ভারত ১২: ০ পাকিস্তান—বিশ্বকাপে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ের পরিসংখ্যানটা এ রকমই। ১২ ম্যাচের ৭টি ভারত জিতেছে ওয়ানডে বিশ্বকাপে, বাকি ৫টি টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। এবার পরিসংখ্যানটা একটু বদলাতে চায় পাকিস্তান। সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবারের টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলভে মুখোমুখি হবে দুই দল। সেই ম্যাচে জয়ের জন্য মরিয়া পাকিস্তানের ক্রিকেট বোর্ডের চেয়ারম্যান রমিজ রাজা দলকে উদ্বুদ্ধ করতে সম্প্রতি বলেছেন, তাঁকে বড় এক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান আশ্বাস দিয়েছে, বিশ্বকাপে ভারতকে হারাতে পারলে পিসিবিকে ব্ল্যাঙ্ক চেক (টাকার পরিমাণ উল্লেখ না করে সই করা চেক) উপহার দেবে!
২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর এই প্রথম আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মুখোমুখি হতে যাচ্ছে ভারত–পাকিস্তান। এ লড়াই নিয়ে বিশ্বজোড়া ক্রিকেটপ্রেমীদের আগ্রহেরও কমতি নেই। কিন্তু পাকিস্তানের সাবেক ফাস্ট বোলার আকিব যেন সেই আগ্রহে একটু জলই ঢেলে দিলেন!
২৪ অক্টোবর ভারত-পাকিস্তান ম্যাচে ভারতকে আকিব অনেক বেশিই এগিয়ে রাখছেন, ‘জয়ের জন্য ভারতকে তাদের সেরা খেলাটাও খেলার দরকার পড়বে না। নিজেদের শক্তি অনুযায়ী সাধারণ খেলাটা খেলতে পারলেই তারা পাকিস্তানকে হারাতে পারবে। এই মুহূর্তে ভারতই ফেবারিট।’ একটি ইউটিউব চ্যানেলে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আকিব ভারতকে এগিয়ে রাখার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন, ‘ভারতের বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, হার্দিক পান্ডিয়া, লোকেশ রাহুলের মতো অনেক ম্যাচ জেতানো খেলোয়াড় আছে। জশপ্রীত বুমরার মতো দুর্দান্ত একজন বোলারও আছে।’ সব সমীকরণ মিলিয়ে আকিব বলেছেন, ‘আপনি যদি পুরো ভারত দলটির দিকে তাকান, এটা মনে হতে বাধ্য যে তারা বিশ্বকাপ শিরোপার জন্যই ফেবারিট দল।’
ভারতকে একতরফাভাবে এগিয়ে রাখছেন ঠিক, কিন্তু পাকিস্তান কীভাবে জিততে পারবে, সেই উপায়টাও বাতলে দিয়েছেন আকিব। ১৯৯১ সালে শারজায় উইলস ট্রফির ফাইনালে ভারতের বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করা সাবেক ফাস্ট বোলার বলেছেন, ‘পাকিস্তান একটা উপায়েই জিততে পারে। ওই ম্যাচে নিজেদের সেরা খেলার চেয়েও ভালো খেলতে হবে তাদের।’ এ ছাড়া তিনি দলে কিছু পরিবর্তন আনারও পরামর্শ দিয়েছেন, ‘ভারত ফেবারিট হলেও ম্যাচের দিন বিষয়টা একটু ভিন্ন রকম হতেও পারে। দলে কিছু পরিবর্তন আনতে হবে। যেমন ফখর জামানকে অবশ্যই দলে রাখতে হবে। এমন কিছু খেলোয়াড় আছে, যারা নির্দিষ্ট কিছু দলের বিপক্ষে ভালো খেলে।’
পাকিস্তানের নির্বাচকেরা টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মূল দলে ফখরকে রাখেননি। অবশ্য তাঁকে স্ট্যান্ডবাই হিসেবে রাখা হয়েছে। অথচ ২০১৭ সালের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনালে ভারতকে হারাতে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন ফখর। ১৮০ রানে জেতা ম্যাচে পাকিস্তান ৪ উইকেটে ৩৩৮ রান করেছিল তাঁর ১১৪ রানের ইনিংসে ভর করে। ফাইনালের ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কারও জিতেছিলেন তিনি।
ফখরকে দলে রাখার যুক্তি হিসেবে সেই প্রসঙ্গ তুলে এনেছেন আকিব, ‘পাকিস্তানের কাছে টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এক বিষয়, আর ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি আরেক বিষয়। ফখর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে আক্রমণাত্মক একটি ইনিংস খেলেছিল। তাকে যদি দলে রাখা হয় এবং সে জ্বলে ওঠে, এরপর বাবর–রিজওয়ান রান পায়, হাফিজ যদি নিজের নামের প্রতি সুবিচার করতে পারে—ব্যস! এ চার ব্যাটসম্যানই চাপের মুখে ভালো বোলিংয়ের বিপক্ষেও রান করতে পারে।’
পাকিস্তানের বোলিং নিয়েও অবশ্য আশাবাদী আকিব, ‘বোলিংয়ে নিজেদের দিনে শাহীন আফ্রিদি, হাসান আলী, হারিস সোহেল, ইমাদ ওয়াসিম ও শাদাব খানরা ভালো করতে পারে। বোলিং আক্রমণটা ভালো এবং চমকেও দিতে পারে। তবে মূল কথা হলো ম্যাচের দিন আপনাদের সেরা ব্যাটসম্যান আর স্ট্রাইক বোলারদের খুব ভালো খেলতে হবে।’
সবকিছুই বলা হলো। দুই দলেই আছে বিশ্বমানের বোলার–ব্যাটসম্যান। এখন দেখা যাক, বহু কাঙ্ক্ষিত সেই ম্যাচের দিন কোন দলের ব্যাটসম্যান–বোলাররা জ্বলে উঠতে পারেন।