কালো বলেই এভাবে পুলিশের হাতে মরতে হলো
হতে পারেন তিনি বাস্কেটবলের সাবেক তারকা। কিন্তু তাঁর গায়ের বর্ণ যে কালো ! এ কারণেই পুলিশের অত্যাচারে প্রাণ হারাতে হয়েছে এনবিএর সাবেক তারকা জর্জ ফ্লয়েডকে—এমনটাই মনে করছেন যুক্তরাষ্ট্রের মিনেসোটার আফ্রো-আমেরিকানরা। শুধু কি মিনেসোটার কালো সমাজ, এমন ধারনা বাস্কেটবলের সাবেক আর বর্তমান তারকাদের অনেকেরই।
মিনেসোটার মিনিয়াপলিসের স্থানীয় একটি টেলিভিশন কেএমএসপি গতকাল একটি ভিডিও প্রকাশ করে। তাতে দেখা যায়, একজন পুলিশ অফিসার জোর করে ফ্লয়েডকে তাঁর গাড়ি থেকে টেনে-হিচড়ে বের করছেন। অন্য একজন অফিসার এরপর ফ্লয়েডের ঘাড়ের ওপর তাঁর হাঁটু দিয়ে চেপে ধরেছেন। ভিডিওতে ফ্লয়েডকে বারবার বলতে শোনা যায়, 'দয়া করে আমাকে ছাড়ুন, আমি শ্বাস নিতে পারছি না।'
একটু পর ঘটনাস্থলে একটি অ্যাম্বুলেন্স আসে এবং অচেতন ফ্লয়েডকে নিয়ে চলে যায়। পরে জানা যায়, সাবেক এই বাস্কেটবল তারকা মারা গেছেন। পুলিশ এক বিবৃতি বলেছে, '৪০ বছর বয়সী জর্জ ফ্লয়েডের বিরুদ্ধে জালিয়াতির তদন্ত চলছে। তারই অংশ হিসেবে পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করতে যায়। কিন্তু গাড়িতে থাকা ফ্লয়েড পুলিশের কাজে বাধা দিয়েছিল।'
ভিডিওতে অবশ্য দেখা যায়, পুরো ঘটনার সময় ফ্লয়েড খুব শান্ত ছিলেন। মিনিয়াপলিসের আফ্রো-আমেরিকানরা এই ঘটনার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে আসেন। বাস্কেটবল তারকারা তো আর তা করবেন না। প্রতিবাদ জানিয়েছেন টুইটারে। বাস্কেটবলে ফ্লয়েডের খুব ভালো বন্ধু ছিলেন সাবেক তারকা ৪৬ বছর বয়সী স্টিভেন জ্যাকসন।
দুজনের চেহারা ছিল প্রায় একই রকম। এই কারণে জ্যাকসন সহখেলোয়াড় ফ্লয়েডকে ডাকতেন 'ভাই' বলে। সেটা পরে বদলে করে নিয়েছেন 'আমার যমজ ভাই'। এনবিএতে পরে ফ্লয়েড 'টুইন' বলেই পরিচিতি পান। যমজের মৃত্যুতে শোকাহত জ্যাকসন টুইট করেছেন, 'ওপরে যদি কেউ থেকে থাকেন তিনি জানেন তুমি আমার ভাই...এই ঘটনা আমাকে ক্রুদ্ধ করেছে। শান্তিতে থেকো, যমজ!'
এনবিএর বর্তমান তারকা লেব্রোন জেমসও প্রতিবাদ করেছেন টুইটারে। তাঁর প্রতিবাদের ধরনটা একটু অন্য রকম। দুটি ছবি দিয়েছেন এই তারকা বাস্কেটবল তারকা। একটি ছবিতে একজন পুলিশ অফিসারের এক হাঁটু ফ্লয়েডের ঘাড়ে, অন্য ছবিতে সাবেক বাস্কেটবল তারকা কলিন কায়েপেরনিকের হাঁটু মাটিতে। কায়েপেরনিক প্রতিবাদ করতে গিয়ে মাটিতে হাঁটু গেড়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সঙ্গীত শুনতেন। ছবি দুটি দিয়ে লেব্রোন জেমস লিখেছেন, 'এই...কারণে! এবার আপনারা বুঝতে পেরেছেন?'
ফ্লয়েডের হত্যার জন্য দায়ী ওই পুলিশ অফিসারকে এরই মধ্যে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর মিনিয়াপলিসের মেয়র জ্যাক ফ্রেই বলেছেন, 'যুক্তরাষ্ট্রে কালো হলেই তাদের এমন মৃত্যু হতে পারে না।'