আফতাব তখন কী করবেন?
>আফতাব আহমেদের কোচিং ক্যারিয়ার শুরু হয়েছে আগেই। কোচ হিসেবে এ বছর তাঁর নতুন এক অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে। এটি নিয়ে তাঁর আনন্দ যেমন আছে, আছে চিন্তাও
বিদেশি লিগ বা টুর্নামেন্টে কোনো দলের প্রধান কোচ হিসেবে বাংলাদেশের কেউ কাজ করেছেন কখনো? দেশের কয়েকজন কোচের সঙ্গে কথা বলে উত্তরটা ‘না’ পাওয়া গেল। এখানে তাহলে একটা রেকর্ডই হতে যাচ্ছে আফতাব আহমেদের। বাংলাদেশের প্রথম কোচ হিসেবে বিদেশি ফ্র্যাঞ্চাইজিভিত্তিক টুর্নামেন্টে একটি দলের কোচ হিসেবে যাত্রা শুরু হচ্ছে তাঁর।
আরব আমিরাতে হতে যাওয়া টি-টেন লিগের বাংলা টাইগার্সের কোচ হিসেবে নতুন এক অধ্যায়ে পা দিতে যাচ্ছেন আফতাব। টি-টেন টুর্নামেন্টের যাত্রা শুরু ২০১৭ সাল থেকে। এই টুর্নামেন্টের তৃতীয় পর্বে এবার প্রথমবারের মতো যোগ হচ্ছেন বাংলাদেশের এক কোচ। আফতাব তাই রোমাঞ্চিত, ‘এটা অনেক বড় চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগও। এমন সুযোগ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার।’
আগামী ১৬ অক্টোবর হবে টুর্নামেন্টের ‘ড্রাফট’। খেলোয়াড়দের নিলাম হওয়ার আগেই অবশ্য দল গোছানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে বাংলা টাইগার্স। কেমন দল গড়তে চান, সেটির কিছু ধারণা দিলেন আফতাব, ‘দলে সাতজন বিদেশি, বাকি ছয়জন দেশি খেলোয়াড় নেওয়া যাবে। আমাদের স্বত্বাধিকারী হচ্ছেন বাংলাদেশের। আমরা চাইব স্কোয়াডে বাংলাদেশিদের প্রাধান্য দিতে। প্রধান কোচ হিসেবে আমি আছি। কোচিং স্টাফে থাকছে বাংলাদেশ দলে খেলা আরেকজন—নাজিম উদ্দীন। নাফিস ইকবাল থাকছে ম্যানেজার হিসেবে।’
খেলোয়াড়ি জীবনে আফতাবের সুনাম ছিল ঝড় তোলায়। ইতিবাচক ক্রিকেটে মুগ্ধ করা এমন কিছু ইনিংস খেলেছেন যেগুলো এখনো ক্রিকেটপ্রেমীদের স্মৃতিতে উজ্জ্বল। আফতাব ‘ঝড়’ তুলতে চান কোচ হিসেবেও। কিন্তু এখানে ভালো করতে হলে আগে দলটা হতে হবে দুর্দান্ত। আফতাবের চিন্তা এখানেই। যেহেতু বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা আলাদা গুরুত্ব পাবে এই স্কোয়াডে, সমস্যাটা হয়েছে এখানেই। আমিরাতে টি-টেন টুর্নামেন্ট হবে ১৪ থেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত। ঠিক এ সময়েই বাংলাদেশ দল ব্যস্ত থাকবে ভারত সফরে। ভারতের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্ট শুরু ১৪ নভেম্বর, দ্বিতীয়টি ২২ নভেম্বর। তার মানে সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মোস্তাফিজুর রহমানদের মতো দেশের তারকা ক্রিকেটারকে পাওয়া হচ্ছে না বাংলা টাইগার্সের।
প্রথমবারের মতো একটা বিদেশি লিগের কোচ হিসেবে সুযোগ পাওয়া যেমন আফতাবের কাছে বিরাট সুযোগ, টুর্নামেন্টের সময়টাই আবার তাঁকে বিপাকে ফেলেছে, ‘জাতীয় দলের খেলোয়াড় পাওয়াই মুশকিল হয়ে পড়েছে। তখন ওদের সিরিজ থাকবে। আমাদের লক্ষ্যই ছিল জাতীয় দলের খেলোয়াড় নেওয়া। দল গড়তে বড় বাজেট রাখছে আমাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি। যারা টেস্ট স্কোয়াডে থাকবে না চেষ্টা থাকবে তাদের নেওয়ার। আমার জন্য কাজটা কিছুটা কঠিন হয়ে গেছে।’
বাংলাদেশ দলের খেলোয়াড়দের না পাওয়ার ব্যাপার তো আছেই। প্রথমবারের মতো জাতীয় লিগে চট্টগ্রাম বিভাগের কোচ হিসেবে কাজ করতে যাচ্ছেন আফতাব। জাতীয় লিগের ষষ্ঠ অর্থাৎ শেষ রাউন্ড শুরু ১৪ নভেম্বর। ফলে শেষ রাউন্ডে তিনি কী করবেন, সেটা নিয়েও ভাবার ব্যাপার আছে। আবার আবহাওয়াজনিত কারণে যদি জাতীয় লিগের একটি রাউন্ডও পিছিয়ে যায় আফতাবকে বেশ বিপাকে পড়তে হবে। যত সংশয়-শঙ্কা থাকুক, তিনি আশাবাদী বাংলা টাইগার্সকে নিয়ে ভালো কিছুই উপহার দেবেন।
এ টুর্নামেন্ট রাঙাতে মরুর দেশে আসার কথা এউইন মরগান, আন্দ্রে রাসেল, শেন ওয়াটসন, শহীদ আফ্রিদির মতো তারকাদের। কোচ হিসেবে আফতাবের মতো এরই মধ্যে নাম লিখিয়েছেন মুশতাক আহমেদ ও স্টিফেন ফ্লেমিং।
ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশ দল টেস্ট নিয়ে ব্যস্ত থাকলেও রাতে হওয়া টি-টেনের ম্যাচগুলো দেখা যাবে অনায়াসে। তখন হয়তো বাংলাদেশের দর্শকদের আফসোস হতে পারে এই ভেবে, টুর্নামেন্টটা এমন সময়ে আয়োজন করা হলো যখন সাকিবদের ব্যস্ততা আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে!