বয়স চুরি: এক চোখে 'তেল' আরেক চোখে 'নুন' বেচছে ভারত?

মনজোৎ কালরা, শিভম মাভি ও নিতীশ রানা। ছবি: টুইটার
মনজোৎ কালরা, শিভম মাভি ও নিতীশ রানা। ছবি: টুইটার

তরুণ ক্রিকেটারদের বয়স চুরির বিপক্ষে লড়াইয়ে ভারতের রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাগুলোর মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই! দেশটির সংবাদমাধ্যম ‘টাইমস অব ইন্ডিয়া’য় এ নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনের ভাষ্য, বয়স চুরির বিপক্ষে লড়াইয়ে একেক ক্রিকেটারের জন্য একেকরকম বিধান দিচ্ছে রাজ্য ক্রিকেট সংস্থাগুলো। সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারছে না বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআইও।

সংবাদমাধ্যমটি এ নিয়ে তিন ক্রিকেটারের উদাহরণ দিয়েছে। ভারতের হয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী মনজোৎ কালরা (২০ বছর), শিভম মাভি (২১ বছর) এবং নিতীশ রানার (২৬ বছর) বিপক্ষে বয়স চুরির অভিযোগ আনা হয়েছে। কালরাকে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে তাঁর রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা দিল্লি (ডিডিসিএ)। মাভির বিষয়টি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) হাতে তুলে দিয়েছে তাঁর রাজ্য ক্রিকেট সংস্থা উত্তর প্রদেশ (ইউপিসিএ)। আর রানাকে নিজের আসল বয়স নিয়ে সঠিক কাগজপত্র দাখিলের জন্য আরও কিছুদিন সময় বেঁধে দিয়েছে দিল্লি অ্যান্ড ডিস্ট্রিক্ট ক্রিকেট এসোসিয়েশন (ডিডিসিএ)।

বয়স চুরির এ তিনটি বিষয়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক সূত্র সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, ‘তিনজন আলাদা ক্রিকেটারের সঙ্গে এ নিয়ে আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে বিষয় একই। এর মধ্য দিয়ে কি বোঝা গেল? বয়স চুরি নিয়ে বিসিসিআইয়ের অবিচল বা অভিন্ন কোনো নীতি নেই। এটা পরিষ্কার।’

>

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে ভাষ্য, বয়স চুরির কারণে একেক ক্রিকেটার পাচ্ছে একেকরকম শাস্তি

জম্মু ও কাশ্মীরের ক্রিকেটার রাশিক সালামকে মনে আছে? গত বছর ‘সর্বকনিষ্ঠ’ ক্রিকেটার হিসেবে আইপিএলে অভিষিক্ত হয়েছিলেন ১৮ বছর বয়সী এ বোলার। গত বছরের জুনে তাঁকে দুই বছর নিষিদ্ধ করে বিসিসিআই। সালামের বিপক্ষে অভিযোগ তাঁর ‘জন্ম সনদ গোঁজামিল দেওয়া’। এ কারণে গত বছর ইংল্যান্ডে অনূর্ধ্ব-১৯ ত্রিদেশীয় সিরিজের আগে ভারতের যুব দল থেকে বাদও পড়েন সালাম।

ঘনিষ্ঠ সেই সূত্র তাই প্রশ্ন করেন, ‘রাহুল দ্রাবিড় বয়স চুরি নিয়ে কথা বলেছেন। বিসিসিআই রাহুলের সঙ্গে কথা বলেছে। এ ব্যাপারে অভিন্ন কোনো ব্যবস্থা নেই কেন? সে (রাশিক সালাম) গোঁজামিল দেওয়া জন্মসনদের জন্য দুই বছর নিষিদ্ধ হয়, তাহলে কালরার জন্য আলাদা নিয়ম কেন? কারণ সে ভারতের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য? মাভিকে এ নিয়ে যেখানে বিসিসিআই পর্যন্ত যেতে হলো কালরা তাহলে ডিডিসিএ-তে কেন? রানাকে বেশি সময় দেওয়া হলেও কালরা ও মাভিকে কেন দেওয়া হলো না? কোনো কিছুই যুক্তিসংগত না।’

বিসিসিআইয়ের সভাপতি হিসেবে গত অক্টোবরে দায়িত্ব নেন সৌরভ গাঙ্গুলি। বয়স চুরির বিপক্ষে লড়াইয়ে তিনি এখনো হয়তো সবকিছু গুছিয়ে উঠতে পারেনি, আরেকটু সময় লাগবে—এমন যুক্তির পর সেই সূত্রের পাল্টা যুক্তি, ‘কিন্তু তার মানে এই নয় যে, এসব ঘরোয়া বিষয় যারা সামলাচ্ছেন সেসব ব্যাপার তাদের (বিসিসিআই সভাপতি এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা) সামনে তোলা যাবে না। সালামের দুই বছর নিষেধাজ্ঞা হয় ভুল কিংবা কালরার এক বছর নিষেধাজ্ঞা, তা না হলে মাভির বিসিসিআই পর্যন্ত যাওয়া কিংবা রানাকে বেশি সময় দেওয়া ভুল। যেকোনো একটা বেছে নিন।’