ক্রিকেট আম্পায়ারিং এখন অনেক কঠিন

সাবেক আম্পায়ার সাইমন টফেল। ছবি: এএফপি
সাবেক আম্পায়ার সাইমন টফেল। ছবি: এএফপি
>নানা রকম প্রযুক্তির ব্যবহারে মাঠে আম্পায়াররা বেশ চাপে থাকেন। এ কারণে আম্পায়ারিং কঠিন হয়ে পড়েছে বলে মনে করেন সাবেক আম্পায়ার সাইমন টফেল

ক্রিকেটে আম্পায়ারিং করা কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ খেলাটা এখন নিয়ন্ত্রণ করে প্রযুক্তি। সংবাদ সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন কথাই বলেছেন সাবেক আম্পায়ার সাইমন টফেল। ক্যারিয়ারে টানা পাঁচবার আইসিসির বর্ষসেরা হয়েছিলেন ৪৮ বছর বয়সী এ অস্ট্রেলিয়ান।

টফেলের মতে, মাঠে আম্পায়ারের ভুল বের করতে কয়েক ডজন ক্যামেরা এবং অন্যান্য প্রযুক্তি থাকে। এতে স্বাভাবিকভাবেই চাপ নিয়ে ম্যাচ পরিচালনা করতে হয় আম্পায়ারদের। এই চাপের মধ্যেই নিতে হয় গুরুত্বপূর্ণ সব সিদ্ধান্ত। আর তাই আম্পায়ারিংকে এখন ভীষণ কঠিন এক দায়িত্ব বলেই মনে করেন টফেল, ‘এটা অবশ্যই ভীষণ চ্যালেঞ্জিং, সহজ হলে সবাই করত। বিষয়টি আসলে ভুলের মধ্য দিয়ে শিক্ষা নেওয়া।’

ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম (ডিআরএস) চালু থাকায় এখন মাঠে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করতে পারেন ক্রিকেটাররা। সিদ্ধান্ত ভুল হলে তা শোধরানোর সুযোগ রয়েছে। কাজটি নিখুঁতভাবে করতে মাঠে রয়েছে স্লো মোশন ক্যামেরা, বল ট্র্যাকিং প্রযুক্তি, অডিও সেনসরস ও হিট-সেন্সিং প্রযুক্তি (হট স্পট)। বল ব্যাটে লেগেছে কি না তা নিশ্চিত হতে ‘হট স্পট’ ব্যবহার করা হয়। ক্রিকেটের মতো টেনিস, রাগবি ও ফুটবলেও রয়েছে প্রযুক্তির ব্যবহার। এসব খেলাতেও চাপ নিয়েই ম্যাচ পরিচালনা করতে হয় অফিশিয়ালদের।

টফেলকে তাঁর সময়ের সেরা আম্পায়ার হিসেবেই ধরা হয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ার হিসেবে তাঁর অভিষেক ঘটেছিল মাত্র ২৭ বছর বয়সে। এখন আম্পায়ারদের চাপ এবং তা কাটিয়ে ওঠারই ব্যাখ্যা করলেন টফেল, ‘ত্রিশের বেশি ক্যামেরা, বল ট্র্যাকার, স্নিকো, হট স্পট এবং ধারাভাষ্যকক্ষে তিনজন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে যখন লড়বেন, এমন কিছু সময় আসবে যখন সবকিছু নিখুঁত হবে না। কিন্তু এটা জীবনেরই অংশ। রজার ফেদেরার, টাইগার উডসও অপ্রত্যাশিতভাবে ম্যাচ হারে। তবে ভুল থেকে শিখতে পারলেই লাভ।’

২০১২ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আম্পায়ারিং ছেড়ে দেওয়া টফেল ২০০৪ থেকে ২০০৮—এ পাঁচ বছরে টানা বর্ষসেরা আম্পায়ার হয়েছিলেন। গত জুলাইয়ে বিশ্বকাপ ফাইনালে আম্পায়ারিংয়ে ভুল ধরিয়ে আলোচনায় এসেছিলেন টফেল। মার্টিন গাপটিলের থ্রো বেন স্টোকসের ব্যাটে লেগে বাউন্ডারি পেরিয়ে যাওয়ায় মোট ৬ রান পেয়েছিল ইংল্যান্ড। টফেলের মতে, আম্পায়ারের ৫ রান দেওয়া উচিত ছিল।

ক্রিকেটে প্রযুক্তি নিয়ে এখন নানা রকম পরীক্ষা করা হচ্ছে। ভারত যেমন আইপিএলে ‘নো বল’ ধরতে আলাদা আম্পায়ারিংয়ের চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। টফেল নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষার পক্ষে হলেও সেগুলো যেন খেলাকে সমৃদ্ধ করে, সে কথাই মনে করিয়ে দিলেন, ‘(আম্পায়ারিংয়ের ভুল) দু-একটি ঘটনা নিয়ে আবেগমথিত মন্তব্য না করতে সবাইকে উৎসাহিত করব আমি। নিখুঁতের পেছনে না ছুটে পরিবর্তনগুলো খেলাকে যেন সমৃদ্ধ করে। নিখুঁত বলে কিছু নেই।’