এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপটা বাংলাদেশ এমন একটা দলের সঙ্গে খেলে শুরু করছে, যাদের সঙ্গে এ ফরম্যাটে আমাদের জেতার রেকর্ড নেই। স্কটল্যান্ডের সঙ্গে এর আগে একটাই টি–টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছিলাম আমরা তাদের মাটিতে, সেটিতে হেরেছিলাম। সুতরাং আজকের ম্যাচটা কিছুটা হলেও ভাবাবে বাংলাদেশ দলকে।
স্কটল্যান্ড বিশ্বকাপের আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে, দুটিতেই জিতেছে। উল্টো দিকে বাংলাদেশের প্রস্তুতিটা যে খুব ভালো হয়েছে, সেটি বলা যাবে না। শ্রীলঙ্কা আর আয়ারল্যান্ডের কাছে হেরে গেলাম আমরা। ওমান ‘এ’ দলের সঙ্গে জিতেছি, কিন্তু শ্রীলঙ্কা না হলেও আয়ারল্যান্ডের কাছে হারটা মেনে নেওয়া যায় না। হ্যাঁ, বলতে পারেন, বিশ্বকাপের আগ দিয়েই তো আমরা তিনটা সিরিজ জিতলাম। জিম্বাবুয়ে, অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ড—তিনটিই দাপটের সঙ্গে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া আর নিউজিল্যান্ডের সঙ্গে সিরিজ জয় কী খুব বেশি আত্মবিশ্বাসী করে তুলছে বাংলাদেশকে? দুটি সিরিজই মিরপুরের মরা উইকেটে খেলে আমরা জিতেছি। ব্যাটসম্যানরা রান পায়নি। এমন উইকেটে খেলা হয়েছে যে বোলারদের পক্ষেও পূর্ণ আত্মবিশ্বাস অর্জন সম্ভব নয়। ওমান ‘এ’ দলের সঙ্গে প্রস্তুতি ম্যাচে আমরা দেখলাম যে মাসকাটের উইকেটে প্রচুর রান আছে। কিন্তু আমার চিন্তা হচ্ছে বাংলাদেশের বেশির ভাগ ব্যাটসম্যানই তো ফর্মে নেই। লিটন দাস, মোহাম্মদ নাঈম থেকে শুরু করে মুশফিকুর রহিম, সৌম্য সরকার—সবার ব্যাটই তো চুপ। নুরুল হাসান কিছুটা রান পেয়েছে ওয়ান ‘এ’ দলের বিপক্ষে। সেটি কী যথেষ্ট? আমি মনে করি স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে আজ যদি বাংলাদেশকে ভালো করতে হয়, জিততে হয়, তাহলে ব্যাটসম্যানদের ফর্মে ফেরাটা খুব জরুরি। অন্তত একজন–দুইজন ব্যাটসম্যানকে খুব ভালো করতেই হবে। কথাটা কিছুটা ক্লিশে মনে হচ্ছে—কিন্তু আসলেই আমি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের ফর্ম নিয়ে চিন্তিত। অনেক দিন তাঁরা রানে নেই। টি–টোয়েন্টি ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের দায়িত্বই বেশি। অথচ, দেখুন আমরা একটা বিশ্বকাপ খেলতে গিয়েছি, কিন্তু আমাদের একজন ব্যাটসম্যানও ফর্মে নেই।
স্কটল্যান্ড আইসিসির সহযোগী সদস্য। ওয়ানডেতে এই দলকে আমরা প্রতিটি মুখোমুখি মোকাবিলাতেই হারিয়েছি। টি–টোয়েন্টিতে এখনো জিতিনি, এটা অবশ্য বড় কোনো ব্যাপার নয়। আমরা যে ম্যাচটা হেরেছিলাম, সেটা পুরোপুরি ভিন্ন কন্ডিশনে। হারতেই পারি। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে এরপর যদি ৫টা ম্যাচ খেলতাম, তাহলে প্রায় সবগুলোতেই আমরা জিততাম, এটা বলতে পারি।
আজ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচটায় বাংলাদেশের জেতার বিকল্প নেই। আমরা ২১ বছর ধরে টেস্ট খেলি। একটা সহযোগী সদস্য দেশের সঙ্গে সবাই ধরেই রাখবে আমরা জিতব। এটি অনেক সময় চাপ হয়ে দাঁড়ায়। স্কটল্যান্ড অনেকটা চাপমুক্ত অবস্থায় খেলবে, ওদের হারানোর কিছু নেই। আর টি–টোয়েন্টি ক্রিকেট বলেই, ওরা অঘটন ঘটানোর আশা করতেই পারে। আমাদের ব্যাটসম্যানরা কেউ ফর্মে নেই, এটা নিশ্চয়ই ওরা জানে। বাংলাদেশের ঠিকুজি বিচার করেই ওরা খেলতে নামবে। তবে আমি আশাবাদী, বাংলাদেশ আজ জিতবে।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে হারটা একটা শিক্ষা। সে ম্যাচের ভুলগুলো থেকে বাংলাদেশ শিখেছে কি না, সেটাই এখন প্রশ্ন। আজ স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে নিজেদের খেলাটাই খেলুক বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। একদম মৌলিক বিষয়গুলো অনুসরণ করুক। অনেক সময় মৌলিক বিষয়গুলো অনুসরণ করেও ম্যাচ জেতা যায়, ব্যাটসম্যানরা ফর্মে ফিরতে পারে। আমি সেটিই চাই। বোলিং নিয়ে অতটা চিন্তিত নই আমি। সাকিব আছে, মোস্তাফিজ আছে—ওমানের কন্ডিশনে আমি মনে করি ওরা অনেক ভালো করবে। তা ছাড়া অভিজ্ঞতা অনেক বড় ব্যাপার। সেটি যদি সাকিব–মুশফিক–মাহমুদউল্লাহরা কাজে লাগাতে পারে, তাহলে আমাদের খারাপ করার তো কিছু নেই। আমি আশাবাদী।