জায়গা করতে প্রতিটি ম্যাচই এখন পাকিস্তানের জন্য ‘ফাইনাল’। শাদাব যেটিকে উল্লেখ করলেন ‘বাঁচা–মরা’ বলে, ‘আমাদের ঘুরে দাঁড়াতেই হবে। এখন থেকে আমাদের বাঁচা–মরার ম্যাচ শুরু। নিজেদের সামর্থ্যের পাশাপাশি বাড়তি কিছুরও চেষ্টা করতে হবে।’
পাকিস্তান যে এখন পর্যন্ত সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারেনি, সেটা জানেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক বাভুমাও। পাকিস্তানকে শুরু থেকেই যথেষ্ট সমীহের চোখে দেখছেন জানিয়ে বাভুমার মন্তব্য, ‘পাকিস্তানের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
টুর্নামেন্টের শুরুতে ওরা আমার সেরা চারে ছিল। সুতরাং, সমীহ ওদের করতেই হবে। পাকিস্তান বিপজ্জনক দল। ওরা এখন পর্যন্ত নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে পারেনি, কাল (আজ) সেটা হয়েও যেতে পারে। আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।’