কেমন হলো বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দল?
>৩০ মে থেকে ইংল্যান্ডে শুরু হচ্ছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আসর। বিশ্বকাপ সামনে রেখে আজই ঘোষিত হলো ১৫ সদস্যের বাংলাদেশ দল। নিজেদের ইতিহাসের ষষ্ঠ বিশ্বকাপে কেমন দল নিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ?
বিশ্বকাপের দল কেমন হবে, এ নিয়ে কিছুটা আলোচনা ছিল। তবে সেটি মূল একাদশকে ঠিক রেখেই। বাংলাদেশ দলের ১৩ জন সম্পর্কে নিশ্চিত ছিলেন নির্বাচকেরা। বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে শুধু দুটি জায়গা নিয়েই প্রশ্ন ছিল। আর সে জায়গা নিয়েই আশায় ছিলেন প্রায় ছয় সাতজন ক্রিকেটার। আজ বিশ্বকাপের দল ঘোষণা করেছেন প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন। কেমন হলো এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দল?
তৃতীয় অলরাউন্ডার কে?
সাকিব আল হাসানের নামটা তো মাশরাফি বিন মুর্তজার পরেই লিখে রেখেছেন নির্বাচকেরা। কোচ স্টিভ রোডসের পছন্দের তালিকায় চলে এসেছেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন। ইংল্যান্ডের কন্ডিশনে মেহেদী হাসান মিরাজকে অলরাউন্ডার নয়, শুধু স্পিনার হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ব্যাট ও বলের ভারসাম্য আনার জন্য তৃতীয় আরেকজন অলরাউন্ডার দরকার ছিল বাংলাদেশের। প্রাথমিকভাবে মাহমুদউল্লাহই সেই তৃতীয়জন ছিলেন। কিন্তু কাঁধের চোটে মাহমুদউল্লাহর বোলিং নিয়ে সন্দেহ জাগছে। আর সে কারণেই মোসাদ্দেকের অন্তর্ভুক্তি। ইংলিশ কন্ডিশনে এর আগেও বল করেছেন মোসাদ্দেক, ভালোই করেছেন। কিন্তু পেস বান্ধব কন্ডিশনে লেট মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ে মোসাদ্দেক আসলেই কতটা কী করতে পারবেন, প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।
পেসার নির্বাচন কি ঠিক হয়েছে?
মাশরাফি বিন মুর্তজা, মোস্তাফিজুর রহমান ছিলেন অটোমেটিক চয়েস। মোহাম্মদ সাইফউদ্দীনও পেস বোলিং অলরাউন্ডার। রুবেল হোসেনও দুই বিশ্বকাপের অভিজ্ঞতা ও বাড়তি পেসের জন্য সুযোগ পেয়েছেন। পেসার হিসেবে শেষ স্থানটিতে নেওয়া হয়েছে আবু জায়েদকে। এখানে প্রধান নির্বাচক বলেছেন সুইং ও মুভমেন্টের কথা চিন্তা করেই আবু জায়েদকে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এ সিদ্ধান্ত হিতে বিপরীত হতে পারে। কারণ, অধিকাংশ বিশেষজ্ঞই বলছেন এবার শুষ্ক গ্রীষ্মের উইকেট থাকবে ইংল্যান্ডে। ফলে প্রথাগত সুইং আর মুভমেন্ট পাওয়ার আশা ছেড়েই দিয়েছে অধিকাংশ দল। ভারত দলেও যেমন শুধুই পেস বোলার পরিচয়ে মাত্র তিনজন সুযোগ পেয়েছেন। অস্ট্রেলিয়ার পেস আক্রমণকেও এগিয়ে রাখা হচ্ছে সুইং বা মুভমেন্ট নয়, স্টার্ক-কামিন্স-রিচার্ডসনের গতির কারণে। ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে বাড়তি গতিটাই বেশি প্রয়োজন হয়। সে ক্ষেত্রে বাড়তি পেস ও বিপিএলের ফর্ম বিবেচনা করে তাসকিন আহমেদকে সুযোগ দেওয়া যেতে পারত। যেহেতু চোট থেকে উঠে আসা তাসকিনের হাতে আরও দেড় মাস সময় ছিল।
স্পিন আক্রমণ
বিশ্বকাপে এবার বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণ খুব একটা মনের মতো হয়নি। বিশ্বকাপের দশ দলের মধ্যে একমাত্র বাংলাদেশ দলেই কোনো লেগ স্পিনার নেই। বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে আছেন শুধুই সাকিব আল হাসান। আর অফ স্পিনার হিসেবে আছেন মিরাজ। তৃতীয় স্পিনার হিসেবে দায়িত্ব নিতে হবে মাহমুদউল্লাহ ও মোসাদ্দেকের যে কোনো একজনকে। তবু স্পিনিং বৈচিত্র্যে বাংলাদেশই সবার চেয়ে পিছিয়ে আছে।
স্লগ ওভারে ঝড় তোলার কেউ আছে কি?
এই ইস্যুতে নির্বাচকদের হাতে কোনো সুযোগ ছিল না। ওয়ানডেতে শেষ দশ ওভারে ঝড় তুলে ম্যাচ বের করে নেয় অনেক দল। ইদানীং শেষ ১০ ওভারে পাঁচজন ফিল্ডার বাইরে থাকায় এ সময়ে রান তোলার জন্য পাওয়ার হিটারের দরকার হয় দলগুলোর। নেমেই ঝড় তোলার ক্ষমতা বাংলাদেশের অধিকাংশ ব্যাটসম্যানেরই নেই। সবারই একটু থিতু হতে হয়। অলরাউন্ডার আরিফুলকে বাজিয়ে দেখা হলেও তাঁর পারফরম্যান্স ক্রিকেট বিশ্বকাপ দলের চিন্তায় আসার মতো ছিল না। ফলে এ দায়িত্ব মাহমুদউল্লাহ, সৌম্য, সাব্বির, সাইফউদ্দীন কিংবা মিরাজের কাঁধেই পড়বে মনে হচ্ছে। অন্য দলগুলোর লেট মিডল এন্ডারদের তুলনায় এখানেও অনেক পিছিয়ে বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপের বাংলাদেশ দল দেখুন...
বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে চমক আবু জায়েদ
বিশ্বকাপের ১৫ জনের প্রোফাইল এক নজরে