সুশান্তের ব্যাটিং দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন টেন্ডুলকার

সুশান্তের ব্যাটিং মুগ্ধ করেছিল টেন্ডুলকারকে। ফাইল ছবি
সুশান্তের ব্যাটিং মুগ্ধ করেছিল টেন্ডুলকারকে। ফাইল ছবি

কাজটা সহজ ছিল না। মহেন্দ্র সিং ধোনি এখনো ক্রিকেট বিশ্বের মহা তারকাদের একজন। তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ার ও ব্যক্তিগত জীবন ছিল সবার জানা। এতো পরিচিত চরিত্রকে আবার বড় পর্দায় ফুটিয়ে তোলা চাট্টিখানি কথা না। আজ মাত্র ৩৪ বছর বয়সে পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়া ভারতীয় অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত কঠিন কাজটাই করেছেন অবিশ্বাস্য দক্ষতায়। ধোনির জীবন নিয়ে 'এমএস ধোনি – দি আনটোল্ড স্টোরি' চলচ্চিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করে অনেকের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছিলেন সুশান্ত।

কিন্তু রঙ্গিন পর্দার ধোনির জীবন ফুটিয়ে তুলতে অক্লান্ত পরিশ্রম করতে হয়েছিল সুশান্তকে। প্রায় দুই বছর নিজেকে প্রস্তুত করেছেন। ভারতের সাবেক উইকেটরক্ষক কিরন মোরে ছিলেন সুশান্তের প্রস্তুতি পর্বের সঙ্গী। প্রায় এক বছর কিরন মোরের সঙ্গে উইকেটকিপিংয়ের অনুশীলন করেছেন। আর ধোনির ব্যাটিংয়ের ধরন, শরীরীভাষা রপ্ত করা তো আছেই।

ছবির প্রস্তুতির সময়টায় কিরনের সঙ্গে সুশান্তের বন্ধুত্ব হয়। স্বাভাবিকভাবেই মাত্র ৩৪ বছর বয়সে সুশান্তের পৃথিবী ছেড়ে চলে যাওয়া বিশ্বাস করতে পারছেন না সাবেক এই ভারতীয় ক্রিকেটার, 'অবাক হওয়াই স্বাভাবিক। ওর চলে যাওয়া অনেক বড় ক্ষতি। আমরা ৯ মাস কাজ করেছিলাম এক সঙ্গে। ভালো বন্ধু বনে গিয়েছিলাম। তাঁকে একজন অভিনেতা থেকে ক্রিকেটারে পরিনত হতে হতো। আমার জন্য কঠিন চ্যালেঞ্জ ছিল, তাঁকে ধোনির মতো ব্যাটিং, উইকেটকিপিং করতে শেখাতে হতো।'

সে চেষ্টা যে কাজে লেগেছিল সেটা পর্দাতেই টের পেয়েছেন সবাই। কিন্তু এই চলচ্চিত্রের জন্য এতটাই খেটেছিলেন সুশান্ত যে তাঁর খেলা দেখে স্বয়ং শচীন টেন্ডুলকারের মনে হয়েছিল পেশাদার ক্রিকেটেও ভালো করতেন এই অভিনেতা। কিরনই জানালেন সেটা, 'আমার এখনো মনে আছে টেন্ডুলকার সুশান্তের ব্যাটিং দেখে স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। ততদিনে কয়েক সপ্তাহ অনুশীলন হয়েছে। ধোনির হেলিকপ্টার শট অনুশীলন করছিল সুশান্ত। এ সময় বান্দ্রার বিকেসির ওই অনুশীলন মাঠে আসে। গ্যালারিতে বসে কিছুক্ষণ খেলা দেখে টেন্ডুলকার। পরে যখন আমার সঙ্গে দেখা হলো, জিজ্ঞেস করল, "এই ছেলেটা কে? খুব ভালো ব্যাট করছে।" আমি বললাম এটা হলো অভিনেতা সুশান্ত, ধোনিকে নিয়ে বানানো চলচ্চিত্রে অভিনয় করছে। টেন্ডুলকার অবাক হয়ে গেল, "সে চাইলে পেশাদার ক্রিকেট খেলতে পারবে। ওকে দেখে এত ভালো মনে হচ্ছে।"'

শিষ্যের এমন উন্নতির কৃতিত্ব চাইলেই কোচ নিতে পয়ারতেন। কিন্তু সব কৃতিত্ব সুশান্তকেই দিতে চান কিরন, 'ওই ছবিটার জন্য সে কঠোর পরিশ্রম করেছে। ৩-৪ ঘণ্টা করে প্রতিদিন অনুশীলন করত। কোনো কিছুতেই না বলত না। সব ধরনের মন্তব্যর জন্য সে প্রস্তুত ছিল। যা বলতাম তাই করত। কখনো কখনো বকাও দিয়েছিলাম কিন্তু সে একবারও বাজে আচরণ করেনি। ছাত্র হিসেবে সে ছিল দুর্দান্ত, অভিনেতা হিসেবে তারচেয়েও বেশি কিছু। সে খুব চেয়েছিল বিশেষ কিছু করতে এবং সফল হয়েছে।'