ব্ল্যাকমেলের হুমকি দেওয়া সাংবাদিকের নাম বলবেন না ঋদ্ধিমান
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের দলে জায়গা হয়নি ঋদ্ধিমান সাহার। এ ব্যাপারে তাঁর কাছে একটা সাক্ষাৎকার চেয়েছিলেন এক বিখ্যাত সাংবাদিক। কিন্তু ঋদ্ধিমান তাতে আগ্রহ দেখাননি। এতে খেপে গিয়ে হুমকি দেন সেই সাংবাদিক। টুইটারে সেই বার্তার স্ক্রিনশট দেখিয়ে সবাইকে ঘটনার কথা জানালেও সাংবাদিকের পরিচয় গোপন করেছেন এই উইকেটকিপার।
এ ব্যাপারে নড়েচড়ে বসেছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই)। ঘটনার তদন্তে ঋদ্ধিমান সাহার সঙ্গে কথা বলতেও চাইছে বিসিসিআই। তবে বোর্ডের কাছে সাংবাদিকের নাম জানাতে রাজি নন ঋদ্ধিমান। কারণ, পারিবারিক শিক্ষা কারও ক্ষতি করার আগে দুবার ভাবতে শিখিয়েছে তাঁকে।
ঘটনার সূত্রপাত শনিবার। সেদিন সন্ধ্যায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজের স্কোয়াড ঘোষণা করেছে ভারত। স্কোয়াডে জায়গা হয়নি ঋদ্ধিমানের। তাঁর কাছে সাক্ষাৎকার চেয়েও না পেয়ে হুমকি দেন এক সাংবাদিক। সেদিন রাতে সেই বার্তার স্ক্রিনশট যুক্ত করে এই উইকেটকিপার টুইট করেছেন, ‘ভারতীয় ক্রিকেটে আমার অবদানের পর একজন তথাকথিত সম্মানিত সাংবাদিকের এমন আচরণ দেখা লাগল! সাংবাদিকতার এখন এ অবস্থা!’
ঋদ্ধিমান পরিচয় জানাননি সে সাংবাদিকের। কিন্তু স্ক্রিনশটে একটা বানান ভুল দেখে সে সাংবাদিক কে, সেটা অনুমান করে নিয়েছেন অনেকেই। যেকোনো বিতর্কে আগ বাড়িয়ে কথা বলা সে সাংবাদিক এমন বিতর্কে একদম নিশ্চুপ। কলকাতাভিত্তিক সে সাংবাদিকের বিখ্যাত সব ক্রিকেটারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক। কিংবদন্তি ক্রিকেটারদের নিয়ে বইও লিখেছেন।
কিন্তু আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর নাম বলেননি ঋদ্ধিমান। গতকাল বোর্ডের কোষাধ্যক্ষ অরুণ ধুমাল জানিয়েছেন, বোর্ডের পক্ষ থেকে এই সাংবাদিকের নাম জানতে চাওয়া হবে। বার্তা সংস্থা পিটিআইকে ধুমাল বলেছেন, ‘আমরা ঋদ্ধিমানকে তাঁর টুইটের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করব এবং আসলেই কী হয়েছে জানতে চাইব। আমরা জানতে চাই, তাঁকে হুমকি দেওয়া হয়েছে কি না এবং সে টুইটের পেছনের কারণ কী। এর চেয়ে বেশি আমার পক্ষে বলা সম্ভব না। বোর্ড সচিব (জয় শাহ) নিশ্চয় ঋদ্ধিমানের সঙ্গে কথা বলবেন।’
এদিকে ঋদ্ধিমান সেই সাংবাদিকের নাম বলতে চান না। কাল ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘আমার সঙ্গে বিসিসিআই এখনো যোগাযোগ করেনি। তারা যদি নাম বলতে বলেও, আমি বলব, কারও ক্যারিয়ারের ক্ষতি করার কোনো ইচ্ছা আমার ছিল না, কাউকে নিচে নামানোও আমার উদ্দেশ্য নয়। এ কারণেই টুইটারে তাঁর নাম জানাইনি। আমার মা–বাবা এ শিক্ষা দেয়নি। মিডিয়াতে এমন একজন আছে, যে এমন কাজ করে, খেলোয়াড়ের ইচ্ছাকে অসম্মান করে, এটা জানানোই আমার টুইটের মূল উদ্দেশ্য ছিল।’
এভাবে সাড়া ফেলে দেওয়া সে টুইটের পেছনে ঋদ্ধিমানের ব্যাখ্যা, ‘আমি বলতে চেয়েছি, এটা অন্যায়। যে এটা করেছে, সে খুব ভালো করেই জানে সেটা। খেলোয়াড়দের যেন এমন অভিজ্ঞতা আর না হয়, সেটা নিশ্চিত করতেই এ টুইট করেছি। আমি শুধু অন্যায় যে হয়েছে এবং কারও যেন এটা কখনো করা উচিত নয়, সেটা জানাতে চেয়েছি।’