জাতীয় দলের খেলা বাদ দিয়ে সাকিব কেন এত ছুটি কাটান? ছুটি নিয়ে কেন একটার পর একটা বিজ্ঞাপনের শুটিং করেন? সাকিব কেন জাতীয় দলের হয়ে সব ম্যাচে খেলেন না? সাকিবের কেন এত ব্যবসা? তাহলে ক্রিকেটার সাকিব বড়, নাকি ব্যবসায়ী সাকিব?
দেশের ক্রিকেট নিয়ে জনতার মুখে মুখে ঘোরা এসব প্রশ্ন নিয়েই প্রথম আলো কথা বলেছে নিউজিল্যান্ড সফর থেকে ছুটি নিয়ে ঢাকায় থেকে যাওয়া সাকিব আল হাসানের সঙ্গে।
সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশ দলের অলরাউন্ডার কথা বলেছেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ব্যর্থতা ও বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়েও—
প্রশ্ন :
সাকিব আল হাসান সব সময়ই কোনো না কোনোভাবে আলোচনায় থাকেন। কখনো ভালো খেলে, কখনো দলকে জিতিয়ে, কখনো বিতর্কিত কারণে। তো এই মুহূর্তে কোন আলোচনাটা আপনার কানে বেশি আসছে?
সাকিব আল হাসান: একটাও না।
প্রশ্ন :
কিন্তু কিছু আলোচনা তো আছে। আপনার বারবার ছুটি নেওয়া তার একটি...
সাকিব: দেখেন, মানুষ যা মন চায় বলতে থাকে; এই যেমন আপনি বললেন। আমি যদি এখন জিজ্ঞাসা করি, আমি কয়টা সিরিজে ছুটি নিয়েছি আর কয়টায় চোটের কারণে খেলতে পারিনি! একজন শুধু শুধু দোষ দিয়ে দিল। এগুলো নিয়ে কি আমার মন্তব্য করার দরকার আছে?
প্রশ্ন :
আপনাকে দোষ দিচ্ছি না। এ নিয়ে আলোচনার কথা বলছি...
সাকিব: আলোচনা যখন কেউ করবে, তখন তো বুঝেশুনে করা উচিত।
প্রশ্ন :
তো সেই আলোচনার জবাবে আপনি কী বলবেন?
সাকিব: আমার দিক থেকে আসলে কিছু বলার নেই। কারণ, এসব বস্তুনিষ্ঠ কোনো আলোচনা নয়, যেটা নিয়ে আমি মন্তব্য করতে বাধ্য।
প্রশ্ন :
এবার তো ব্যক্তিগত কারণে ছুটি নিয়েছিলেন। তো ছুটিটা কেমন কাটছে?
সাকিব: ছুটির মতোই কাটছে। ছুটি যে কারণে নিয়েছি, সে কাজগুলোই করছি। বলতে পারেন ব্যক্তিগত কিছু কাজ। ব্যক্তিগত বিষয় তো মানুষ ব্যক্তিগতই রাখতে চায়। অনেকে আবার সেটা নাও চাইতে পারে। কিন্তু আমি চাই আমার ব্যক্তিগত জিনিস খুবই ব্যক্তিগত রাখতে।
প্রশ্ন :
আপনাকে বাংলাদেশ দল এরপর আবার কবে থেকে নিয়মিত পাবে?
সাকিব: আশা করি জানুয়ারি থেকে খেলব।
প্রশ্ন :
বিসিবির সঙ্গে আপনি তিন সংস্করণের ক্রিকেটেই খেলতে চুক্তিবদ্ধ। কিন্তু শোনা যায়, টেস্ট ক্রিকেটটা বেছে বেছে খেলবেন, বোর্ডের সঙ্গে এ রকম একটা অলিখিত বোঝাপড়া করে নিয়েছেন। কী বলবেন?
সাকিব: না, এ রকম কিছু হয়নি। আমি সব সংস্করণে সব সময় খেলার জন্য বিবেচনায় থাকব, এভাবেই চুক্তি হয়েছে। আর যেগুলো খেলিনি, সব তো চোটের কারণেই খেলিনি। পাকিস্তানের বিপক্ষে দ্বিতীয় টেস্টে আমি পুরো ফিট ছিলাম না, তাও তো খেলেছি। মানুষ তো এগুলো বলে না!
প্রশ্ন :
চোটে পড়লে তো কিছু করার নেই। ব্যক্তিগত কারণেও আপনি ছুটি নিতেই পারেন। কিন্তু আপনার কি মনে হয় না আপনার অনুপস্থিতি দলের পারফরম্যান্সে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে?
সাকিব: আমি তো বরং মনে করি এতে নতুন কিছু খেলোয়াড়ের সুযোগ হচ্ছে। তারা যদি সুযোগটা নিতে পারে, বাংলাদেশ আরও দু-একটা ভালো খেলোয়াড় পেয়ে যাবে।
প্রশ্ন :
এর আগেও প্রথম আলোকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথাই বলেছিলেন। নতুনদের মধ্যে ভালো সম্ভাবনা দেখেন বলেও মন্তব্য করেছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কি নতুনেরা সে লক্ষণ দেখাতে পারছেন তাঁদের খেলায়?
সাকিব: দেখাবে, সে জন্য ধৈর্য ধরতে হবে তো। দেখানোর জন্য সময় লাগে। এক ম্যাচ খেলেই কেউ লক্ষণ দেখিয়ে দেবে—এটা কীভাবে আশা করেন?
প্রশ্ন :
কিন্তু আপনারা যখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এসেছিলেন...আপনি, তামিম, মুশফিক, এর আগে মাশরাফি, তখন কিন্তু শুরুতেই বোঝা গিয়েছিল আপনারা কিছু দেবেন দেশের ক্রিকেটকে...
সাকিব: সবার আসাটা তো এক রকম হয় না। ধরুন, মারভান আতাপাত্তু বোধ হয় তার ক্যারিয়ারের প্রথম পাঁচ টেস্টেই (প্রথম ৬ ইনিংসের মধ্যে ৫টিতে) শূন্য করেছিল...এ রকম কিছু একটা। তারপরও একটা পর্যায়ে তারই কিন্তু সবচেয়ে বেশি ডাবল সেঞ্চুরি ছিল। এখন আমি যদি প্রশ্ন করি, ধরুন, বাংলাদেশে একটা ক্রিকেটার নতুন এসে পাঁচ ম্যাচে পাঁচটা ‘ডাক’ মারল, ও জীবনে আর কোনো দিন দলে সুযোগ পাবে? আমি বলি, এত অধৈর্য হবেন না। সময় দিন, ওরাও ভালো করবে।
প্রশ্ন :
সেই সময়টা তো তাঁদের সবার আগে বোর্ড আর নির্বাচকদেরই দেওয়া উচিত...
সাকিব: অবশ্যই। তবে এ নিয়ে আমার বেশি কিছু বলার নেই। কারণ, আমি নীতিনির্ধারক নই। আমি খেলোয়াড়। আমার কাজ হচ্ছে শুধু খেলা।
প্রশ্ন :
একসময় আপনারা পাঁচজন ছিলেন জাতীয় দলের মেরুদণ্ড। মাশরাফি চলে যাওয়ার পর চারজন, আর এখন তো চারজনকেও একসঙ্গে দলে পাওয়া কঠিন। আপনার কি মনে হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটের সুবর্ণ সময়টা শেষ হতে চলেছে?
সাকিব: আমার তো মনে বাংলাদেশের ক্রিকেটে সুবর্ণ সময় এখনো শুরুই হয়নি।
প্রশ্ন :
কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট তো এই সময়টাতেই বেশি সাফল্য পেয়েছে, ব্যক্তিগত অর্জনও এসেছে অনেক...
সাকিব: এটা ঠিক আছে, সাফল্য তো আছেই। আমরা মোটামুটি সফল। তবে আমার কাছে সুবর্ণ সময় বলতে যখন বাংলাদেশ জাতীয় দল বড় কিছু অর্জনের মধ্য দিয়ে যাবে, সেটা। আর সবকিছুরই তো শেষ আছে। শেষ হওয়াটাই স্বাভাবিক পরিণতি। নাকি আজীবন খেলে যায় মানুষ (হাসি)!
প্রশ্ন :
এখানে আবারও সেই পুরোনো প্রসঙ্গ, নতুনরা আপনাদের কাজটা এগিয়ে নেবেন, এ ব্যাপারে আপনি কতটা আশাবাদী?
সাকিব: আমি আশাবাদী। আমি আশা করতে পছন্দ করি। আমার মনে হয় শুধু একটু সময় দিলে নতুনরা আরও ভালো করবে।
প্রশ্ন :
নতুনদের কোন দিকটাতে ঘাটতি দেখেন, যেটা মেটানোটা জরুরি?
সাকিব: কিছু তো ঘাটতি আছেই। এত দিন খেলার পরও আমাদের ঘাটতি আছে, ওদের তো থাকবেই। কত তাড়াতাড়ি তারা সেটা কাটিয়ে ওঠে, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন :
বাংলাদেশ দলে যদিও তিন সংস্করণেই এখন তিনজন অধিনায়ক, আপনার কাছে যদি আবার অধিনায়কত্বের প্রস্তাব আসে, নেবেন?
সাকিব: (একটু ভেবে) অবস্থা বুঝে সিদ্ধান্ত নেব। এখনো এ রকম কিছু আমার মাথায় নেই। যদি কখনো প্রস্তাব আসে, তখন এ নিয়ে আলোচনা হতে পারে, তারপর সিদ্ধান্ত। এখন এ নিয়ে ভাবছি না। আলহামদুলিল্লাহ আমার পারফরম্যান্স মোটামুটি ভালো হচ্ছে। আমার চেষ্টা এখন শুধু সেদিকে।
প্রশ্ন :
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল প্রত্যাশা মেটাতে পারল না কেন?
সাকিব: দেখুন, আমি চেষ্টা করেছি আমার জায়গা থেকে ভালো খেলার। কতটুকু খেলতে পারছি জানি না। তবে আমার চেষ্টা ছিল। এখন আমার তো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে হাত ছিল না, দল নির্বাচনেও হাত নেই। কাজেই এ রকম প্রশ্ন আমাকে না করাই ভালো।
প্রশ্ন :
কিন্তু দলের একজন সিনিয়র সদস্য হিসেবে তো আপনার ধারণা আছে সমস্যাটা কোথায় ছিল...
সাকিব: আমি এটা বুঝি যে আমরা যে প্রত্যাশা নিয়ে বিশ্বকাপে গিয়েছিলাম, সেটা হয়নি।
প্রশ্ন :
এবার তো মাঠের বাইরে অনেক আলোচনা-সমালোচনা ছিল। সেগুলো দলের পারফরম্যান্সে কোনোভাবে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে হয়?
সাকিব: আমার তা মনে হয় না।
প্রশ্ন :
কিন্তু দল থেকে তখন সমালোচনার পাল্টা জবাব দেওয়া হয়েছিল। বাইরের আলোচনা কোনো প্রভাব না ফেললে তো টুর্নামেন্টের মধ্যে সেগুলো এড়িয়ে যাওয়া যেত...
সাকিব: এগুলো যাঁর যাঁর ব্যক্তিগত মতামত ছিল। সবারই নিজস্ব চিন্তাভাবনা থাকে। সেগুলো তাঁরা বলেছেন। ওটাকে তো আর দলের বক্তব্য বলতে পারেন না।
প্রশ্ন :
কিন্তু যখন অধিনায়ক বলেন, তখন তো সেটা দলের বক্তব্যই হয়ে যায়...
সাকিব: অধিনায়কও তো একজন আলাদা মানুষ। অধিনায়ক ছাড়াও তিনি একজন ব্যাটসম্যান, একজন বোলার, একজন ফিল্ডার। তাঁর আলাদা মত থাকতেই পারে। আমি এগুলোকে ব্যক্তিগত মত হিসেবেই দেখি। এমন নয় যে দলগতভাবে পরিকল্পনা করে সেসব বলা হয়েছে।
প্রশ্ন :
বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে কেন ভালো করছে না?
সাকিব: এটা একটা ভালো প্রশ্ন—কেন আমরা ভালো করছি না? এই চিন্তা আমারও আসে। একটা হতে পারে আমরা বিশ্বাস করি না যে টি-টোয়েন্টিতে ভালো করতে পারি। আর একটা হচ্ছে, আমরা হয়তো নিজেদের অত শক্তিশালী ভাবি না যে পাওয়ার হিট করতে পারব বা শেষ ৫-৬ ওভারে ৫০-৬০ রান করে ফেলতে পারব। এই অভ্যাসগুলো যদি আমরা একটু করতে পারি, তাহলে হয়তো এগোতে পারব। তৈরি হওয়ার সুযোগটা ঘরোয়া ক্রিকেটেই বেশি। বিপিএলটা যদি আমরা নিয়মিত করতে পারি, আমাদের খেলোয়াড়েরা ম্যাচ জিতিয়ে আনার অভ্যাস রপ্ত করতে পারে, তখন এই সমস্যাগুলো দূর হতে পারে। সে জন্য বিপিএল প্রতিবছর নিয়মিত হওয়া দরকার। আমি তো দেখি ভারতে টেস্ট দলেও তারাই সুযোগ পায়, যারা আইপিএলে ভালো করে! কঠিন পরিস্থিতি কীভাবে সামলে উঠতে হয়, সেটা বিপিএলে শেখা যায়। কারণ, বিপিএলে প্রত্যেক খেলোয়াড়ই অনেক চাপের মধ্যে থাকে।
প্রশ্ন :
টেস্ট ক্রিকেটের কথা যদি বলি, উন্নতির পথ কী?
সাকিব: আমার কাছে তো মনে হয় আমাদের টেস্ট দলটা এখন বেশ ভালো। তাসকিন খুব ভালো করছে, সঙ্গে আরও এক-দুজন ভালো পেসার পেলে ভালো হয়। ইবাদত ভালো করা শুরু করেছে এখন। এ রকম আর দুইটা ভালো পেসার যদি থাকে, সব মিলিয়ে চার পেসার হাতে থাকলে দারুন হবে। স্পিনাররা ঘরের মাঠে ভালো বোলিং করছে। ব্যাটিংটাও আমার মনে হয় মোটামুটি স্থিতিশীলই আছে। সবাই যদি আমরা একসঙ্গে খেলতে পারতাম, যেটা আমাদের মূল টেস্ট দল তাহলে ভালো হতো। সেই সম্ভাবনা এখন যদিও কম, তবু নতুন যারা আসছে, আশা করব তারা ভালো করবে। সুযোগটা দ্রুত ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারবে। তখন আর মনে হবে না কোনো সমস্যা আছে।
প্রশ্ন :
টেস্টে ভালো করতে ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আর কী করা যেতে পারে?
সাকিব: এ ব্যাপারে নিশ্চয়ই বোর্ডের নীতিনির্ধারকেরা চিন্তাভাবনা করছেন।
প্রশ্ন :
টেস্ট দল নিয়ে এবার অনেক বিতর্ক হলো। সবে অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলা ক্রিকেটার বা ঘরোয়া প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ভালোভাবে না খেলা ক্রিকেটারও সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন টেস্ট দলে। টেস্ট দল নির্বাচনে এই প্রবণতা কতটা ঠিক মনে করেন?
সাকিব: এটা একটা জটিল ব্যাপার। বাংলাদেশে সব সময় এমনই হয়ে আসছে। আমিও তো অনূর্ধ্ব-১৯ খেলার পরপরই জাতীয় দলে চলে এসেছিলাম।
প্রশ্ন :
ব্যতিক্রম তো কিছু থাকেই। আদর্শ প্রক্রিয়া কী হওয়া উচিত? আমাদের তো বয়সভিত্তিক দল আর জাতীয় দলের মধ্যে সুগঠিত কোনো ‘এ’ দল নেই, যেটা থেকে পরিণত হয়ে তরুণ ক্রিকেটাররা সর্বোচ্চ পর্যায়ে আসবেন...
সাকিব: আমাদের সময় তো ছিল ‘এ’ দল। আমি নিজেই খেলেছি জিম্বাবুয়ে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। ইংল্যান্ডে গিয়ে আমরা ইংল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেছি। আসলে এসব তো নীতিনির্ধারকদের বিষয়।
প্রশ্ন :
তা তো বটেই, কিন্তু আপনি তো বিভিন্ন দেশে খেলার সুবাদে সেসব দেশের ক্রিকেট–সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে মিশছেন, তাদের ক্রিকেট সম্পর্কে ধারণা পেয়েছেন। আপনার অভিজ্ঞতাও তো বোর্ড নিতে পারে...
সাকিব: দেখুন, এগুলো তো প্রকাশ্যে বলার বিষয় নয়। যদি নীতিনির্ধারকেরা মনে করেন যে আমার সঙ্গে আলোচনা করলে তাঁরা কিছু ধারণা পেতে পারেন, সে রকম চিন্তা যদি তাঁরা করেন, অবশ্যই আমি সাহায্য করব।
প্রশ্ন :
বোর্ড সভাপতি তো প্রায়ই আপনাদের সঙ্গে কথা বলেন। জাতীয় দলের বাইরে দেশের ক্রিকেট নিয়ে আলোচনা হয় না তখন?
সাকিব: না, এ রকম কখনো হয়নি যে বোর্ড থেকে এসব ব্যাপারে আমাদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছে বা মতামত চাওয়া হয়েছে। তবে আমার মনে হয়, ওনারা এগুলো নিয়ে ভালোভাবেই চিন্তা করছেন।
প্রশ্ন :
নিউজিল্যান্ডে দুই টেস্টের সিরিজ খেলতে গেছে বাংলাদেশ। ঘরের মাঠে পাকিস্তানের সঙ্গে যে রকম খেলে গেল দল, সেখানে কেমন পারফরম্যান্স আশা করেন?
সাকিব: কঠিন কন্ডিশন, যারা নতুন তাদের জন্য আরও কঠিন। তবে আমি চাই, এই কঠিন কন্ডিশনেই যেন তারা তাদের আসল খেলাটা দেখাতে পারে। লড়াই করতে পারে এবং দেখিয়ে দিতে পারে, কঠিন কন্ডিশনে আমরাও কঠিন হয়ে খেলতে পারি।
প্রশ্ন :
আপনি নেই, তামিম নেই, মাহমুদউল্লাহ তো টেস্টই ছেড়ে দিলেন। অভিজ্ঞতার অভাবে তো ভুগবে দল!
সাকিব: মুশফিক ভাই, মুমিনুল তো আগেও খেলেছে সেখানে। অন্যদের সঙ্গে তারাও অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে পারবে। এটা বড় কোনো সমস্যা নয়। আর নিউজিল্যান্ডে সুবিধা হলো, সেখানে খুব ভালো ব্যাটিং উইকেট থাকে। ওখানে যতবারই বাংলাদেশ টেস্ট খেলেছে, হয়তো দল হিসেবে ভালো করেনি, কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে অনেকেই বড় ইনিংস খেলেছে, সেঞ্চুরি করেছে।
প্রশ্ন :
আপনার মাস্কো-সাকিব ক্রিকেট একাডেমি কেমন চলছে?
সাকিব: এখন পর্যন্ত ভালোভাবেই এগোচ্ছে সবকিছু। তবে উন্নতির তো শেষ নেই। আমরা এখনো নতুন অনেক কিছু শিখছি।
প্রশ্ন :
খেলার বাইরে এ রকম আরও অনেক কিছুর সঙ্গেই আপনার সম্পৃক্ততা। নানা ধরনের ব্যবসা আছে, অনেক পণ্যের শুভেচ্ছাদূত আপনি। এসবের মধ্যে কোন কাজটা বেশি উপভোগ করেন?
সাকিব: সব কটিই উপভোগ করি। ও রকম না যে একটা ভালো লাগে, আরেকটা খারাপ লাগে।
প্রশ্ন :
আপনাকে নিয়ে শুরুতে যে আলোচনার কথা বললাম, সে রকম আরেকটা আলোচনা—ক্রিকেটার সাকিব আগে, নাকি ব্যবসায়ী সাকিব আগে?
সাকিব: দেখুন, কে কী বলে, এটা আমি কখনো শুনিনি, শোনার কোনো দরকারও নেই। আমি এগুলোকে কোনো আলোচনা হিসেবেই নিই না। জানি আমি কী করছি, আমার কী করা দরকার। তবে হ্যাঁ, আমার পরিচয় একটাই—আমি ক্রিকেটার।