রোমাঞ্চকর? নাটকীয়? অবিশ্বাস্য? যাই বলুন না কেন, এটাই টেস্ট ক্রিকেটের সৌন্দর্য।
লড়াই চলতে চলতে শেষ দিনে ম্যাচ কখনো ইংল্যান্ডের দিকে হেলেছে, আবার ঝুঁকেছে ভারতের দিকে। শেষ পর্যন্ত ইংল্যান্ডকে ১৫১ রানে হারিয়ে ভারতই অবিশ্বাস্য জয় তুলে নিয়েছে লর্ডস টেস্টে।
জয়ের জন্য ২৭২ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমেছিল ইংল্যান্ড। চা বিরতির আগেই জমে ওঠে নাটক। ৬৭ রানে ইংল্যান্ডের ৪ উইকেট ফেলে চায়ের স্বাদটা ভালোই পেয়েছিলেন ভারতের বোলাররা। আগের ইনিংসে সেঞ্চুরি করা জো রুট তখনো ৩৩ রানে অপরাজিত।
শেষ সেশনের খেলা শুরুর পর প্রথম ওভারেই রুটকে (৩৩) তুলে নেন যশপ্রীত বুমরা। ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড তখন শুধু ধুঁকছে। ব্যাটসম্যান বলতে শুধু জশ বাটলার ও মঈন আলী। ব্যক্তিগত ২ রানে বাটলার স্লিপে বিরাট কোহলির কাছে ‘জীবন’ না পেলে ম্যাচটা আরও আগেই শেষ করতে পারতেন ভারতের বোলাররা।
দিনের খেলার প্রায় ৮ ওভার বাকি থাকতে ৯৬ বলে ২৫ রান তুলে ম্যাচটা ড্রয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন বাটলার। কিন্তু মোহাম্মদ সিরাজ অন্য কিছু ভেবে রেখেছিলেন। এক ওভারেই বাটলার ও এগারোতম ব্যাটসম্যান জিমি অ্যান্ডারসনকে তুলে নিয়ে ভারতকে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১–০ ব্যবধানে এগিয়ে দেন সিরাজ।
ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে ৩২ রানে ৪ উইকেট নেওয়া সিরাজ অসাধারণ বোলিং করেন। নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১২০ রানে অলআউট হয় ইংল্যান্ড। ৫ উইকেটে ৯০ থেকে ১২০ রানে অলআউট হওয়ার পথে মোট ৫ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। এর মধ্যে ৪ উইকেটই সিরাজের।
ইংল্যান্ড শেষ ৩ উইকেট হারিয়েছে কোনো রান না তুলেই! এর মধ্যে ১ উইকেট বুমরার, বাকি ২টি সিরাজের।
ষষ্ট উইকেটে মঈন ও বাটলারের ৯৩ বলে ২৫ রানের জমাট জুটি ভেঙেছেন মঈনকে (১৩) তুলে নিয়ে। পরের বলে স্যাম কারেনকেও ফিরিয়ে ম্যাচের পাল্লা ভারতের দিকে নিয়ে আসেন সিরাজ।
এরপরও বাটলার শেষ একটা চেষ্টা করেছেন দাঁত কামড়ে লড়াই করে। কিন্তু ৫২তম ওভারেও ২ উইকেট নিয়ে (বাটলার ও অ্যান্ডারসন) সিরাজ বলতে গেলে একাই জিতিয়েছেন ভারতকে। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৮ উইকেট নিলেন এই পেসার।
নয়ে নামা ওলি রবিনসনের সঙ্গে অষ্টম উইকেটে ৭৬ বলে ৩০ রানের জুটি গড়ে পাল্টা লড়াই গড়ে তোলেন বাটলার। ৩৫ বলে ৯ রান করা রবিনসনকে তুলে নেন বুমরা। ৩৩ রানে ৩ উইকেট নেন এই পেসার। ১৩ রানে ২ উইকেট নেন ইশান্ত শর্মা।
এর আগে দিনের প্রথম ভাগে ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে নবম উইকেটে ১২০ বলে ৮৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে ভারতের লিড বাড়ান মোহাম্মদ শামি ও বুমরা। ৭০ বলে ৫৬ রানে অপরাজিত ছিলেন শামি। ৬৪ বলে ৩৪ রান করে অন্য প্রান্ত ধরে রাখেন বুমরা। ৮ উইকেটে ২৯৮ রানে দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণার পর ইংল্যান্ডকে অলআউট করতে ভারতের বোলারদের লাগল মাত্র ৫১.৫ ওভার।
২৫ আগস্ট হেডিংলিতে সিরিজের তৃতীয় টেস্ট।