পাকিস্তানে কিসের ভিত্তিতে দল নির্বাচন করা হয়, প্রশ্ন আকমলের
>পাকিস্তানের জাতীয় দল নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেন কামরান আকমল। বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দলে সুযোগ না পেয়ে ক্ষোভ ঝাড়লেন পাকিস্তানের এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান
বাংলাদেশের বিপক্ষে তিন ম্যাচ টি-টোয়েন্টি সিরিজে তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেলে দল গড়েছে পাকিস্তান। এর মধ্যেও বাদ পড়েছে কিছু পরিচিত। প্রতিক্রিয়ায় ক্ষোভ জানিয়ে অনেকে মুখ খুলতে শুরু করেছেন। কামরান আকমল এর আগে দলে জায়গা না পাওয়ার কষ্ট প্রকাশ করলেও এবার দল নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করলেন। দেশের হয়ে ২০১৭ সালে শেষ টি-টোয়েন্টি খেলা আকমল স্রেফ ধুয়ে দিয়েছেন মিসবাহ-উল-হকের দল নির্বাচন প্রক্রিয়াকে। সমালোচনা করেছেন সাবেক কোচ মিকি আর্থারেরও।
পাকিস্তানের একটি ‘টক শো’ অনুষ্ঠানে ৩৮ বছর বয়সী এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান বলেন, ‘এক নতুন ব্যবস্থা চালু করে দাবি করলেন ক্রিকেটে এতে উপকৃত হবে। দাবি করলেন সেরা প্রতিভারা বেরিয়ে আসবে।পারফর্ম করলে এমনিতেই দলে সুযোগ পাবে। দলে সুযোগ পেতে আমাদের কি তাহলে ভারতীয় কিংবা অস্ট্রেলিয়ান সিস্টেমে পারফর্ম করতে হবে? গত পাঁচ বছর ধরে আমরা পারফর্ম করছি ও ভুগছি। আমাদের পারফরম্যান্স তাহলে কাকে দেখাব? প্রধানমন্ত্রীকে? তিন সংস্করণে আমার পারফরম্যান্স দেখাব কাকে?’
গত কিছুদিন ঘরোয়া ক্রিকেটে ভালো সময় কাটানোয় কামরান আকমল দলে ফেরার আশা করছিলেন। কিন্তু কামরানকে এড়িয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানে আস্থা রেখেছেন পিসিবির প্রধান নির্বাচক ও প্রধান কোচ মিসবাহ। তবে আকমলের টি-টোয়েন্টি দলে ফেরার আশা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি লিগে ৪ ম্যাচে ৩০ রান করেছেন তিনি। আকমল দাবি করেন, জাতীয় দলে খেলার অযোগ্য এমন সব ক্রিকেটারকে জোর করেই রাখা হয়েছে, ‘আমার মতো অনেক ক্রিকেটার আছে যারা জাতীয় দলে খেলার যোগ্য। আমি নিজে কি পারফরম্যান্স ছাড়াই কথা বলছি? পিএসএল ও ঘরোয়া মিলিয়ে তিন সংস্করণেই পারফর্ম করেছি। আমি একজন উঁচু মানের পারফরমার। মিসবাহর এগুলো দেখা উচিত ছিল। মিসবাহ নিজেই অনেক কষ্ট করেছে এবং শেষ পর্যন্ত নিজের প্রাপ্য পেয়েছে। আমি মনে করি নিজের প্রাপ্যটা আমারও পাওয়া উচিত।’
আকমল মনে করেন, জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া কিছু ক্রিকেটারের চেয়ে তিনি যোগ্য, ‘ফিটনেস ও তারুণ্যে নজর দিয়ে আমরা দলকে ৮ নম্বরে (টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ে সপ্তম, ওয়ানডে ষষ্ঠ, টি-টোয়েন্টিতে শীর্ষে) নামিয়েছি। আমরা এখন আর পারফরম্যান্স ও দক্ষতা দেখি না। ঘরোয়া ক্রিকেটে বিবেচনায় নেওয়া হয় না। পিএসএলে এক-দুই ইনিংস দেখে দলে নেওয়া হয়। এমনকি আহসান আলী প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ডিভিশন ওয়ান না খেলেই সুযোগ পেয়ে গেল। তাহলে কীসের ভিত্তিতে দল নির্বাচন করা হয়?’
ক্রিকেটারদের ফিটনেসের চেয়ে দক্ষতায় বেশি নজর দেওয়া উচিত বলে মনে করেন আকমল, ‘ভারতে রঞ্জির পর আইপিএলকে গুরুত্ব দেওয়া হয়। সেখানে দক্ষতার পর ফিটনেস দেখা হয়। দক্ষতাই ফিটনেস নিয়ে আসে। এত বছর ধরে খেলছি কখনো ফিটনেসের ঘাটতি ছিল না। মৌসুমের বাইরে ক্লাব ক্রিকেট খেলি। (জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া) ওরা তো ক্লাব ক্রিকেটও খেলে না। তাহলে ফিট হয় কীভাবে?’
ইনজামাম-উল-হক, শোয়েব আখতার, মোহাম্মদ ইউসুফদের খেলাকালীন সময়ে ফিটনেসকে প্রাধান্য দেওয়া হলে তারা জাতীয় দলে সুযোগ পেতেন না বলেও মনে করেন আকমল, ‘ইউনুস ভাই এবং মিসবাহ ভাই কতগুলো ফিটনেস পরীক্ষা দিয়েছে? মিকি আর্থার এসে ফিটনেস নিয়ে সমস্যা শুরু করেন। উদাহরণগুলো সবার সামনেই আছে। ইনজি ভাই, ইউসুফ ভাই, শোয়েব আখতার সুযোগ পেতেন না যদি (ফিটনেস) দেখা হতো। ইনজি ভাই অসাধারণ স্লিপ ফিল্ডার। শোয়েব ভাই শুধু বল করতেন। তিনি প্রচুর ম্যাচ জিতিয়েছেন।’