আইপিএলে গুজরাটের ‘লিগ্যাসি’ নিয়ে কথা বলবে পরের প্রজন্ম: পান্ডিয়া
আগেও চারবার আইপিএল জিতেছেন, তবে সেটি মুম্বাই ইন্ডিয়ানসের জার্সিতে। সেখানে সব কৃতিত্ব অধিনায়ক রোহিত শর্মাকেই দেয় সবাই। সেদিক থেকে এবার প্রথমবারের মতো আইপিএলে নামা গুজরাট টাইটানসকে শিরোপা জেতানোটা হার্দিক পান্ডিয়াকে আগের চার শিরোপার চেয়েও বেশি আনন্দ দিয়েছে। অধিনায়ক তিনি, টুর্নামেন্টজুড়ে দারুণ খেলার পর কাল ফাইনালেও পান্ডিয়াই ম্যাচসেরা। এক টুর্নামেন্ট থেকে আর কী চাইতে পারতেন পান্ডিয়া!
ব্যক্তিগত এসব ব্যাপার নিয়েও অনেক কথা বলেছেন পান্ডিয়া, তবে কাল ফাইনাল শেষে গুজরাট অধিনায়ক দলের অর্জন নিয়েই কথা বলেছেন বেশি। আহমেদাবাদে নিজেদের মাঠ নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে কাল রাজস্থান রয়্যালসের বিপক্ষে ৭ উইকেটের অনায়াস জয়ে শিরোপা পাওয়ার পর পান্ডিয়া বলছেন, গুজরাট একটা ‘লিগ্যাসি’ তৈরি করেছে, যেটি নিয়ে পরের প্রজন্মগুলো কথা বলবে!
ফাইনালটা কাল মোটেও জমজমাট হয়নি। আগে ব্যাট করে রাজস্থান রয়্যালস ৯ উইকেটে মাত্র ১৩০ রান করতে পেরেছে, সেখানে বল হাতে ১৭ রানে ৩ উইকেট পান্ডিয়ার। এরপর ৭ উইকেট আর ১১ বল হাতে রেখে হেসেখেলেই জিতেছে গুজরাট। বল হাতে অমন পারফরম্যান্সের পর ব্যাট হাতে ৩০ বলে ৩৪ রান করা পান্ডিয়াকে ম্যাচসেরা বেছে নিতে দুবার ভাবতে হয়নি।
নিজের ব্যাটিং-বোলিং নিয়েও বেশ উচ্চকণ্ঠই ছিলেন পান্ডিয়া। তবে অধিনায়ক বলেই কিনা দলের অর্জন নিয়েই বেশি উচ্ছ্বাস তাঁর। অভিষেক মৌসুমে শিরোপা জিতেই গুজরাটের ‘লিগ্যাসি’ তৈরি হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে তাঁর, ‘এই শিরোপাটা বিশেষ কিছু, কারণ আমরা সবাই একটা লিগ্যাসি তৈরি করতে চেয়েছিলাম। পরের প্রজন্মগুলো এ নিয়ে কথা বলবে। সবাই মনে রাখবে, দলটা এবার শুরু করেছে এবং প্রথম মৌসুমেই শিরোপা জিতে ফেলেছে। এটা অনেক বিশেষ কিছু।’
দল নিয়ে আলোচনা শেষে নিজেকে নিয়েও কথা বলেছেন পান্ডিয়া। গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চোট থেকে সেরে ওঠা পান্ডিয়ার শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে ভারতীয় দলে সুযোগ পাওয়া নিয়ে অনেক সমালোচনা হয়েছে। বিশ্বকাপে পান্ডিয়া আর ভারতের ব্যর্থতা সমালোচনার জোর আরও বাড়িয়েছে। এবার অক্টোবর-নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় আবার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, তার আগে আইপিএলে পান্ডিয়ার পারফরম্যান্স, নেতৃত্বগুণ তাঁকে ভারতীয় দলেও অপরিহার্য করে তুলবে নিশ্চিত।
পান্ডিয়া সেসব নিয়ে সরাসরি কথা বলেননি, শুধু নিজের ঢোলটাই পিটিয়েছেন। গতকাল ফাইনালে নিজের বোলিং নিয়ে ভারতীয় অলরাউন্ডারের কথা, ‘ঠিক সময়ে এসে দেখাতে চেয়েছিলাম আমি কতটা কঠোর অনুশীলন করেছি এ নিয়ে। বোলিংয়ের দিক থেকে আজই আমার সেরা দিনটা গেছে। নিজের সেরাটা আমি সেরা উপলক্ষের জন্যই বাঁচিয়ে রেখেছিলাম।’
আর ব্যাটিং? সেখানেও পান্ডিয়া ভারতীয় দলের কথা সরাসরি বলেননি, কিন্তু চাইলে ইঙ্গিত খুঁজে নেওয়া যায়, ‘(আইপিএলে) নিলামের পরই জানতাম আমাকে চার নম্বরে ব্যাটিং করতে হবে।’ চার নম্বরে দারুণই করেছেন পান্ডিয়া, টুর্নামেন্টে ১৫ ম্যাচে ৪৮৭ রান তাঁর। ভারতীয় দলেও তো চার নম্বরে ব্যাটিং নিয়ে মাথাব্যথা সেই ২০১৯ বিশ্বকাপের আগ থেকে।
যদিও সব শেষে আবার নিজের অর্জনের চেয়ে গুজরাটের শিরোপা জয়কে এগিয়ে রাখার কথাই বললেন পান্ডিয়া, ‘আমার কাছে দলই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। যদি আমি খুব বাজে মৌসুম কাটানোর পরও দল জিতত, আমি সেটাও মেনে নিতাম। নিজে ১৬০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাটিং করার চেয়ে দলের শিরোপাই আমার প্রথম বিবেচনা।’ তবে না চাইলেও তো তাঁর নিজের ব্যাপারে প্রশ্ন থাকে সংবাদ সম্মেলনে। পান্ডিয়াকে প্রশ্ন হলো, ব্যাটিং না বোলিং, কোনটি বেশি পছন্দ করেন। ভারতীয় অলরাউন্ডারের জবাব, ‘ব্যাটিংই আমার কাছে প্রথম, আমার হৃদয়ের খুব কাছে থাকবে সেটি।’