ইউরোপসেরা কে হবেন? জানা যাবে আজ
>লিওনেল মেসি, ভার্জিল ফন ডাইক না ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো—গত এক বছরে ইউরোপের শ্রেষ্ঠ খেলোয়াড় কে ছিলেন, সে প্রশ্নের উত্তর মিলবে আজ। ফ্রান্সের মোনাকোতে আজ রাত ১০টায় ঘোষিত হবে ইউরোপসেরা খেলোয়াড়ের নাম। একই সঙ্গে জানা যাবে, চ্যাম্পিয়নস লিগের নতুন মৌসুমে কোন দল মুখোমুখি হচ্ছে কার।
গত এক বছরে ইউরোপের সেরা খেলোয়াড় কে ছিলেন, সেটা জানা যাবে আজ। ফ্রান্সের মোনাকোতে বাংলাদেশ সময় আজ রাত ১০টায় ইউরোপীয় ফুটবলের সবচেয়ে বড় সংস্থা উয়েফা দেবে মর্যাদাপূর্ণ এই পুরস্কার। ফুটবল বিশ্বে লিওনেল মেসি বা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর আধিপত্য আরেকটু দীর্ঘায়িত হবে, না লিভারপুলের সেন্টারব্যাক ভার্জিল ফন ডাইক নতুন ইউরোপের রাজা হিসেবে অধিষ্ঠিত হবেন, সে প্রশ্নের উত্তর পাওয়ারও দিন আজ।
গত বছরের ৩১ জুলাই থেকে পরবর্তী এক বছরে ইউরোপে খেলা খেলোয়াড়দের পারফরম্যান্স বিবেচনা করে দেওয়া হবে সম্মানজনক এই পুরস্কার। চ্যাম্পিয়নস লিগ ও ইউরোপা লিগের মোট ৮০ জন কোচ ও ৫৫ জন সাংবাদিক ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন উয়েফাসেরাদের। তাঁরা যাঁকে প্রথম ভেবেছেন, তিনি পাচ্ছেন পাচ্ছেন ৫ পয়েন্ট, দ্বিতীয়জন ৩ ও শেষজন পাচ্ছেন ১ পয়েন্ট। এভাবে যাঁর পয়েন্ট বেশি হবে, তিনিই হবেন ইউরোপের সেরা।
ইউরোপের বর্ষসেরা ফুটবলারের পুরস্কার দেওয়ার পাশাপাশি উয়েফা ঘোষণা করবে গত মৌসুমের সেরা ডিফেন্ডার, গোলরক্ষক, মিডফিল্ডার ও স্ট্রাইকারের নাম। মেয়েদের ফুটবলে সেরা খেলোয়াড়ের নামও ঘোষণা করা হবে এই অনুষ্ঠানে।
অনেকের মতেই ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মৌসুম কাটিয়েছেন মেসি। তাঁর খেলা দেখে সেই ১০ বছর আগের মেসির কথা মনে পড়েছে বারবার। গোটা মৌসুমে ৫১ ম্যাচ খেলে ৫০ গোল করেছেন, অনেক ম্যাচে বার্সেলোনাকে একাই বিপদের হাত থেকে উদ্ধার করেছেন। লা লিগা ও ইউরোপের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কারও বগলদাবা করেছেন। ব্যক্তিগত দিক দিয়ে মৌসুমটা উজ্জ্বল কাটলেও দলগত দিক দিয়ে তেমন সফলতা পাননি এ আর্জেন্টাইন তারকা। সেটি ক্লাবের ক্ষেত্রে হোক বা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। মৌসুমের শুরুতে সুপার কাপ জেতা বার্সেলোনা পরে ‘ট্রেবল’ জয়ের স্বপ্নে বিভোর থাকলেও সন্তুষ্ট থেকেছে ‘সিঙ্গেল’ নিয়েই। মেসির অতিমানবীয় পারফরম্যান্সের সুফল শুধু লিগেই নিতে পেরেছে বার্সা, চ্যাম্পিয়নস লিগ আর কোপা দেল রে আর জেতা হয়নি। আর্জেন্টিনাও কোপা আমেরিকার সেমিফাইনাল থেকে বাদ পড়েছে এ বছর। জাতীয় দলের হয়ে ট্রফি খরা এবারও ঘোচাতে পারেননি মেসি। এত কিছুর পরও মেসি যদি রেকর্ড ষষ্ঠবারের মতো বর্ষসেরা খেলোয়াড় না হতে পারেন, তাহলে সেটি হবে এ ট্রফিগুলো জিততে না পারার জন্য।
দলগত শিরোপার দিক দিয়ে অবশ্য মেসির চেয়ে ভালো মৌসুম কাটিয়েছেন রোনালদো। মেসির মতো নিজ ক্লাব জুভেন্টাসের হয়ে সুপার কাপ জিতে মৌসুম শুরু করেছিলেন তিনিও। পরে লিগও জিতেছেন। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মেসিকে আবার ছাড়িয়ে গেছেন এই পর্তুগিজ তারকা। নতুন চালু হওয়া উয়েফা নেশনস লিগ জিতেছেন পর্তুগালের হয়ে। দলগত দিক দিয়ে সফল মৌসুম কাটালেও ব্যক্তিগত দিক দিয়ে কিন্তু অত দুর্দান্ত ছিলেন না রোনালদো। গোটা মৌসুমে ৪৩ ম্যাচ খেলে ২৮টা গোল করেছেন রোনালদো। গত এক দশকে এই প্রথম ত্রিশের কম গোল করলেন পর্তুগিজ তারকা। গতবার বর্ষসেরার দৌড়ে দ্বিতীয় রোনালদো এবার এ কারণেই হয়তো একটু পিছিয়ে থাকবেন? সেটা জানা যাবে আজ।
ডিফেন্ডার হিসেবে প্রিমিয়ার লিগের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন ভার্জিল ফন ডাইক। এই একটা তথ্যই যথেষ্ট প্রমাণ করার জন্য, কী অসাধারণ একটা মৌসুম কাটিয়েছেন তিনি লিভারপুলের হয়ে। দেড় বছর আগে লিভারপুলে যখন যোগ দিলেন, অল রেডদের রক্ষণভাগ নিয়ে সবাই হাসাহাসি করত। সে অবস্থা থেকে লিভারপুলের রক্ষণভাগ যে আজকে তর্কযোগ্যভাবে ইউরোপের সেরা, তাঁর পেছনে মূল কৃতিত্ব এই ডাচ সেন্টারব্যাকের। ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে গত ৬৪ ম্যাচে ফন ডাইককে ড্রিবলে পরাস্ত করে কেউ গোল করতে পারেননি, ভাবা যায়! লিভারপুলকে জিতিয়েছেন চ্যাম্পিয়নস লিগ, একটুর জন্য লিগ জেতা হয়নি। কিছুদিন আগে চেলসিকে হারিয়ে উয়েফা সুপার কাপও জিতেছেন লিভারপুলের হয়ে। ওদিকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বিশ্বকাপ না খেলতে পারা নেদারল্যান্ডসকে নেশনস লিগের ফাইনালে ওঠানোর পেছনে অধিনায়ক ফন ডাইকের ভূমিকা ছিল অনেক। বর্ষসেরা হওয়ার দৌড়ে মেসি-রোনালদোকে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ জানাবেন এই ফন ডাইকই। আর সে চ্যালেঞ্জে যদি জিততে পারেন, তাহলে ১৩ বছর পর একজন ডিফেন্ডারের হাতে বর্ষসেরার পুরস্কার দেখবে বিশ্ব।
অপেক্ষা শুধু আজ রাত দশটার!