এবার আড়াই দিনেই হেরে গেলেন কোহলিরা

হতাশাই সঙ্গী হয়েছে কোহলিদের। ছবি : এএফপি
হতাশাই সঙ্গী হয়েছে কোহলিদের। ছবি : এএফপি
>

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে আরেকটি টেস্ট, ভারতের হতাশা-কাব্যে আরেকটি অধ্যায়ের সংযোজন। প্রথম টেস্টে ভারতকে হারাতে তাও চার দিন লেগেছিল কিউইদের। এ টেস্টে কোহলিরা ঘুরে দাঁড়াবেন কি, আরও বিব্রতকর ভাবে পরাজয় বরণ করে নিতে হলো তাদের। আড়াই দিনেই শেষ হয়ে গেল ক্রাইস্টচার্চ টেস্ট। সাত উইকেটে জিতল নিউজিল্যান্ড

ভারতের বর্তমান পেস-ব্যাটারি বিশ্বখ্যাত। যশপ্রীত বুমরা, উমেশ যাদব, মোহাম্মদ শামি ও ইশান্ত শর্মা—নিজেদের দিনে যেকোনো ব্যাটিং লাইনআপকে ধসিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য আছে তাঁদের। স্বাভাবিকভাবে নিউজিল্যান্ড সিরিজের আগেও বুমরাদের আলোচনায় মুখর ছিল সবাই। নিজেদের কন্ডিশনে নিউজিল্যান্ড বুমরাদের কীভাবে সামলাবে, দেখার অপেক্ষায় ছিল সবাই। কিন্তু কীসের কী! বুমরা-শামিদের দর্শকের ভূমিকায় সরিয়ে দিয়ে পাদপ্রদীপের আলো সম্পূর্ণ নিজেদের দিকে করে নিলেন নিউজিল্যান্ডের পেসাররা। প্রথম টেস্টের মতো দ্বিতীয় টেস্টেও কিউই পেসারদের দাপটেই বশ মেনেছে বিরাট কোহলির দল।

প্রথম ইনিংসে কাইল জেমিসনের দাপটে ২৪২ রানেই অলআউট হয়ে যায় ভারত। দুটি করে উইকেট নিয়ে পার্শ্বনায়কের ভূমিকায় ছিলেন টিম সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্ট। তবে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার পর জেমিসন-ওয়াগনারদের নিয়ে গড়া টেল এন্ডাররাই নিজেদের প্রথম ইনিংসে নিউজিল্যান্ডকে ২৩৫ পর্যন্ত যেতে সাহায্য করে। ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে জেমিসনকে হটিয়ে নায়কের ভূমিকায় চলে আসেন সাউদি-বোল্ট। আর তাতেই পুড়ে খাক হয়ে যায় বিশ্বের অন্যতম ভীতিজাগানিয়া ব্যাটিং লাইনআপ। ১২৪ রানেই থেমে যায় ভারত।

দ্বিতীয় দিন শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ৯০ রান করা ভারতের টেস্ট জিততে হলে ঘটাতে হতো অলৌকিক কিছু। হনুমা বিহারি, ঋষভ পন্ত কিংবা রবীন্দ্র জাদেজারা সেই অলৌকিক কিছু করে দেখাতে পারেননি ব্যাট হাতে। উল্টো আগের দিনের মতো এই দিনেও খুনে মেজাজে ছিলেন সাউদি-বোল্টরা। ৯৭ রান উঠতে না উঠতেই হনুমা বিহারিকে (১৮ বলে ৯) হারায় ভারত। উইকেটরক্ষক বিজে ওয়াটলিংয়ের হাতে বিহারিকে ক্যাচ বানান সাউদি। পরের ওভারেই বিহারির পথ ধরেন পন্ত (১৪ বলে ৪)। আউটও হয়েছেন বিহারির মতো উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে। এবার শিকারির ভূমিকায় বোল্ট।

২২ বলে ১৬ রানের ইনিংসটা খেলে রবীন্দ্র জাদেজা কিউইদের আবারও ব্যাট করতে নামার অপেক্ষাটাকে দীর্ঘায়িতই করেছেন শুধু। জাদেজা টিকে গেলেও ওদিকে মোহাম্মদ শামি আর যশপ্রীত বুমরা টকে থাকতে পারেননি। ভারতকে থেমে যেতে হয়েছে ১২৪ রানে। অর্থাৎ জেতার জন্য নিউজিল্যান্ডের দরকার ১৩২ রান।

ছোট লক্ষ্য পেয়ে হেসেখেলেই অতিক্রম করেছে নিউজিল্যান্ড। দুই ওপেনার টম ব্লান্ডেল আর টম লাথাম দুটি ফিফটি করে সহজ কাজটাকে আরও সহজ বানিয়ে দিয়েছেন। যদিও দুজনের কেউই ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি। উমেশ যাদবের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেওয়ার আগে লাথাম করেছেন ৭৪ বলে ৫২, যে ইনিংসে বাউন্ডারির সংখ্যা ছিল দশ। অধিনায়ক কেইন উইলিয়ামসনও ম্যাচ শেষ করে আসতে পারেননি। বুমরার বলে অজিঙ্কা রাহানের হাতে ক্যাচ দেওয়ার আগে তিনি করেছেন ৮ বলে ৫ রান। বুমরা পরে বোল্ড করে ফিরিয়েছেন ব্লান্ডেলকেও (১১৩ বলে ৫৫, আটটি চার ও একটি ছক্কা)।

শেষে বল করতে এসেছিলেন খোদ বিরাট কোহলি। লাভ হয়নি। সাত উইকেটের অনায়াস জয় নিয়ে টেস্ট সিরিজে ভারতের হোয়াইটওয়াশ নিশ্চিত করেই মাঠ ছেড়েছে নিউজিল্যান্ড।