'জুতা নেবে না, জীবনই তো নিয়ে গেল'
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে যে মসজিদে আজ সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, এক মাস আগে সেখানে নামাজ পড়েছেন সাইফউদ্দীন। নৃশংস এ ঘটনায় হৃদয় কেঁপে উঠেছে বাংলাদেশ দলের তরুণ অলরাউন্ডারের
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চে যে মসজিদে আজ সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে, সেখানে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশ দল নিরাপদে ফিরে আসতে পারলেও হামলায় নিহত মানুষের সংখ্যা ৪৯ জনে পৌঁছেছে। এর মধ্যে তিনজন বাংলাদেশিও রয়েছেন। এক মাস আগে বাংলাদেশ দল যখন সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলতে ক্রাইস্টচার্চে এসেছিল, ১৫ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার, অনুশীলনের আগে এই মসজিদেই নামাজ পড়েছিলেন মাশরাফি-তামিমরা। সেখানে ছিলেন সাইফউদ্দীনও।
এক মাস আগে যেখানে নামাজ পড়েছেন, সেখানেই ঘটেছে নৃশংস ঘটনা। এ ঘটনায় শিউরে উঠেছেন বাংলাদেশ দলের তরুণ পেস বোলিং অলরাউন্ডার। সন্ধ্যায় সাইফউদ্দীনের সঙ্গে যখন কথা হলো, তাঁর মন যেন ঘুরে এল ক্রাইস্টচার্চে। তাঁর মুখেই শুনুন বাকিটা—
‘গত মাসে আমরা সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে খেলেছি ক্রাইস্টচার্চে। ওই ম্যাচের আগে আমিও তো দলের সবার সঙ্গে ওই মসজিদে নামাজ পড়েছি। মসজিদটা বেশ ছোট। ভেতরের কাঠামো আমাদের দেশের মসজিদের মতো নয়। মসজিদের ভেতরটা অ্যাপার্টমেন্টের মতো। আমাদের দেশে মসজিদগুলোর সামনে অনেক দরজা থাকে। আর ওই মসজিদে একটা দরজা দিয়ে ঢুকতে হয়, ওটা দিয়েই বের হতে হয়। মানুষ যে নৃশংস এ ঘটনা থেকে বাঁচবে সে উপায়ও নেই। এ কারণে হতাহতের ঘটনা এত বেশি। বাংলাদেশে যেমন পাড়া-মহল্লায় একাধিক মসজিদ, ওখানে তো তা নয়। ক্রাইস্টচার্চের হ্যাগলি ওভালের খুব কাছে বলেই আমরা ওই মসজিদে নামাজ পড়ি। আগে থেকেই সবাই চিনত বলেই আজ সবাই ওখানেই নামাজ পড়তে গিয়েছিল। মাঠ থেকেও বেশি দূরে নয়। সকালে ঘুম থেকে উঠেই এ খবর দেখে হৃদয় কেঁপে উঠেছে। ঢোকার যে পথে ওই লোকটা গুলি ছুড়ল, এক মাস আগেই ওখান দিয়ে যাওয়া-আসা করেছি। সেদিন মিরাজের সঙ্গে একটা বিষয় নিয়ে বেশ রসিকতা করেছি। দেশে যখন কোনো মসজিদে নামাজ পড়তে যাই অভ্যাসবশত চুরি যাওয়ার ভয়ে স্যান্ডেল বা জুতা হাতে নিয়ে ভেতরে ঢুকি। ওখানেও যখন হাতে জুতা নিয়ে ঢুকছি মিরাজ বলছে, “এটা বাংলাদেশ না, নিউজিল্যান্ড! এখানে তোর জুতা কে নেবে?” আজ এই নৃশংস ঘটনার পর মনে হলো, জুতা কেউ নেবে না, কিন্তু মানুষের জীবনটাই তো নিয়ে গেল...’