মনের ঝড় টের পেতে দিচ্ছেন না সাকিব
দুঃসংবাদটা আগেই পেয়েছেন সাকিব আল হাসান। কিন্তু কাউকে কিছুই টের পেতে দেননি। কাল সংবাদমাধ্যমে জানা গেল, বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডারের মা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে, অসুস্থ তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরা, অসুস্থ শাশুড়িও।
এমন পরিস্থিতিতে যে কেউ দেশে ফিরতে চাইবেন, দাঁড়াতে চাইবেন পরিবারের পাশে। কিন্তু সাকিব অন্য ধাতে গড়া ক্রিকেটার। দেশে না ফিরে শেষ ওয়ানডেটি খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সাকিব। সেঞ্চুরিয়নে আগামীকাল দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে তাই দেখা যাবে সাকিবকে।
পরিবারের দুঃসময়ে পাশে থাকতে পারছেন না যেহেতু, সাকিবের মনের অবস্থা আর যাই হোক অন্তত স্বাভাবিক থাকার কথা না। তবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের নির্বাচক হাবিবুল বাশার আজ জানালেন সাকিব শান্ত এবং ইতিবাচক আছে। মনের ভেতরকার ঝড়টা সে কাউকে বুঝতে দিচ্ছের না। ম্যাচের আগে এমন যেকোনো কিছুই মনোযোগটা সরিয়ে নেয়। এ দিকটা ভেবেই হয়তো সাকিব মনের ভেতর দলা পাকিয়ে ওঠা দুশ্চিন্তা ঢোক গিলে নিজের মধ্যেই রাখছেন।
সাকিবকে নিয়ে হাবিবুল জানালেন, ‘অবশ্যই ওর মনের মধ্যে কিছু তো ঘটছেই। আমরা সবাই বুঝতে পারি। কিন্তু সে এসব প্রকাশ করছে না। খুবই ইতিবাচক আছে। ড্রেসিংরুমেও কেউ এসব নিয়ে কথা বলছে না। দেখে ভালো লাগছে যে সে সংকটের মধ্য দিয়ে গেলেও ড্রেসিংরুমের কাউকে তা বুঝতে দিচ্ছে না।’
সাকিবের পারিবারিক সংকট ছাড়াও তৃতীয় ম্যাচ ঘিরে আরও একটি বিষয় উঠে এসেছে বাংলাদেশ দলের সামনে—উইকেট।
‘বাউন্স থাকলে অসুবিধা হয় না, ট্রু বাউন্স থাকলে বেশি সমস্যা হয়’—কথাটা বলার সময় হেসে ফেলেন হাবিবুল বাশার। বাংলাদেশ জাতীয় দলের এই নির্বাচক ওয়ানডে সিরিজে দ্বিতীয় ম্যাচের উইকেট প্রসঙ্গে কথাটি বলেন। তবে জোহানেসবার্গের ওয়ান্ডারার্সে দ্বিতীয় ওয়ানডের উইকেটে ‘ট্রু বাউন্স’ ছিল কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে।
দ্বিতীয় ম্যাচে অসমান বাউন্সের কথা বলেছিলেন ধারাভাষ্যকার থেকে অনেকে। বল কখনো অতিরিক্ত উঠেছে, কখনো আবার বেশি নেমেছে। তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের আউট দেখলে বলের উঠে আসার তারতম্য বোঝা যায়।
হাবিবুল সম্ভবত অসমান বাউন্সের কথাই বলতে গিয়ে ‘ট্রু বাউন্স’ বলে ফেলেছেন। বোঝাই যাচ্ছে, কাল সিরিজের তৃতীয় এবং শেষ ওয়ানডের আগে ‘বাউন্স’ আলোচনার মূল বিষয়।
কারণও আছে। সেঞ্চুরিয়নে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ ঐতিহাসিক জয় তুলে নেওয়ার পর জোহানেসবার্গে ৭ উইকেটে জিতে সিরিজে সমতায় ফিরেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। জোহানেসবার্গে উইকেটের আচরণের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ব্যাট করতে পারেনি বাংলাদেশ।
অসমান বাউন্সে ভুগতে হয়, ৩৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়েও ৯ উইকেটে ১৯৪ রান তুলতে পারে বাংলাদেশ। ঘরের মাটির উইকেট হাতের তালুর মতো চেনা থাকায় জোহানেসবার্গে জয় তুলে নিতে অসুবিধা হয়নি দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানদের।
প্রথম ম্যাচের ভেন্যু সেঞ্চুরিয়নে সুপারস্পোর্ট পার্কে আগামীকাল শেষ ম্যাচে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। সেখানকার বাউন্স কেমন হবে—এই প্রশ্ন নিয়ে বাংলাদেশ দল যে বেশি মাথা ঘামাবে, সে তো বলাই বাহুল্য।
দক্ষিণ আফ্রিকায় সংবাদকর্মীদের সঙ্গে তা নিয়েই কথা বলেছেন হাবিবুল। জাতীয় দলের সাবেক এই অধিনায়ক কন্ডিশন নিয়ে বলেছেন, ‘প্রথম ম্যাচে কন্ডিশন অবশ্যই একটু ভালো ছিল। গত ম্যাচে একটু কঠিন ছিল উইকেট। সকালে বেশ কষ্ট হয়েছে, খুব অসমান বাউন্স ছিল। এখানেও (সেঞ্চুরিয়ন) একটু বাউন্স করবে, তবে অতটা অসমান বাউন্স করে না। আশা করছি, কাল আরেকটু ভালো উইকেট পাব। অবশ্যই উইকেটটা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে...উইকেট যত দূর পর্যন্ত দেখলাম, অবশ্যই ওয়ান্ডারার্সের চেয়ে ভালো হবে।’