আবার রোহিত-বিস্ফোরণ, ছুঁলেন দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড
রোহিত শর্মার ব্যাট থেকে যেন আগুন ছুটছে! কদিন আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে পেয়েছিলেন ডাবল সেঞ্চুরি। এবার টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ছুঁলেন দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ভারতীয় ওপেনার তিন অঙ্কের দেখা পেয়েছেন মাত্র ৩৫ বলে! গত অক্টোবরে বাংলাদেশের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন ডেভিড মিলার। সেটাও ৩৫ বলে।
রোহিতের ধ্বংসাত্মক ব্যাটিংয়ে ভর করে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহের রেকর্ড গড়ার পথেই ছিল ভারত। এ জন্য শেষ ওভারে দরকার ছিল ১১ রান। শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। ৫ উইকেটে ২৬০ রানে থেমেছে ভারতের ইনিংস। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এটি যৌথভাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় রান। ২০০৭ সালে কেনিয়ার বিপক্ষে ৬ উইকেটে ২৬০ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা। তবে গত বছর অস্ট্রেলিয়ার গড়া ৩ উইকেটে ২৬৩ রানই এ সংস্করণে আন্তর্জাতিক মঞ্চে সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। সেটাও এই শ্রীলঙ্কারই বিপক্ষে।
ভারতীয় অধিনায়ক আউট হওয়ার পর সেঞ্চুরি পেতে পারতেন লোকেশ রাহুল। রোহিতের মতো না হলেও ছুটছিলেন দ্রুতলয়েই। কিন্তু তিনি আউট হন ৪৯ বলে ৮৯ রানের ইনিংস খেলে। ২০০৯ সালের পর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারের মতো তিনে ব্যাটিংয়ে নেমে ২৮ রান করেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। এ সংস্করণে তিনি শেষবার তিন নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমেছিলেন চণ্ডীগড়ে এ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই। আজ ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের বেধড়ক পিটুনিতে লঙ্কান বোলারদের ত্রাহি মধুসূদন দশা! ৩.৪ ওভারে ৪৯ রান দিয়েছেন আকিলা ধনঞ্জয়া। তবে ২ উইকেট নিলেও সবচেয়ে বেশি রান দিয়েছেন নুয়ান প্রদীপ (৪-০-৬১-২)।
আন্তর্জাতিক টি–টোয়েন্টিতে দ্রুততম পাঁচ সেঞ্চুরি | |||||
খেলোয়াড় | দল | বল | প্রতিপক্ষ | ভেন্যু | মোট রান/বল |
রোহিত শর্মা | ভারত | ৩৫ | শ্রীলঙ্কা | ইন্দোর | ১১৮/৪৩ |
ডেভিড মিলার | দক্ষিণ আফ্রিকা | ৩৫ | বাংলাদেশ | পচেফস্ট্রুম | ১০১/৩৬ |
রিচার্ড লেভি | দক্ষিণ আফ্রিকা | ৪৫ | নিউজিল্যান্ড | হ্যামিল্টন | ১১৭/৫১ |
ফাফ ডু প্লেসি | দক্ষিণ আফ্রিকা | ৪৬ | ও.ইন্ডিজ | জোহানেসবার্গ | ১১৯/৫৬ |
লোকেশ রাহুল | ভারত | ৪৬ | ও.ইন্ডিজ | লাউডারহিল | ১১০/৫১ |
ইন্দোরে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় নিশ্চয়ই ভীষণ আফসোস হচ্ছে লঙ্কান অধিনায়ক থিসারা পেরেরার। রোহিত যে তাঁর বোলারদের কচুকাটা করেছেন ইনিংসের শুরু থেকেই। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুসের করা প্রথম ওভারে দুটি বাউন্ডারি পাওয়ার পর ভারতের অধিনায়ককে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এতটাই মারমুখী ছিলেন যে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড ছুঁয়েছেন ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে, সেটাও আবার বাউন্ডারি মেরে!
রোহিত তাঁর ইনিংসে ৯১.৫ শতাংশ রানই নিয়েছেন চার–ছক্কা মেরে। এই সংস্করণে সেঞ্চুরি পাওয়া ইনিংসগুলোর মধ্যে তা রেকর্ড কি না, সেটা গবেষণার বিষয়। তাঁর ৪৩ বলে ১১৮ রানের ইনিংসে ছিল ১২টি বাউন্ডারি আর ১০ ছক্কার মার। এর মধ্যে নবম ওভারে গুণারত্নের কাছ থেকে নিয়েছেন ২০ রান এবং ১১তম ওভারে পেরেরাকে মেরেছেন চার ছক্কা! এর মধ্যে শেষ তিন বলে তিনটি! চামেরার করা ১৩তম ওভারে আউট হওয়ার আগে প্রথম তিন বলে দুই ছক্কা আর এক বাউন্ডারিতে নিয়েছেন ১৬ রান। এতে টি-টোয়েন্টিতে ভারতের হয়ে ওপেনিংয়ে সর্বোচ্চ রানের জুটির রেকর্ডটা নিজেদের অধিকারে নিয়ে নিয়েছেন রোহিত-লোকেশ রাহুল। অবশ্য পরের বলেই ধনঞ্জয়াকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান রোহিত। ফেরার আগে ব্যাট হাতে যেভাবে ‘অগ্নিশর্মা’ হয়েছিলেন, তাতে টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ডাবল সেঞ্চুরি পেতেই পারতেন!