শোয়েব বললেন সফলতার পাঁচটি সূত্র
>কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে বিপিএল খেলতে এসেছেন শোয়েব মালিক। ১৯৯৯ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট শুরু করা শোয়েবের ক্যারিয়ারের ২০ বছর পূর্তি হবে অক্টোবরে। এত দিন ধরে খেলে যাওয়ার রহস্য কী?
শোয়েব মালিককে আসলে জিজ্ঞেস করতে হতো, তারুণ্য ধরে রাখার উপায় কী? আর কদিন পর ৩৮ বছরে পা রাখবেন। সেটা তাঁকে দেখে মনে হয়? দিন দিন শোয়েব আরও তরুণতর হচ্ছেন। সেটা শুধু চেহারায় নয়, ব্যাটেও!
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই দুই দশক পূর্তি হবে এ বছরেই। টেস্ট থেকে সরে দাঁড়ালেও এখনো পাকিস্তানের ওয়ানডে আর টি-টোয়েন্টি দলের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিপিএলের প্রথম দুই ম্যাচে ভালো না করলেও এ নিয়ে টেনশন করছেন না একদমই। শোয়েব মালিক যে জানেন, সফল হতে গেলে ব্যর্থ হওয়ার ভয়ে আচ্ছন্ন হলে চলবে না।
এত দীর্ঘ দিন ক্যারিয়ারকে নিয়ে যাওয়া যেকোনো ক্রীড়াবিদের কাছেই পরম আরাধ্যের। শোয়েব শুধু ক্রীড়াবিদ হিসেবে নন; যেকোনো পেশাজীবীর জন্যই তিনটি পরামর্শ দিলেন। তাঁর মতে সফল হওয়ার সূত্রটা খুব সহজ। এর জন্য চারটি উপাদান দরকার। ব্যাখ্যা পরে হবে, আগে শোয়েবের কথাটা শুনুন, ‘আমার সফলতার রহস্য হলো, আমি প্রতিদিন অনুশীলন করি। খাবার-দাবার হিসেব করে খাই। ক্রিকেটটা খুব উপভোগ করি। আপনি যে কাজটা পছন্দ করেন, সেটাকেই যদি পেশা হিসেবে বেছে নেন, এটা কিন্তু দারুণ কাজে আসে। আর আমি যেখানেই যাই, সমর্থকদের প্রচুর উৎসাহ পাই।’
শোয়েবের কথা থেকে যে চারটি সূত্রের খোঁজ মিলল সফলতার চাবিকাঠি হিসেবে: আপনি আপনার কাজে যত পারদর্শীই হোন না কেন, নিজের দক্ষতায় মরচে ধরতে দেওয়া যাবে না। প্রতিনিয়ত নিজেকে শাণিয়ে নিতে হবে। খাবার খেতে হবে পরিমিত, খাদ্যাভাসও যে আপনার কর্ম জীবনকে প্রভাবিত করে, এটা অনেকে মাথাতেই রাখেন না। যে কাজটা করছেন, সেটাকে ভালোবাসতে হবে। এটা যদি আপনার ভালোবাসার কাজ না হয়, জোর করে করার মানে হয় না। শোয়েবের শেষ পরামর্শটা অবশ্য শুধু আপনার একার জন্য নয়; সবার জন্য। স্বীকৃতি আর উৎসাহ। ভালো কাজের জন্য হাততালি কে না চায়! ভালো কাজকে পুরস্কৃত করা বা স্বীকৃতি দেওয়া জরুরি।
শোয়েবের কথায় পঞ্চম আরেকটি সূত্র উঠে এল। ব্যক্তি বা পারবারিক জীবনের সুস্থিরতা। ব্যক্তি বা পারিবারিক জীবন সুখী না হলে এর প্রভাব ক্যারিয়ারে পড়ে। ভারতীয় টেনিস তারকা সানিয়া মির্জাকে বিয়ে করা শোয়েব পারিবারিক জীবনেও সুখী। সেটি স্বামী হিসেবে, এখন বাবা হিসেবেও। গত অক্টোবরে পুত্র সন্তানের বাবা হয়েছেন এই জুটি।
শোয়েব জানালেন, ‘বাড়িতে থাকলে তো সারা দিন ওর সঙ্গেই খেলি। ওর আসলে এখনো কিছু টিকা নেওয়া বাকি, এ কারণে ভ্রমণ করতে পারে না। তাই পরিবার থেকে দূরে থাকার সময়টায় আমার ভিডিও কলের পরিমাণ বেড়ে যায়। বাবা হওয়ার পর জীবনে কিছু পরিবর্তন তো এসেছেই। আর বাবা হওয়া এমন একটা বিষয়, সেটা আপনি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবেন না। সব মিলিয়ে আমি খুব খুশি।’
ক্রিকেট কখনো কখনো জীবনের প্রতিচ্ছবি হয়ে ওঠে। আজ সাংবাদিকদের সামনে দাঁড়ানো শোয়েবের কথাগুলো তাই শুধু ক্রিকেটের সীমায় থাকল না। বিপিএলে আজকের দিনের সেরা হিসেবে বেছে নেওয়া যায় শোয়েবের এই দর্শনকেই।