স্নায়ুর পরীক্ষা দিয়ে জিতল নেদারল্যান্ডস

জয়ের পর মাঠ ছাড়ছেন ডাচদের দুই ব্যাটসম্যান টিম প্রিঙ্গল ও বাস ডি লিডছবি: এএফপি

৩৭ বলে নেদারল্যান্ডসের দরকার ৩০ রান, হাতে ৮ উইকেট। যেকোনো বিচারেই ম্যাচটা সহজেই জেতার কথা ডাচদের। হ্যাঁ, জিতেছেও। তবে যেভাবে জিতেছে, সেটা বোধ হয় স্কট এডওয়ার্ডসের দল স্বপ্নেও ভাবেনি।

শেষ দুই ওভারে নেদারল্যান্ডসের প্রয়োজন ছিল ১৪ রান। বাস ডি লিড ও স্কট এডওয়ার্ডসের ব্যাটে ৩ বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটের জয় তুলে নেয় নেদারল্যান্ডস। আর নামিবিয়া হেরেও যেন প্রমাণ করল, রূপকথা লেখার উপকরণ সত্যিই তাদের দলে আছে। প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর আজ মাত্র ১২১ রান তুলে আফ্রিকার দলটি কী লড়াইটাই না করল!

জিলংয়ে টস জিতে আগে ব্যাট করে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ২০ ওভারে ১২১ রান তুলেছিল নামিবিয়া। এরপর ফিল্ডিংয়ে নেমে এই স্বল্প রান নিয়েই লড়েছেন ডেভিড ভিসা–গেরহার্ড এরাসমাসরা। রান আরেকটু বেশি করতে পারলে কে জানে, ম্যাচের ফল অন্য রকমও হতে পারত। টপ অর্ডারে প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের তিনটি ত্রিশোর্ধ্ব রানের ইনিংসে জয় তুলে নিল নেদারল্যান্ডস।

ম্যাচের আগে নামিবিয়ার জন্য সমীকরণ তুলনামূলক সহজ ছিল। আজ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে নেদ্যারল্যান্ডসের বিপক্ষে জয় পেলেই এক পা দিয়ে রাখত সুপার টুয়েলভে। আর আজকেই সুপার টুয়েলভ নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন ছিল দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার জয়।

ভালো ইনিংস খেলেন ম্যাক্স ও’দৌদ
ছবি: এএফপি

অন্যদিকে নেদারল্যান্ডসের নামিবিয়ার বিপক্ষে জয়ের পাশাপাশি দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে দরকার ছিল আরব আমিরাতের জয়। একটুর জন্য নামিবিয়া পারেনি, কিন্তু নেদারল্যান্ডস তাদের হাতে থাকা কাজটা ঠিকই করেছে। এখন আরব আমিরাতের কাছে শ্রীলঙ্কা হারলেই তারা পৌঁছে যাবে সুপার টুয়েলভে। কাজটা আমিরাতের জন্য খুব কঠিন, তবে সেটা না হলেও সুপার টুয়েলভে যাওয়ার বড় সুযোগ থাকবে নেদারল্যান্ডসের সামনে। আর হেরেও সুযোগ আছে নামিবিয়ারও।

শ্রীলঙ্কাকে প্রথম ম্যাচে ৫৫ রানে হারিয়ে শুরু করা নামিবিয়া এদিন অপরবর্তিত একাদশ নিয়েই মাঠে নামে। প্রথম ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও ব্যর্থ হয় নামিবিয়ার টপ অর্ডার। দ্বিতীয় ওভারেই ০ রানে ফেরেন ওপেনার ডিভান লা কক। স্টিফেন বার্ড ও মাইকেল ফন লিঙ্গেন বড় ইনিংস খেলার স্বপ্ন দেখিয়েছেন বটে, কিন্তু কেউই ইনিংস বড় করতে পারেননি।

আগের ম্যাচের মতো এ ম্যাচেও ব্যাটিংয়ে হাল ধরেন ইয়ান ফ্রাইলিঙ্ক। তবে আজকের ইনিংসে টি–টোয়েন্টির ধাঁচটা ছিল না। আউট হয়েছেন ৪৮ বলে ৪৩ রান করে। অধিনায়ক এরাসমাস করেন ১৬ রান। শেষ দিকে ডেভিড ভিসার ৫ বলে ১১ রানে ১২১ রানের সাদামাটা পুঁজি গড়ে নামিবিয়া। আরব আমিরাতের বিপক্ষে ১৯ রানে ৩ উইকেট নেওয়া ডাচ পেসার বাস ডি লিড নিয়েছেন ২ উইকেট।

১২২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম উইকেটে ৫৯ রানের জুটিতে জয়ের ভিত গড়ে দেন বিক্রমজিত সিং এবং ম্যাক্স ও’ডাউড। বিক্রমজিত ৩ চার ও ২ ছয়ে ৩৯ রানে ফেরেন বার্নার্ড সুলজের শিকার হয়ে। শুধু বিক্রমজিতের উইকেট নেদ্যারল্যান্ডসকে চাপে ফেলার জন্য যথেষ্ট ছিল না। ও’ডাউড ও ডি লিডের জুটি নামিবিয়াকে সহজেই জয়ের দিকে নিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু এরাসমাসের দারুণ থ্রোতে ও’ডাউড ৩৫ রানে আউট হয়ে ফেরার পর টম কুপার ও কলিন অ্যাকারমনও দ্রুত ফিরে গেলে ম্যাচ জমে ওঠে। তবে ১ রানের মধ্যেই ৩ উইকেট হারানো ডাচরা অভিজ্ঞতায় চড়েই জয় পায়। ম্যাচসেরা ডি লিড।

এই জয়ে প্রথম রাউন্ডে এ গ্রুপে ২ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে নেদারল্যান্ডস। সমান ম্যাচে ২ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে নামিবিয়া। কোনো পয়েন্ট না পাওয়া আমিরাত তিন ও শ্রীলঙ্কা চারে।