ফারাজ গোল্ডকাপের শিরোপা গণবিশ্ববিদ্যালয় না সাউথইস্টের
>সাবেক ফুটবলারদের সংগঠন সোনালী অতীত ক্লাবের উদ্যোগে চলছে ফারাজ আন্তবিশ্ববিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল প্রতিযোগিতার তৃতীয় আসর। টুর্নামেন্টের ফাইনালে আজ মুখোমুখি হবে গণবিশ্ববিদ্যালয় ও সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়। টুর্নামেন্টের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইউনাইটেড গ্রুপ, সহযোগী পৃষ্ঠপোষক হা-মীম গ্রুপ ও শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক।
গত আসরের ফাইনালটা সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলরক্ষক আবদুর রহমানকে এখনো পোড়ায়। গত বছর ফারইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ফারাজ গোল্ডকাপ ফুটবলের ফাইনালে টাইব্রেকারে হেরেছিল সাউথইস্ট। সেই হতাশা ভুলতে এবার এই টুর্নামেন্টের ট্রফিটা জিততে চান আবদুর রহমান, জিততে চায় তাঁর দল সাউথইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আজ বেলা সাড়ে তিনটার ফাইনালে সাউথইস্টের প্রতিপক্ষ গণবিশ্ববিদ্যালয়।
সাউথইস্টের মতোই প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছে সাভারের গণবিশ্ববিদ্যালয়। তাদের আত্মবিশ্বাসের পালে হাওয়া লাগিয়েছে গ্রুপ পর্বের ফল। যেখানেই এই দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে ১-০ গোলে জিতেছিল গণবিশ্ববিদ্যালয়। টুর্নামেন্টজুড়েই দুর্দান্ত খেলা গণবিশ্ববিদ্যালয় গত এপ্রিলে বঙ্গবন্ধু আন্তবিশ্ববিদ্যালয় ফুটবল ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়ও হয়েছিল চ্যাম্পিয়ন। গণবিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের প্রশিক্ষক হাবিব উদ্দিন ফারাজ গোল্ডকাপের ফাইনালেও তাঁর দলকে নিয়ে দারুণ আশাবাদী, ‘ছেলেরা খুব আত্মবিশ্বাসী। প্রতিটি ম্যাচেই ওরা উন্নতি করেছে। আশা করি, এবার আমরা চ্যাম্পিয়ন হব।’ ওদিকে সাউথইস্টের গোলরক্ষক আবদুর রহমানের মুখেও জয়ের প্রত্যয়, ‘যদিও গণবিশ্ববিদ্যালয় শক্তিশালী দল। তবে আমরাও ম্যাচটি জিততে সর্বস্ব দিয়ে খেলব।’
এই টুর্নামেন্টে খেলে দেশের শীর্ষ স্তরে উঠে আসবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা, এমনটাই চাওয়া ফারাজ গোল্ডকাপের সদস্যসচিব ও সাবেক ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আসলামের, ‘গত দুই বছর এই টুর্নামেন্ট থেকে বেশ কিছু খেলোয়াড় চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে সুযোগ পেয়েছে। আশা করি, এবারও অনেকে খেলতে পারবে। আসলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই টুর্নামেন্টে খেলার জন্য সারা বছর ছেলেরা মুখিয়ে থাকে। গত দুবারের চেয়েও এবার আমরা বেশি সাড়া পেয়েছি।’ টুর্নামেন্ট থেকে বাছাই করা ফুটবলারদের নিয়ে সম্মিলিত ফারাজ একাদশ গড়ার আশা আসলামের, ‘আমরা এরই মধ্যে ৪০ জন ফুটবলার বাছাই করেছি। এদের দীর্ঘমেয়াদি প্রশিক্ষণ দিয়ে ভারতে আন্তর্জাতিক প্রীতি টুর্নামেন্টে খেলানোর জন্য নিয়ে যাব।’
টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষক প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক নিজামউদ্দিন হাসান রশিদের কণ্ঠেও টুর্নামেন্ট নিয়ে মুগ্ধতা, ‘ফারাজ সবার জন্য অনুপ্রেরণা। ফারাজের আত্মত্যাগ বাংলাদেশকে সারা বিশ্বের সামনে অনেক উঁচুতে নিয়ে গেছে। তাঁর নামে টুর্নামেন্ট বলেই আমরা এখানে পৃষ্ঠপোষকতা করেছি। এ ছাড়া ফুটবলের হারানো গৌরবটাও এই টুর্নামেন্টের মাধ্যমে কিছুটা ফিরে পাবে বলে আশা করি। এখানে শিক্ষিত ফুটবলাররা অংশ নিচ্ছে, খেলার মাধ্যমে যেন ওরা আরও উন্নত জীবন পায়, সেটাও আমাদের অন্যতম চাওয়া।’
ট্রফির পাশাপাশি টুর্নামেন্টের চ্যাম্পিয়ন দল পাবে ৩ লাখ টাকা। রানার্সআপ দল পাবে ২ লাখ টাকা। বরাবরের মতো এবারও আয়োজকদের অভিন্ন লক্ষ্য-২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলায় বন্ধুর জন্য জীবন উৎসর্গ করা ফারাজ আইয়াজ হোসেনের আদর্শ সবার মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া। সোনালী অতীত ক্লাবের আয়োজনে এই টুর্নামেন্টের সহযোগী পৃষ্ঠপোষক শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ও হা-মীম গ্রুপ। এ বছর টুর্নামেন্টটি হচ্ছে তৃতীয়বারের মতো, গত ২১ সেপ্টেম্বর থেকে। আটটি গ্রুপে ভাগ হয়ে এই টুর্নামেন্টে খেলছে ২২টি দল।