ধোনির মহানুভবতা কোনো দিন ভুলবেন না কারস্টেন
গ্যারি কারস্টেন কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জিতিয়েছেন ভারতকে। মহেন্দ্র সিং ধোনি ছিলেন সেই ভারতীয় দলের অধিনায়ক। ২০০৭ সালে কোচের দায়িত্ব নিয়ে ভারতীয় দলের খোলনলচেই পাল্টে দিয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক এই অধিনায়ক। অধিনায়ক ধোনির সঙ্গে তাঁর যুগলবন্দীও এক দারুণ ইতিহাস। দুজনের মধ্যে যে রসায়ন ছিল, সেটি দিয়েই তাঁরা ভারতীয় দলকে তৈরি করেছিলেন বিশ্বজয়ের উপযোগী করে।
এত দিন পর ইউটিউবে এক সাক্ষাৎকারে কারস্টেন তুলে ধরেন ধোনির সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক। দুজনের সম্পর্ক নাকি এতটাই ভালো ছিল যে একবার কারস্টেনকে দাওয়াত না দেওয়ায় একটি অনুষ্ঠানে ভারতীয় ক্রিকেট দলের কাউকেই যেতে দেননি ধোনি। কারস্টেন বলেন, ধোনির সেই ব্যবহার ছিল কোচের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধের অনন্য এক নজির।
সাক্ষাৎকারে সেই ঘটনাটি কারস্টেন বলতে গিয়ে বেশ আপ্লুতই, ‘একবার বেঙ্গালুরুর একটি বিমান প্রশিক্ষণ স্কুলে গোটা ভারতীয় ক্রিকেট দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সেটি ছিল ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপের ঠিক আগে। কিন্তু বিদেশি নাগরিক হওয়ায় সেই স্কুলের অনুষ্ঠানে নিমন্ত্রণ জানানো হয়নি আমাকে। কারণ, স্কুলটি ছিল একটি সেনানিবাস এলাকায়। এই দলে ছিলেন প্যাডি আপটন ও এরিক সিমন্সও। ধোনি এ ঘটনা জানতে পারে অনুষ্ঠানের দিন, এতে বেশ বিব্রত হয় সে। পরে সিদ্ধান্ত নেয়, যদি কোচরা অনুষ্ঠানে যেতে না পারে, তাহলে দলের কারোরই যাওয়ার দরকার নেই।’ প্যাডি ছিলেন ভারতীয় দলের কৌশলগত পরিকল্পনা ও মানসিক শক্তি বৃদ্ধির কোচ, আর সিমন্স দলের বোলিং পরামর্শক।
কারস্টেন বলেন, ‘আমি সে ঘটনা কোনো দিন ভুলতে পারব না। ধোনির সাফ কথা ছিল, বিদেশি কোচরাও দলের সদস্য। তাঁরা যেতে না পারলে আমরাও যাব না। একজন খেলোয়াড়ের মন কতটা সংবেদনশীল হলে সে এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ওই সিদ্ধান্তটি নেওয়া ধোনির জন্য খুবই কঠিন একটা ব্যাপার ছিল।’
ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম সেরা একটি অধ্যায় ছিল কারস্টেন-ধোনি জুটি। ২০০৭ সালে কোচ হিসেবে যোগ দেওয়ার পর ২০০৮ সালে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টেস্টে ১ নম্বর দল হয় ভারত। ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপে বিজয়ী হয়ে ১৯৮৩ সালের পর প্রথম ও এখনো পর্যন্ত শেষবারের মতো ৫০ ওভারের ক্রিকেটে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয় তারা। বিশ্বকাপের পরপরই ভারতীয় দলের কোচের পদ ছেড়ে দেন কারস্টেন, পরে তিনি আইপিএলে কোচ হিসেবে কাজ করেছেন।