ভারতে পাতানো হয়েছিল সেই টেস্ট ও ওয়ানডে
২০০০ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা দলের ভারত সফর নিয়ে কেলেঙ্কারি কম হয়নি। এ সফরে ম্যাচ পাতানোর অভিযোগ ওঠে প্রয়াত সাবেক প্রোটিয়া অধিনায়ক হ্যানসি ক্রনিয়ের বিরুদ্ধে। জুয়াড়ি সঞ্জীব চাওলা গ্রেপ্তার হওয়ার পর তাঁকে শাস্তি দিতে চেয়েছিল ভারত।
তবে হাই কোর্টের নির্দেশ না থাকায় তিহার জেল থেকে ছাড়া পান চাওলা। গত ১৩ মে এ নিয়ে সুপ্রীম কোর্টে আপিল করেছিল, জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম 'ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস'। এবার জানা গেল ২০০০ সালের সেই সফর নিয়ে নতুন অভিযোগপত্র দাখিল করেছে দিল্লি পুলিশ।
জুয়াড়ি সঞ্জীব চাওলার ভূমিকা এবং কোন কোন ম্যাচ পাতানো হয়েছিল তার বিবরণ রয়েছে অভিযোগপত্রে, 'তদন্তে সাক্ষীদের জবানবন্দী, রেকর্ড করা কথা, অডিও ও ভিডিও ক্যাসেট এবং অন্যান্য নথিপত্রের ভিত্তিতে এ কথা নিরাপদেই বলা যায় যে কিছু ম্যাচ পাতানো হয়েছিল এবং কিছু পাতানোর চেষ্টা করা হয়েছিল।'
২০০০ সালে ভারত সফরে গিয়ে দুই ম্যাচের টেস্ট ও পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলে দক্ষিণ আফ্রিকা। সফরকারি দল টেস্ট সিরিজ ২-০ ব্যবধানে জিতলেও ওয়ানডে সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে হারে স্বাগতিকদের কাছে। অভিযোগপত্রে বলা হয়, 'মুম্বাইয়ে প্রথম টেস্ট এবং কোচিতে প্রথম ওয়ানডে পাতানো হয়েছিল। এর ফল অভিযুক্তের স্বার্থের পক্ষে গেছে এবং সাধারণ মানুষের বিপক্ষে। তারা বিশ্বাস করেছে, ওরা নিজেদের সেরাটা দিয়েই খেলেছে।'
অভিযোগপত্রে সাক্ষীর সংখ্যা ৬৮জন। এর মধ্যে বড় নাম ছিলেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) তখনকার সচিব জয়ন্ত লেলে। ২০১৩ সালে তিনি মারা যান।
মুম্বাইয়ে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৪ উইকেটে জেতে দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রথম ইনিংসে ২২৫রান তুলেছিল ভারত। নিজেদের প্রথম ইনিংসে ১৭৬রানে অলআউট হয় প্রোটিয়ারা। ভারত তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ১১৩ রানে অলআউট হওয়ায় ম্যাচ তিন দিনেই জিতে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
এই ম্যাচ নিয়ে অভিযোগপত্রে বলা হয়, 'এক ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকা ২৫০ রানের বেশি করবে না, এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচটা তিন দিনে জিতেছিল এবং তাতে ভারতের বাজে ব্যাটিংয়েরও প্রভাব ছিল। কিন্তু জুয়াড়িদের কাছে দেওয়া কথামতো অভিযুক্ত ক্রনিয়ের দল কোনো ইনিংসেই ২৫০ রান করেনি।'
কোচিতে ওয়ানডে পাতানো নিয়ে অভিযোগপত্রে ক্রনিয়ের উদ্ধৃতি উল্লেখ করা হয়, 'না, ওরা বলছিল কোচিতে এর মধ্যেই হয়ে গেছে। বাকিরা অবশ্য আমার ওপর রেগে আছে কারণ এখনো টাকা পায়নি।' সে ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকা তিন শ-র বেশি রান তোলার পর ৩ উইকেটে হেরেছিল ভারতের কাছে।
ক্রনিয়ে ম্যাচ পাতানোর শাস্তিও পেয়ে গেছেন। নিজের জীবন দিয়েই পরে প্রায়শ্চিত্ত করে গেছেন জনপ্রিয়তার শীর্ষ থেকে ঘৃণার বালুচরে হারিয়ে যাওয়া এই ক্রিকেটার। ২০০২ সালের ১ জুন রহস্যময় বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় ক্রনিয়ের।