টেস্ট ক্রিকেটকে হঠাৎ বিদায় বলে দিলেন কুইন্টন ডি কক

মাত্র ২৯ বছর বয়সেই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন কুইন্টন ডি ককছবি: এএফপি

বছরের শুরুতে দায়িত্ব পালন করছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার খণ্ডকালীন টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে। আর শেষে এসে ২৯ বছর বয়সেই টেস্ট ক্রিকেটকে হঠাৎ করে বিদায় বলে দিলেন কুইন্টন ডি কক। ভারতের বিপক্ষে সেঞ্চুরিয়নে প্রথম টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার হারের পর এ ঘোষণা দিয়েছেন এ উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যান।

এক বিবৃতিতে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা জানিয়েছে, পরিবারের সঙ্গে আরও সময় কাটাতে চান বলেই এ সময়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ডি কক ও তাঁর স্ত্রী সাশা তাঁদের প্রথম সন্তানের জন্মের অপেক্ষা করছেন। এ কারণে এমনিতেও ভারতের বিপক্ষে সিরিজের শেষ দুই টেস্টে খেলার কথা ছিল না ডি ককের। এবার তো অবসরেই চলে গেলেন।

পরিবারের সঙ্গে আরও সময় কাটাতে চান বলেই এ সময়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ডি কক
ছবি: এএফপি

ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকার বিবৃতিতে ডি কক বলেছেন, ‘এ সিদ্ধান্ত সহজে নিতে পারিনি। যেহেতু আমি ও সাশা আমাদের প্রথম সন্তানকে এ পৃথিবীতে স্বাগত জানানোর অপেক্ষা করছি, আমাদের পরিবার আরও প্রসারিত হবে—ফলে আমার ভবিষ্যৎ কী হতে যাচ্ছে, আমার জীবনে এখন কোনটা প্রাধান্য পাবে সেসব নিয়ে অনেক সময় নিয়ে ভেবেছি আমি। আমার পরিবারই আমার কাছে সব। ফলে আমাদের জীবনের এ রোমাঞ্চকর অধ্যায়ে তাদের সঙ্গে আরও সময় কাটাতে চাই।’

সময় গেলে আর ফিরে পাবেন না, ডি কক বলেছেন এমন, ‘আমি টেস্ট ক্রিকেট ভালোবাসি, দেশকে প্রতিনিধিত্ব করা এবং এর সঙ্গে সম্পর্কিত সবকিছুকেই ভালোবাসি। উত্থান-পতন, উদ্‌যাপন এমনকি হতাশা—সবই উপভোগ করেছি। তবে এখন এমন কিছু খুঁজে পেয়েছি, যা এর চেয়েও ভালোবাসি। জীবনে আপনি সময় ছাড়া সবই কিনতে পারবেন, আর এ মুহূর্তে আমার জীবনে অর্থবহ মানুষের জন্য সঠিক কাজ করারই সময়।’

‘জীবনে আপনি সময় ছাড়া সবই কিনতে পারবেন, আর এ মুহূর্তে আমার জীবনে অর্থবহ মানুষের জন্য সঠিক কাজ করারই সময়।’
ছবি: এএফপি

বিদায় বললেও যে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে খেলা একেবারে শেষ হয়ে যাচ্ছে না তাঁর, সেটিও মনে করিয়েছেন ডি কক, ‘এ সুযোগে একেবারে শুরু থেকে আমার টেস্ট ভ্রমণের অংশ থাকা সবাইকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। আমার কোচ, সতীর্থ, ম্যানেজমেন্ট দল এবং আমার পরিবার ও বন্ধু—তোমাদের সমর্থন ছাড়া আমি নিজেকে মেলে ধরতে পারতাম না। তবে প্রোটিয়া হিসেবে এটি আমার ক্যারিয়ারের শেষ নয়। সাদা বলের ক্রিকেট এবং নিকট ভবিষ্যতে আমার দেশকে সামর্থ্যের সেরাটুকু দিয়ে প্রতিনিধিত্ব করার প্রতি আমি পুরোপুরি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। ভারতের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজে আমার সব সতীর্থকে শুভকামনা। ওয়ানডে এবং টি-টোয়েন্টিতে দেখা হবে।’

গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ড সব ক্রিকেটারের জন্য হাঁটু গেড়ে ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ আন্দোলনে সংহতি জানানোর নিয়ম বাধ্যতামূলক করার পর বেঁকে বসেছিলেন ডি কক। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচ থেকে নিজেকে সরিয়েও নিয়েছিলেন তিনি। পরে অবশ্য ক্ষমা চান, দলে ফেরার পর থেকে হাঁটু গেড়ে সংহতি জানাতেও দেখা যায় তাঁকে।

২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পোর্ট এলিজাবেথে টেস্ট অভিষেক হয়েছিল ডি ককের। ৫৪ ম্যাচে ৩৮.৮২ গড়ে তিনি করেছেন ৩ হাজার ৩০০ রান। ছয়টি শতকের সঙ্গে ২২টি অর্ধশতক আছে তাঁর। টেস্টে ২২১টি ক্যাচের সঙ্গে ১১টি স্টাম্পিং আছে তাঁর। দক্ষিণ আফ্রিকাকে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪ টেস্টে নেতৃত্ব দিয়ে দুটিতে জিতিয়েছিলেন ডি কক।