মানসিক অবসাদ কাটাতে এখনো ওষুধ খান স্টোকস
বেশ কিছুদিন মস্তিষ্কের ক্যানসারে ভোগার পর দুই বছর আগে মৃত্যু হয় বেন স্টোকসের বাবার। এর পর থেকেই দুশ্চিন্তা, মানসিক অস্থিরতার সমস্যায় ভুগতে শুরু করেন স্টোকস, মন দিতে পারছিলেন না মাঠের ক্রিকেটে। তাই মানসিক অবসাদের কারণে ২০২১ সালের জুলাইয়ে ক্রিকেট থেকে অনির্দিষ্টকালের বিরতি নিয়েছিলেন স্টোকস।
তারপর অবশ্য ডিসেম্বরে অ্যাশেজ দিয়ে আবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ফিরেছেন। অ্যামাজনের প্রামাণ্যচিত্র ‘ফিনিক্স ফ্রম দ্য অ্যাশেজ’-এ সেই দিনগুলো নিয়ে কথা বলেছেন ইংল্যান্ডের টেস্ট অধিনায়ক। মানসিক অবসাদ নিয়ে স্টোকস বলেছেন, ‘কখনো ভাবিনি, এমন সমস্যার জন্য আমাকে ওষুধ খেতে হবে। এটা বলতে আমি বিব্রত বা লজ্জিত নই। কারণ, আমার সত্যিই তখন সাহায্যের প্রয়োজন ছিল।’
সেই দিনগুলো পেছনে ফেলে আবার মাঠে ফেরা স্টোকসের কাঁধে এখন ইংল্যান্ড টেস্ট দলের দায়িত্ব। কোচ ব্রেন্ডন ম্যাককালামকে সঙ্গে নিয়ে ইংল্যান্ড টেস্ট দলের চেহারাই পাল্টে দিয়েছেন সময়ের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার।
তবে এখনো মানসিক অবসাদ পুরোপুরি কাটিয়ে উঠতে পারেননি, ‘মাঠে ফিরেছি, তবে ওই প্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। আগের মতো নিয়মিত না হলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হয় এখনো। মানসিক সুস্থতা বজায় রাখতে প্রতিদিন ওষুধ খেতে হয়। এটা একটা দীর্ঘ প্রক্রিয়া।’
করোনা মহামারির সময়টায় বেশ কিছুদিনের বিরতির পর ইংল্যান্ড-ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ দিয়ে মাঠে ফেরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট। তবে তখন ক্রিকেটারদের লম্বা সময় থাকতে হতো জৈব সুরক্ষাবলয়ে। তাই সেই সময়টা চাইলেও অসুস্থ বাবার পাশে থাকতে পারেননি স্টোকস। যে কারণে ক্রিকেটের প্রতি তীব্র বিরক্তি তৈরি হয়েছিল তাঁর, ‘সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ক্রিকেট থেকে দূরে থাকব। খেলাটার ওপর খুব রাগ হতো তখন। কারণ, ক্রিকেটই মৃত্যুপথযাত্রী বাবার কাছ থেকে আমাকে দূরে থাকতে বাধ্য করেছিল।’
অনেকেই মানসিক সমস্যা নিয়ে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন না। তবে স্টোকস চান, এই বিষয় নিয়ে খোলামেলা আলোচনা হোক।
বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চান বলেই প্রামাণ্যচিত্রে তিনি এ নিয়ে কথা বলেছেন রাখঢাক না করেই, ‘অনেকেই মনে করেন, মানুষকে তার সমস্যা নিয়ে প্রশ্ন করে বিব্রত করা ঠিক নয়। আমার কিন্তু কোনো সমস্যা নেই। খুশি মনেই যতটা সম্ভব কথা বলেছি।’