মানসিক অত্যাচারে অবসর মোহাম্মদ আমিরের
নিউজিল্যান্ড সফরে অর্ধশতাধিক ক্রিকেটার নিয়ে হাজির হয়েছে পাকিস্তান। তরুণদের জায়গা দিতে তাতে রাখা হয়নি শোয়েব মালিকের মতো খেলোয়াড়দের। বয়সের দিক থেকে এখনো তরুণদের কাতারেই থাকবেন মোহাম্মদ আমির।
কিন্তু এই বাঁহাতি পেসারকেও ডাকা হয়নি সফরে। লঙ্কা প্রিমিয়ার লিগে খেলছিলেন গত কয়েক দিন। গতকাল সেটাও শেষ হয়েছে।
টেস্ট ক্রিকেট থেকে আগেই সরে গিয়েছিলেন আমির। এ নিয়ে বহু সমালোচনাও হয়েছে। এলপিএল শেষে দেশে ফেরার আগেই সবাইকে চমকে দিয়েছেন আমির। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব সংস্করণ থেকেই অবসর নিয়েছেন ২৯ বছর বয়সী এই পেসার।
যদিও অবসর-বার্তায় ক্রিকেট থেকেই সরে যাবেন, এমনটা জানিয়েছিলেন আমির। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড নিশ্চিত করেছে, অন্তত আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আর দেখা যাবে না তাঁকে।
এক বিবৃতিতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে, ‘মোহাম্মদ আমির আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন, এমন এক খবর পাওয়ার পর বোর্ডের প্রধান নির্বাহী ওয়াসিম খান আজ বিকেলে এই পেসারের সঙ্গে কথা বলেছেন। ২৯ বছর বয়সী এই খেলোয়াড় পিসিবির প্রধান নির্বাহীকে বলেছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার কোনো আগ্রহ বা ইচ্ছা নেই তাঁর এবং ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য যেন তাঁকে বিবেচনা করা না হয়। এটা মোহাম্মদ আমিরের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, পিসিবি এটা সম্মান করবে এবং এ ব্যাপারে আর কোনো মন্তব্য এখন করবে না।’
যেকোনো খেলোয়াড়ের অবসরের পর সে সিদ্ধান্ত বোর্ড মেনে নিয়ে বিবৃতি দেয়। এবং সে সঙ্গে আরেকটি কথাও বলে, সেটা হলো এতগুলো বছর সেবা দেওয়ার জন্য ক্রিকেটারকে ধন্যবাদ।
আমিরের অবসরের বার্তায় পিসিবির বিবৃতিতে এমন কোনো ধন্যবাদ বার্তা না থাকাটাই বোর্ড ও ক্রিকেটারের মধ্যে দূরত্বটা দেখিয়ে দিয়েছে।
মোহাম্মদ আমির আজ নিজেও অবসর ঘোষণার বার্তায় তাঁর সিদ্ধান্তের পেছনে বোর্ডকে দায়ী করেছিলেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে আমিরকে বলতে দেখা গেছে, ‘সত্যি বলছি, আমার মনে হয় না এই প্রশাসনের অধীনে আমি ক্রিকেট খেলতে পারব। আমি ক্রিকেট থেকে বিদায় নিচ্ছি। আমাকে মানসিকভাবে অত্যাচার করা হচ্ছে, আমি আর নিতে পারছি না। ২০১০-২০১৫ সময়টায় আমি যথেষ্ট দেখেছি। বারবার বলা হয়েছে বোর্ড আমার ওপর অনেক বিনিয়োগ করেছে। আমি শহীদ আফ্রিদির কাছে কৃতজ্ঞ, কারণ নিষেধাজ্ঞার পর তিনিই আমাকে সুযোগ দিয়েছিলেন।’
অবসরের সিদ্ধান্ত কেন নিয়েছেন, সেটাও জানিয়েছেন আমির।
ওই ভিডিওতে তিনি দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেটের হর্তাকর্তারা, ‘সবাই দেশের হয়ে খেলতে চায়। তারা বলেই যাচ্ছিল, আমি টেস্ট ক্রিকেট ছেড়েছি বিশ্বজুড়ে টি-টোয়েন্টি লিগে খেলার জন্য। আমি কিন্তু বিপিএল দিয়ে ফেরত এসেছিলাম। যদি লিগে খেলার জন্য এতটাই মরিয়া থাকতাম তখনই বলতাম পাকিস্তানের হয়ে খেলব না। প্রতি মাসেই কেউ না কেউ বলছে, আমির আমাদের বিপদে ফেলে গেছে। দুই দিনের মধ্যে আমি পাকিস্তানে ফিরব এবং আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেব।’
পাকিস্তানের হয়ে ৩৬ টেস্ট, ৬১ ওয়ানডে ও ৫০ টি-টোয়েন্টি খেলা আমিরের আন্তর্জাতিক উইকেট সংখ্যা ২৫৯। এর মধ্যে টেস্টেই ১১৯ উইকেট পেয়েছেন আমির।