ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ
এক ম্যাচে তিন সেঞ্চুরি, আবাহনীর টানা ১২ জয়
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের প্রথম পর্বে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে প্রাইম ব্যাংককে ৫৮ রানে হারিয়েছিল আবাহনী। আজ একই মাঠে প্রাইম ব্যাংককে ৫ উইকেটে হারিয়ে সুপার লিগ শুরু করেছে আবাহনী। বিকেএসপিতে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে শাইনপুকুর মাত্র ১৩৮ রান করেও ১৩ রানে জিতেছে। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে ফতুল্লায় শেখ জামালকে হারিয়েছে মোহামেডান। এই ম্যাচে সেঞ্চুরি করেছেন তিন ব্যাটসম্যান।
জিতেই চলেছে আবাহনী
মিরপুরে সকালের কন্ডিশন কাজে লাগিয়ে প্রাইম ব্যাংকের টপ অর্ডারকে দাঁড়াতে দেননি আবাহনীর দুই পেসার তাসকিন আহমেদ ও শরীফুল ইসলাম। চার ওভারের মধ্যে ৫ রানে মোহামেডানের ৩ উইকেট তুলে নেন দুজন। তাসকিন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক তামিমকে ফেরান ব্যক্তিগত ১ রানে, ইনিংসের চতুর্থ ওভারে। প্রথম পর্বেও তামিমকে ১ রানেই আউট করেছিলেন তাসকিন। আজ তামিমের বিদায়ের আগেই শরীফুল ফিরিয়েছেন পারভেজ হোসেন ও শাহাদাত হোসেনকে।
এমন দুরবস্থা থেকে প্রাইম ব্যাংকের রানটাকে ১১৭ রানে নিয়ে যায় মুশফিকুর রহিম ও অধিনায়ক জাকির হাসানের চতুর্থ উইকেট জুটি। জাকির ৭০ বলে ৬৮ রান করেছেন, ৬৫ বলে ৪৪ রান করেছেন মুশফিক।
এই দুজনের বিদায়ের পর আরও একবার ধস নামে প্রাইম ব্যাংকের লোয়ার অর্ডারে। তানভীর ইসলাম ও মোসাদ্দেক হোসেন ২টি করে উইকেট নিলে ৩৯.৩ ওভারে ১৭৮ রানে থামে প্রাইম ব্যাংকের ইনিংস।
রান তাড়ায় নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারালেও সমস্যা হয়নি আবাহনী। ইনিংস ওপেন করা লিটন দাস শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ছিলেন ১০৬ বলে ৫৬ রান করে। আবাহনীর ইনিংসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান জাতীয় দলের আরেক ব্যাটসম্যান তাওহিদ হৃদয়ের। লিটনের পুরো বিপরীত মেজাজেই ব্যাট করেছেন হৃদয়। লিটনের সঙ্গে ৬২ রানের পঞ্চম উইকেট জুটির ৫৫ রানই ছিল তাঁর। ২৭ বলের ইনিংসটাকে ৪টি চার ও ৫চি ছক্কায় সাজিয়েছেন তিনি।
৩৮.৩ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে প্রাইম ব্যাংকের রান টপকে এবারের লিগে টানা ১২তম জয় পেয়ে শিরোপা জয়ের পথে আরেকটু এগিয়ে গেল আবাহনী। আর এই হারে লিগ জয়ের দৌড় থেকে ছিটকে পড়ল প্রাইম ব্যাংক।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
প্রাইম ব্যাংক: ৩৯.৩ ওভারে ১৭৮ (জাকির ৬৮. মুশফিকুর ৪৪; শরীফুল ৩/২৭, তাসকিন ২/৩৪, মোসাদ্দেক ২/৩৪, তানভীর ২/৪৮)।
আবাহনী: ৩৮.৩ ওভারে ১৮৩/৫ (লিটন ৫৬*, হৃদয় ৫৫; সানজামুল ২/৪৭, মেহেদী ২/৪৮)।
ফল: আবাহনী ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: শরীফুল ইসলাম।
১৩৮ করেও ১৩ রানে জয় শাইনপুকুরের
বেশি রান হয়নি বিকেএসপির শাইনপুকুর ও গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের ম্যাচেও। আগে ব্যাট করে গাজী গ্রুপের আবদুল গাফফার ও হুসনা হাবিবের বোলিংয়ে ৩৪.৫ ওভারে ১৩৮ রানে অলআউট শাইনপুকুর। আকবরদের অল্প রানে থামিয়েও জিততে পারেনি গাজী গ্রুপ। শাইনপুকুরের তিন স্পিনার রিশাদ হোসেন, হাসান মুরাদ ও আরাফাত সানি মিলে ৯ উইকেট নিলে ২৭.৪ ওভারে ১২৫ রানে অলআউট ২ উইকেটেই ৮৩ রান তুলে ফেলা গাজী গ্রুপ।
ম্যাচসেরা রিশাদ সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নিয়েছেন। এর আগে ব্যাট হাতে আটে নেমে ২৬ বলে ৩৩ রান করেন রিশাদ। শাইনপুকুরের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪২ রান জাতীয় দলের ওপেনার তানজিদ হাসানের। গাজী গ্রুপের ১২৫ রানের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৪ রান হাবিবুর রহমানের, ৪ চার ও ৪ ছক্কায় মাত্র ১৯ বলেই এই রান করেন তরুণ ব্যাটসম্যান।
১২ ম্যাচে নবম জয় পেল শাইনপুকুর, সমান ম্যাচে গাজীর এটি পঞ্চম হার। এই হারে লিগ জয়ের দৌড় থেকে ছিটকে পড়ল গাজী।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শাইনপুকুর: ৩৪.৫ ওভারে ১৩৮ (তানজিদ ৪২, রিশাদ ৩৩; গাফফার ৩/২১, হুসনা ৩/২৮, আওলাদ ২/২২)।
গাজী গ্রুপ: ২৭.৪ ওভারে ১২৫ (হাবিবুর ৪৪; রিশাদ ৪/৩১, সানি ৩/৪৫, মুরাদ ২/২১)।
ফল: শাইনপুকুর ১৩ রানে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: রিশাদ হোসেন।
তিন সেঞ্চুরির ম্যাচে মোহামেডানের জয়
সাইফ হাসান ও তাইবুর রহমানের সেঞ্চুরিতে আগে ব্যাট করা শেখ জামাল ধানমন্ডি করে ২ উইকেটে ২৫৯ রান। ওপেনার সাইফ রিটায়ার্ড হার্ট হওয়ার আগে ১৪৬ বলে করেছেন ১২০ রান। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তাঁর নবম শতকে ছিল ৭টি চার ও ৬টি ছক্কা। ১১৪ বল খেলে ১০২ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছে তাইবুর, ৭টি চার ও ৩টি ছক্কা ছিল তাতে।
রান তাড়ায় মোহামেডানের হয়ে সেঞ্চুরি করেছেন ছন্দে থাকা মাহিদুল ইসলাম। ১২২ বলে ৫টি চার ও ৬টি ছক্কায় ১০১ রান করে আউট হয়েছেন। বাকি কাজটা করেন অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ। ৮৮ বলে ৩টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৮৭ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। মোহামেডান ৬৯ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর ১৭৯ রানের জুটি গড়েন দুজন।
এই জুটির সৌজন্যে ২ বল বাকি থাকতে ৫ উইকেটের জয় পায় মোহামেডান। ১২ ম্যাচে মোহামেডানের এটি নবম জয়। শেখ জামাল হারল চতুর্থবার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
শেখ জামাল ধানমন্ডি: ৫০ ওভারে ২৫৯/২ (সাইফ ১২০*, তাইবুর ১০২; নাসুম ১/২৮)।
মোহামেডান: ৪৯.৪ ওভারে ২৬৩/৫ (মাহিদুল ১০১, মাহমুদউল্লাহ ৮৭*, রনি ৪১; রিপন ২/৫১)।
ফল: মোহামেডান ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দ্য ম্যাচ: মাহিদুল ইসলাম।