নবীর অভিজ্ঞতাই হচ্ছে সাকিবের

টানা একাদশের বাইরে সাকিব। ছবি: ফেসবুক
টানা একাদশের বাইরে সাকিব। ছবি: ফেসবুক
>

এই অভিজ্ঞতা গত আইপিএলে মোহাম্মদ নবীর হয়েছিল। সাকিব টানা খেলছেন, আফগান অলরাউন্ডার বসে আছেন। এবার হচ্ছে ঠিক উল্টো

সাকিব আল হাসান ফিট বা অন্য কোনো সমস্যা নেই কিন্তু সাইডবেঞ্চে বসে আছেন, বাংলাদেশ ক্রিকেটে এ দৃশ্য বিরল হলেও বিদেশি লিগে সেটি মোটেও অপরিচিত নয়। আইপিএলে খেলতে গিয়ে সাকিব কতই তো একাদশের বাইরে থেকেছেন। কিন্তু এবার বাঁহাতি অলরাউন্ডারের বসে থাকা যেন বাংলাদেশের দর্শকদের চোখে বড্ড লাগছে।

লাগছে এই কারণে, সামনে বিশ্বকাপ। যেহেতু চোটে পড়ায় নিউজিল্যান্ড সফরে যেতে পারেননি, বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নিতে আন্তর্জাতিক আবহে হওয়া আইপিএলের মতো ভীষণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটা টুর্নামেন্ট হতে পারত সাকিবের জন্য আদর্শ। কিন্তু তিনি সে সুযোগটা পাচ্ছেন কোথায়? সানরাইজার্স হায়দরাবাদ ছয় ম্যাচ খেলে ফেলেছে। সাকিব সেখানে খেলার সুযোগ পেয়েছেন মাত্র একটিতে। কলকাতা নাইট রাইডার্সের বিপক্ষে সেই ম্যাচে ব্যাটিংয়ের সুযোগ পাননি। তবে বোলিংয়ে ভালো করতে পারেননি। ৩.৪ ওভারে ৪২ রানে নিয়েছিলেন ১ উইকেট। এরপর টানা পাঁচ ম্যাচ বসে আছেন সাকিব। সামনে কবে সুযোগ মিলবে, সেটিরও নিশ্চয়তা নেই। আইপিএলের সূচি বলছে, বাংলাদেশ দলের অনুশীলন শুরু হওয়ার আগে হায়দরাবাদ অন্তত চারটা ম্যাচ খেলবে। যদি জাতীয় দলে অনুশীলনে যোগ দিতে সাকিবকে চলেও আসতে হয়, এই চার ম্যাচের কটি তিনি খেলতে পারবেন বলার উপায় নেই।

সাকিবের এই অনিশ্চয়তার কারণ মোহাম্মদ নবী! একাদশে জায়গা পেতে বাংলাদেশ অলরাউন্ডারের সঙ্গে আপাতত প্রতিদ্বন্দ্বিতা আফগান অলরাউন্ডারের সঙ্গেই। দুর্দান্ত ছন্দে থাকা ডেভিড ওয়ার্নার-জনি বেয়ারস্টোর ওপেনিং জুটি এখনই ভাঙতে চাইবে না হায়দরাবাদ টিম ম্যানেজমেন্ট। দলের তুরুপের তাস রশিদ খানকে একাদশের বাইরে রাখার প্রশ্নই আসে না। বিদেশি কোটায় থাকল আর একটি জায়গা। এই জায়গায় প্রথম ম্যাচে দেখা গেছে সাকিবকে। পরের ম্যাচে কেন উইলিয়ামসনকে। চোটে পড়ায় নিয়মিত অধিনায়কের সার্ভিস পাচ্ছে না হায়দরাবাদ। উইলিয়ামসনের অনুপস্থিতে জায়গাটা নিয়েছেন মোহাম্মদ নবী। টানা চার ম্যাচ খেলা নবীর পারফরম্যান্স যথেষ্ট ভালো। পাঞ্জাবের বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচটা বাদ দিলে আগের তিন ম্যাচে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। ৪ ম্যাচে ৫.৪৯ ইকোনমিতে ৭ উইকেট নিয়েছেন। কৃপণ বোলিংয়ে এ মুহূর্তে হায়দরাবাদের সেরা বোলার নবী। ক্লিন হিট করতে পারেন বলে ব্যাটিংয়েও নবীর ওপর ভরসা রাখছে ম্যানেজমেন্ট।

মজাটা হচ্ছে, গত আইপিএলে ঠিক একই অভিজ্ঞতা হয়েছিল নবীরও। সাকিব ধারাবাহিক ভালো খেলছিলেন বলে তাঁকে এক ম্যাচেও একাদশের বাইরে রাখেনি হায়দরাবাদ টিম ম্যানেজমেন্ট। বাংলাদেশ অলরাউন্ডার নিয়মিত খেলায় নবীকে থাকতে হয়েছে একাদশের বাইরে, পুরো টুর্নামেন্টে তিনি খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন মাত্র দুটি ম্যাচ। এবার নবীর অভিজ্ঞতাই হচ্ছে সাকিবের। হায়দরাবাদের হয়ে গত আইপিএলে বিদেশি কোটায় সাকিবকে যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছে, এবার সেটি আরও বেড়েছে। ওয়ার্নার ফিরেছেন। এ বছর হায়দরাবাদে আসা বেয়ারস্টোও দারুণ ছন্দে। উইলিয়ামসন চোটে পড়ায় যা একটু সুযোগ মেলার কথা সাকিবের, নবী ধারাবাহিক ভালো খেলায় সেটিও হচ্ছে না। সাকিব অবশ্য সান্ত্বনা পেতে পারেন মার্টিন গাপটিলের কাছ থেকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা কিউই ওপেনারের পর্যন্ত জায়গা হচ্ছে না একাদশে।

আইপিএলের মতো টুর্নামেন্টে অবশ্য এমনই হয়। সব ফ্র্যাঞ্চাইজি চায় হাতে অনেক বিকল্প রাখতে। সাকিব-গাপটিলের মতো তারকা ক্রিকেটারদের তাই বসে থাকতে হয় সাইডবেঞ্চে।