বলিভিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে মেসির যে ভয়
বলিভিয়ার বিপক্ষে আজকের ম্যাচে লিওনেল মেসি খেলবেন তো—আর্জেন্টাইন সমর্থকদের মনে এখন এই একটিই কৌতূহল। ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচে মেসির খেলার বিষয়টি এখনো অনিশ্চিত। মেসির এ ম্যাচে খেলার নিশ্চয়তা দিতে পারেননি আর্জেন্টিনার কোচ লিওনেল স্কালোনিও। মেসি অবশ্য দলের সঙ্গে বলিভিয়া সফরে গেছেন।
বিশ্বকাপ বাছাইয়ের এ ম্যাচের আগে মেসির খেলা নিয়ে স্কালোনি বলেছেন, ‘সে দলের সঙ্গে যাবে। সে আলাদা অনুশীলন করেছে। ম্যাচের আগে এখনো সময় আছে। আমরা মঙ্গলবার (আজ) এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব।’ মূলত আগের ম্যাচে ইকুয়েডরের বিপক্ষে অস্বস্তি নিয়ে মাঠ ছাড়ার কারণে মেসিকে নিয়ে এত শঙ্কা। এর মধ্যে অবশ্য স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর মেসিকে নিয়ে ভয়ের কোনো খবর আসেনি। তবে ঝুঁকি এড়াতেই হয়তো মেসিবে খেলানো নিয়ে অনিশ্চয়তা।
এত গেল মেসির চোটের ভয়। তবে এই ম্যাচ সামনে রেখে মেসির মনে আরও কিছু অস্বস্তি ভর করতে পারে। সেই অস্বস্তি মূলত বলিভিয়ার মাঠ লাপাজে মেসির অতীত পারফরম্যান্সকে ঘিরে, যা মেসিকে মোটেই আনন্দের কোনো বার্তা দেয় না। বলিভিয়ায় খেলতে যাওয়ার ক্ষেত্রে প্রথম অস্বস্তি হচ্ছে মাঠের উচ্চতা নিয়ে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩ হাজার ৬২৫ মিটার উঁচুতে অবস্থিত এ মাঠে খেলতে গিয়ে অক্সিজেনের অভাব ভুগতে হয় খেলোয়াড়দের। এ মাঠে মেসিও কখনো স্বস্তি নিয়ে খেলতে পারেননি।
বলিভিয়ার বিপক্ষে আর্জেন্টিনার হয়ে লাপাজে তিনটি ম্যাচ খেলেছেন মেসি। এই তিন ম্যাচের ফল হচ্ছে এক জয়, এক ড্র ও এক হার। তিন ম্যাচের কোনোটিতেই গোলের দেখা পাননি আর্জেন্টাইন অধিনায়ক। ২০০৯ সালের এপ্রিলের ১ তারিখের সেই ম্যাচ নিয়ে এখনো কটাক্ষ শুনতে হয় মেসিকে। সেদিন লা পাজে মেসি-ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনাকে নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলায় মেতে বলিভিয়া বিধ্বস্ত করেছিল ৬-১ গোলে।
চার বছর পরের ম্যাচে অবশ্য লা পাজ থেকে ১-১ গোলে ড্র নিয়ে ফিরেছিল আর্জেন্টিনা। মার্সেলো মরেনোর গোলে বলিভিয়া এগিয়ে যাওয়ার পর ম্যাচে সমতা ফেরান এভার বানেগা। আর সর্বশেষ দুই দল মুখোমুখি হয় ২০২০ সালে। সেই ম্যাচে অবশ্য জয় পেয়েছে মেসির আর্জেন্টিনা। মেসি গোল না পেলেও আর্জেন্টিনা সেদিন জিতেছিল লাওতারো মার্তিনেজ ও হোয়াকিন কোরেয়ার গোলে।
এ মাঠে মেসি কেমন ভোগেন, তা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সম্প্রতি বলিভিয়ার সাবেক গোলরক্ষক হোসে কার্লোস ফার্ন্দানেজ বলেছেন, ‘আমি চাই, এ ম্যাচে মেসি খেলুক। কারণ? আমি তাকে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বাজে দুটি ম্যাচ খেলতে দেখেছি লাপাজে। এখানে আমি তাকে ভুগতে দেখেছি। মানসিকভাবে এটা তাকে বিধ্বস্ত করে দেয়।’
এমনকি ২০০৯ সালের ৬ গোল হজম করে বিধ্বস্ত হওয়ার পর মেসি নিজেও বলেছিলেন, ‘এখানে (লাপাজ) খেলা অসম্ভব।’ তবে অনেক অসম্ভবকেই মেসি সম্ভব করেছেন। আজ মাঠে নামলে লাপাজের দুঃখও ঘুচিয়ে দিতে পারেন কি না, সেটাই এখন দেখার অপেক্ষা।