ধান উৎপাদনে আমরা এখন চতুর্থ
দেশের জনসংখ্যা যখন প্রায় ১৭ কোটি, তখন এত মানুষের খাদ্যের জোগান দেওয়া সহজ কথা নয়। নানা সীমাবদ্ধতার মধ্যেও এই বিশাল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে যাচ্ছেন এ দেশের ধানবিজ্ঞানীরা।
ক্রিশ্চিয়ান সায়েন্স মনিটর পত্রিকায় ২০১৫ সালে প্রকাশিত এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, অতীতের তীব্র খাদ্যঘাটতির বাংলাদেশ বর্তমানে উদীয়মান অর্থনীতির নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। অতীতের তলাবিহীন ঝুড়ি এখন শক্ত ভিত্তির উদ্বৃত্ত খাদ্যের বাংলাদেশ; ধান উৎপাদনে বাংলাদেশ এখন বিশ্বে চতুর্থ।
বর্তমান স্বয়ংসম্পূর্ণতা বা উদ্বৃত্ত উৎপাদন এক দিনে অর্জিত হয়নি। এর পেছনে রয়েছে সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি, ধানবিজ্ঞানীদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং কৃষকের নিরলস পরিশ্রম। প্রশ্ন হচ্ছে এই স্বয়ংসম্পূর্ণতা টেকসই হবে কি না? কারণ, টেকসই খাদ্যনিরাপত্তা অর্জনের বড় চ্যালেঞ্জ ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, ক্রমহ্রাসমান সম্পদ (কৃষিজমি, শ্রমিক, পানি ইত্যাদি) এবং জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অভিঘাত (বন্যা, খরা, লবণাক্ততা, জলাবদ্ধতা প্রভৃতি)। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি সুচিন্তিত পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ।
জনবান্ধব কৃষিনীতি ও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বিগত বছরগুলোয় চালের উৎপাদন ৩ দশমিক ৪ লাখ টন হারে বেড়েছে। গত অর্থবছরে চালের উৎপাদন ছিল ৩ কোটি ৮৬ লাখ টন। গতিশীলতার এ ধারা অব্যাহত থাকলে ২০৫০ সালে চালের উৎপাদন হবে ৪ কোটি ৭২ লাখ টন। বিপরীতে ২০৫০ সালে ২১ কোটি ৫৪ লাখ লোকের খাদ্য চাহিদা পূরণে চাল প্রয়োজন হবে ৪ কোটি ৪৬ লাখ টন। এটাই আপাতত টেকসই খাদ্যনিরাপত্তা অর্জনের অভীষ্ট লক্ষ্য, যা সামনে রেখে কয়েকটি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় কাজ করছে বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট।
ড. মো. শাহজাহান কবীর বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, গাজীপুরের মহাপরিচালক