ক্যারিয়ারে সাকিব আল হাসান আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন ৯৯টি। এর মধ্যে একবারই ওপেনিংয়ে এসেছিলেন তিনি, সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে শারজায়। ওই ম্যাচে তাঁর ইনিংস উদ্বোধনে করতে আসার পেছনে মূলত কারণ ছিল চোট। দৌড়াতে পারবেন না, ফলে পাওয়ার প্লের সুবিধা কাজে লাগিয়ে যতক্ষণ ব্যাটিং করতে পারেন—এমন ভাবনা থেকেই শুরুতে আসেন তিনি।
ওই ম্যাচে সাকিব করেছিলেন ১২ বলে ৯ রান। এরপর চোটের কারণে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যান। ওই বিশ্বকাপের পর আরও দুটি সিরিজ খেলেছেন, তবে স্বাভাবিকভাবেই ইনিংস উদ্বোধন করতে আসেননি। সাকিবের মতো এক ম্যাচে ইনিংস উদ্বোধনের অভিজ্ঞতা মুশফিকুর রহিমেরও। ২০১৯ সালে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে হওয়া ওই ম্যাচে লিটন দাসের সঙ্গে মুশফিক ওপেনিংয়ে এসেছিলেন অবশ্য কৌশলগত কারণেই। আফগান লেগ স্পিনারের সামাল দিতে দুজন ডানহাতি পাঠায় বাংলাদেশ। মুশফিক আউট হন বাঁহাতি পেসার ফরিদ আহমেদের বলে, ৩ বলে ৫ রান করার পর।
সাকিব বা মুশফিকের ওপেনিংয়ের রেকর্ড ঘাঁটার কারণ—সামনের এশিয়া কাপে এ ভূমিকায় দেখা যেতে পারে তাঁদের। সাকিব, মুশফিকের সঙ্গে সম্ভাব্য ওপেনার হিসেবে আজ মেহেদী হাসান ও মেহেদী হাসান মিরাজের কথাও বলেছেন বাংলাদেশ দলের টিম ডিরেক্টর খালেদ মাহমুদ।
এখন পর্যন্ত দুজনই ইনিংস ওপেন করেছেন একবার করেপ্রসঙ্গটা আসছে এশিয়া কাপের জন্য ১৭ জনের দল ঘোষণার পর থেকেই। দলে স্বীকৃত ওপেনার হিসেবে আছেন মাত্র দুজন—এনামুল হক ও পারভেজ হোসেন। সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফরেও দলে ছিলেন এমন পাঁচ ব্যাটসম্যান। দল ঘোষণার পরই জানা গিয়েছিল, এশিয়া কাপের কোনো কোনো ম্যাচে হয়তো ইনিংস শুরু করতে দেখা যাবে স্বীকৃত মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানকেও।
আজ মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে জাতীয় শোক দিবসের আনুষ্ঠানিকতার পর সাংবাদিকদের মাহমুদ সেটিই আরেকটু ব্যাখ্যা করেছেন, ‘(দলে) স্বীকৃত ওপেনার (এনামুল) বিজয় ও (পারভেজ হোসেন) ইমন। তবে অন্য অনেকেই আছে, যারা স্থানীয় ক্রিকেটে ওপেনিং করেছে। মুশফিক হতে পারে, সাকিবও হতে পারে। মিরাজও হতে পারে, মেহেদীও ওপেনার হতে পারে। অনেকগুলো বিকল্প আছে আমাদের হাতে। কম্বিনেশনের জন্য আমরা চিন্তা করছি।’
টি-টোয়েন্টিতে বড় সংগ্রহ গড়তে গেলে টপ অর্ডারে রান পাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তবে এ জায়গাতেও বাংলাদেশ পিছিয়ে বেশ, সাম্প্রতিক সময়ে ওপেনিং জুটি থিতুও হচ্ছে না। সর্বশেষ জিম্বাবুয়ে সফরে যেমন প্রথম দুই ম্যাচে লিটনের সঙ্গে আসেন মুনিম শাহরিয়ার, তবে দুই ম্যাচ মিলিয়ে ১১ রান করার পর বাদ পড়েন তিনি। তৃতীয় ম্যাচে খেলানো হয় পারভেজ হোসেনকে। তার আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের শেষ দুই ম্যাচে লিটনের সঙ্গী ছিলেন এনামুল। মুনিম এশিয়া কাপের দলে নেই, লিটন ছিটকে গেছেন চোটে পড়ে।
অবশ্য মাহমুদ বলছেন, টি-টোয়েন্টিতে কে কোথায় খেললেন, সেটি নিয়ে খুব বেশি ভাবনা নেই তাঁদের, ‘এই ফরম্যাটে আমি ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে চিন্তিত না। নাজমুল হোসেন শান্ত জিম্বাবুয়ের টি-টোয়েন্টি সিরিজে ছিল। ওকে আমরা মিডল অর্ডারে চিন্তা করেছিলাম। ঘরোয়া ক্রিকেটে তিন-চারে খেলে। বিপিএলে কিছু ক্ষেত্রে ওপেন করেছে। কিন্তু ওইভাবে যদি আপনি স্বীকৃত ওপেনারের কথা চিন্তা করেন, তাহলে মুনিম শাহরিয়ার, লিটন দাস, বিজয়—এরা ছিল। হিটার বা মারতে পারে, এমন খেলোয়াড় আমরা বিভিন্ন পজিশনে ঘুরিয়ে–ফিরিয়ে খেলাতে চাই। (তবে) যেহেতু সফল হয়নি, লিটন ছিটকে গেছে, বিজয় টিকে আছে।’
এশিয়া কাপের মতো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের এমন পরিকল্পনা বাজিয়ে দেখা কেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মাহমুদ বলেন, ‘এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ এমন একটা জায়গা, (যেখান) আমাদের হয়তো আরও আগেই পরিকল্পনা করা উচিত ছিল। কিন্তু সেটা আমরা করতে পারিনি, এটি আমাদের ব্যর্থতা। ব্যর্থতাও বলব না, ছেলেরা যারা ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো করেছিল, তাদের আমরা সুযোগ দিয়েছিলাম। তারা কিন্তু নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি। ঘরোয়া ক্রিকেটের সঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের পার্থক্য তো অনেক।’