কোকেন কিনতে ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের পদক বিক্রি
মাদকাসক্তি মানুষকে কোথায় নামাতে পারে তা মোটামুটি সবারই জানা। ফ্লাভিও দোনিজেতেও জানালেন তিনি কোথায় নেমেছিলেন। ১৩ বছর নরকবাসের অভিজ্ঞতা হয়েছে তাঁর।
দোনিজেতে নামটা অচেনা লাগাই স্বাভাবিক। এখন পর্তুগিজায় খেলা ৩৬ বছর বয়সী এ ডিফেন্ডার ব্রাজিলের বাইরে কখনো খেলেননি। তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা সময় ২০০৫ ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ। সেবার লিভারপুলকে ১-০ গোলে হারিয়ে এ টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতে নেয় দোনিজেতের ক্লাব সাও পাওলো।
সেবার লাতিন আমেরিকার সেরা ক্লাব টুর্নামেন্ট কোপা লিবার্তোদোরেসও জিতে নেয় সাও পাওলো। দোনিজেতে সে টুর্নামেন্ট ভালোই ভূমিকা রাখেন। কিন্তু ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের মাহাত্ম্যও অন্যরকম। অনেক বড় তারকার শোকেসে এ পদক নেই।
ক্লাব বিশ্বকাপে সতীর্থ লিয়ান্দ্রো বোনফিম চোট পেলে যা একটু খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন দোনিজেতে। সে যাই হোক, ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের এই পদক ধরে রাখতে পারেননি তিনি। নেশার টাকা জোগার করতে বেচে দিয়েছিলেন!
কোকেনের প্রতি আসক্তি আছে দোনিজেতের। এ নিয়ে 'গ্লোবো স্পোর্তে'কে তিনি বলেন, 'মাদক কিনতে ওটা বেচে দিয়েছি। প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ডলারে (৭ হাজার রিয়েল) বেচেছি। টাকাটার সিংহভাগ খরচ হয়েছে কোকেন কিনতে। প্রথম দফায় ১ হাজার রিয়েলের কোকেন নেই। দুই দিনে শেষ হয়ে যায়। টাকা যত পেয়েছি মাদকের প্রতি আসক্তিও তত বেড়েছে।'
দোনিজেতে তাঁর অর্জনের মোটামুটি সবকিছুই হারিয়েছেন এই মাদকের জন্য। তবে পরিবার এখনো তাঁর পাশে আছে, 'মাদকের সংস্পর্শে আসার পর সবকিছু হারাতে থাকি। শুরুতে অল্প নিয়েছি। কিন্তু কোকেন আস্তে আস্তে আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। টাকা পেলেই তা দিয়ে মাদক কিনেছি। এভাবে সব হারিয়ে ফেললেও আমার স্ত্রী ও সন্তানেরা পাশে আছে। তারা আমাকে ছেড়ে যায়নি।'
২০০৯ সাল পর্যন্ত সাও পাওলোর সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ থাকলেও এর মধ্যে নানা জায়গায় ধারে খেলেছেন দোনিজেতে। এরপর তিনি কিছুদিনের বিশ্রাম নিতে চেয়েছিলেন পেশাদার ফুটবল থেকে। মাদকাসক্তির জালে জড়িয়ে সেই বিরতি ছয় বছরে গিয়ে ঠেকে। এভাবে সম্ভাবনাময় একটি ক্যারিয়ারের অপমৃত্যু ঘটলেও খেলা ছাড়েননি দোনিজেতে। পুর্তুগিজার সঙ্গে চুক্তি আছে তাঁর।
তবে সেই দিনগুলো এখনো ভোলেননি দোনিজেতে,'তখন এমন ছিল যে বন্ধুদের বলতাম, আজ অনেক বেশি পান করতে পারব কারণ কোকেন নিয়েছি। এমন্ও সময় কেটেছে যে কোকেন নেওয়া একদিনও বাদ ছিল না।'