নারীর জন্য হয়রানিমুক্ত কর্মক্ষেত্র ও আইএলও সনদ ১৯০

আইএলও সনদ-১৯০ অনুস্বাক্ষর ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি

শ্রমশক্তি বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার অন্যতম সম্পদ। এই শ্রমশক্তির ওপর ভর করে সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার দিকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। উন্নীত হয়েছে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে। প্রত্যাশা করা হচ্ছে, ২০৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ একটি উন্নত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বমানচিত্রে স্থান করে নেবে। উন্নয়নশীল দেশের কাতারে আসীন হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে এখনো অনেকটা উন্নতির প্রয়োজন। তার মধ্যে শ্রম আইনের যথাযথ প্রয়োগ, কর্মক্ষেত্রে হয়রানি, মজুরিবৈষম্য, সময়মতো মজুরি প্রাপ্তি, চাকরির অনিশ্চয়তা অন্যতম। আর এ থেকে উত্তরণের প্রধান উপায় হলো আইএলও সনদ-১৯০ অনুস্বাক্ষর ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন করা।

৭ জুন কেয়ার বাংলাদেশের উদ্যোগে ও প্রথম আলোর সহযোগিতায় ‘নারীর জন্য হয়রানিমুক্ত কর্মক্ষেত্র ও আইএলও সনদ ১৯০’ শীর্ষক এক ভার্চ্যুয়াল সংলাপে এসব কথা উঠে আসে। আলোচনায় সরকারি নীতিনির্ধারক, শ্রমিক-মালিক পক্ষ, আইন বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ ও উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সংলাপে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক তাসলিমা ইয়াসমীন। আইনের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে তিনি বলেন, বাংলাদেশে হয়রানি ও সহিংসতা রোধে অনেকগুলো বিশেষ আইন করা হয়েছে। তবে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি ও সহিংসতা রোধে আইনি কাঠামো তুলনামূলকভাবে এখনো দুর্বল। বাংলাদেশের শ্রম আইনে কর্মক্ষেত্রে হয়রানি ও সহিংসতাকে সংজ্ঞায়ন করা হয়নি। শ্রম আইনের ৩৩২ ধারায় নারীর প্রতি ‘অশ্লীল ও অভদ্রজনিত’ আচরণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যা জেন্ডার সংবেদনশীল নয়। ধারাটি নারীর প্রতি কর্মক্ষেত্রে ঘটা নানা ধরনের হয়রানি ও সহিংসতাকে সুনির্দিষ্টভাবে তুলে ধরে না। এ আইনে সর্বোচ্চ শাস্তির পরিমাণ মাত্র ২৫ হাজার টাকা। এ–সংক্রান্ত ২০০৯–এর নীতিমালায় শুধু যৌন হয়রানি সংজ্ঞায়ন করা হচ্ছে। অথচ আইএলও সনদ ১৯০ অনুযায়ী জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা ও হয়রানিকে আইনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজন রয়েছে। ২০০৯–এর নীতিমালায় যিনি হয়রানি করছেন, তাঁর শাস্তির বিষয়টি আছে। কিন্তু যিনি হয়রানির শিকার হলেন, তাঁর জন্য কাউন্সেলিং ছাড়া আর তেমন কিছু নেই। এ ছাড়া জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা ও শ্রম আইনের প্রয়োগের কাঠামো অনেক দুর্বল। এ জন্য শ্রম আইন সংশোধন করা দরকার। ২০০৯–এর নীতিমালা প্রয়োগ ও তদারকি নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের যুগ্ম মহাপরিদর্শক ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ শ্রম আইনে ৩৫৪টি ধারা আছে। শ্রম আইনের বিধি ৫৪–তে দিবাযত্ন কেন্দ্রের বিষয়টি আছে। সে অনুযায়ী কোনো কর্মস্থলে ৪০ বা ততোধিক নারী থাকলে তাঁদের ছয় বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্র থাকতে হয়। এ আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পারলেই অনেকগুলো কাজ হবে। নারী শ্রমিকদের সন্তানের জন্য বর্তমানে সারা দেশে ৫ হাজার ৬৫১টি কর্মক্ষেত্রে দিবাযত্ন কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। এসব কেন্দ্রের বেশির ভাগই আছে তৈরি পোশাকশিল্পে। শ্রম আইনের ৩৩২ ধারায় নারীর প্রতি ‘অশ্লীল ও অভদ্রজনিত’ আচরণের কথা উল্লেখ আছে। এটাকে আরও সুনির্দিষ্ট করা প্রয়োজন।

সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মো. মুজিবুল হক। তিনি বলেন, নারীর প্রতি যৌন হয়রানি ও সহিংসতা প্রতিরোধে অনেক আইন আছে। তবে কারখানার মালিক, শ্রমিক ও শ্রমিকনেতাদের প্রচলিত আইনগুলো সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। তাই আইন করার চেয়ে আইন বিষয়ে সচেতনতা তৈরি করা বেশি জরুরি। মালিক, শ্রমিক ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার আইনের বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। মালিক ও শ্রমিক—উভয়ের স্বার্থ সংরক্ষণ করে এ আইনগুলো আমরা যুগোপযোগী করতে পারি৷ শুধু আইন করলে হবে না, আইন সম্পর্কে ভালো ধারণা থাকতে হবে। এ জন্য সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করে গণসচেতনতা বাড়াতে হবে। শ্রম মন্ত্রণালয় থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।

যেটুকু আইন আছে, তা বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়ে সাংসদ শিরীন আখতার বলেন, আইএলও কনভেনশন ১৯০ শুধু নারীর কথা নয়, জেন্ডারভিত্তিক সবার কথাই বলে। অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের কীভাবে আইনের আওতায় আনা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা শুরু হওয়া প্রয়োজন। কারখানায় যাঁরা নির্যাতন করেন, তাঁরা ওই শ্রমিকের মানবিক বোধ, অধিকার ও মর্যাদার কথা ভাবছেন না। এ সংকট কীভাবে মোকাবিলা করা যায়? সে জন্য সমাজ ও পরিবারে সে শিক্ষা তৈরি করা দরকার। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীর প্রতি সম্মান ও মর্যাদার কথা ছোট থেকে শেখাতে হবে। মানুষের মনোজগৎ পরিবর্তন করতে না পারলে হাজারো আইন দিয়ে এ সংকট ঘোচানো যাবে না। এ জন্য এসব বিষয়ে দৃশ্যমান প্রচারণা দরকার। নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিয়ে একটা রোডম্যাপ করা প্রয়োজন। আইনের ফাঁকফোকর ধরে তা নিয়ে কাজ করা দরকার। তবেই আমরা এগিয়ে যেতে পারব।

তৈরি পোশাক খাতে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে। আর এ খাতে কর্মরত বেশির ভাগ শ্রমিকই নারী। এ ছাড়া অন্যান্য খাতেও নারীর অংশগ্রহণ বাড়ছে। সে সঙ্গে বাড়ছে যৌন হয়রানি ও সহিংসতার ঘটনা৷ তাই নারীর এ অব্যাহত অগ্রগতি ধরে রাখতে প্রয়োজন নিরাপদ কর্মপরিবেশ। তা নিশ্চিত করা গেলে সমাজের পিছিয়ে পড়া অনেক নারী দেশের শ্রমবাজারে নতুন করে যুক্ত হবেন। নিরাপদ, যৌন হয়রানি ও সহিংসতামুক্ত কর্মপরিবেশের বিকল্প নেই। আর সে জন্য প্রয়োজন আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষর ও বাস্তবায়ন।

সবাইকে সমন্বিতভাবে কাজ করার আহবান জানিয়ে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার প্রশিক্ষণ ও জেন্ডারবিষয়ক কর্মকর্তা শিপ্রা চৌধুরী বলেন, ২০১৯ সালে আইএলও সম্মেলন হয়। তখন থেকেই আইএলওর ঢাকা অফিস এটাকে পরিচিত করা ও সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে। ২০২১ সালের ২৫ জুন এ সনদ কার্যকর হবে। আমাদের শ্রম আইন ও উচ্চ আদালতের রায়ে (ভারডিক্ট) হয়রানিকে এত সামগ্রিকভাবে সংজ্ঞায়ন করা হয়নি। জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা নিয়ে আমরা সামগ্রিকভাবে কাজ করছি।

সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষর করার ক্ষেত্রে সরকারের কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকার কারণ নেই বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের জ্যেষ্ঠ রিসার্চ ফেলো খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি আশা করেন, সরকার অতি দ্রুত আইএলও সনদ অনুস্বাক্ষর করবে। শ্রম ও নারীর অধিকারকে বাংলাদেশ অন্তর্জাতিক মানদণ্ডে নিয়ে যাচ্ছে—এ পরিচয় আমরা আমাদের শ্রমিক ও বিশ্বকে দিতে চাই। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পক্ষের একটা বড় ভূমিকা থাকবে। একটি আইন সংশোধন করতে গিয়ে সংশ্লিষ্ট অন্য আইনে নতুন ঘাটতি তৈরি হয় কি না, সেটা মাথায় রেখে সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

কর্মক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের অবস্থা তুলে ধরেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক তানিয়া হক। তিনি বলেন, শ্রমবাজারে নারী শ্রমিক ও নারী—এ দুভাবে হয়রানির শিকার হন। দিবাযত্ন কেন্দ্রের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে। কিন্তু সেখানে নারী শ্রমিক তাঁর সন্তান নিয়ে কীভাবে পৌঁছাবে—তার কথাও ভাবতে হবে। নারীরা বয়স, অবস্থান ও বৈবাহিক অবস্থাভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়রানির শিকার হন। সে জন্য নারী হিসেবে নয়, শ্রমিক হিসেবে যোগ্যতার জায়গা তৈরি করতে হবে। অফিস পরিবহন নিশ্চিত করা দরকার। শ্রমিক সংগঠনে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ৩৩ শতাংশ নারী কোটা থাকা প্রয়োজন। শ্রমবাজার লিঙ্গবৈষম্যমুক্ত করতে হলে পরিবারকেও লিঙ্গবৈষম্যমুক্ত করতে হবে। কারখানাগুলোয় জেন্ডার সংবেদনশীলতার প্রশিক্ষণ দেওয়া জরুরি।

পোশাকশিল্পে মানবসম্পদই সবচেয়ে বড় শক্তি উল্লেখ করে পোশাক কারখানা সেপাল গ্রুপের পরিচালক তানিয়া মুনশি বলেন, এ শিল্পে প্রায় ৬০ শতাংশ নারী জড়িত। তাঁরা নিরাপদ কর্মপরিবেশ না পেলে মালিকপক্ষই তার নেতিবাচক প্রভাব ভোগ করবে। আমরা সরকারি উদ্যোগের জন্য বসে নেই। ইতিমধ্যে কারখানায় নারীদের জন্য বিভিন্ন সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। হয়রানি ও বৈষম্য প্রতিরোধে জিরো টলারেন্স নীতি নেওয়া হয়েছে। এ জন্য যৌন হয়রানিবিরোধী কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির মূল কাজ হলো হয়রানির বিষয়গুলো তদারকি করা ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো। এ ছাড়া কর্মীদের মধ্যে যৌন হয়রানি ও সহিংসতা বিষয়ে নিয়মিত সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। অন্যান্য খাতের তুলনায় পোশাককর্মীরা এখন অনেক বেশি সচেতন। কোনটি গ্রহণযোগ্য ও কোনটি গ্রহণযোগ্য নয়, সে বিষয়ে তাঁরা জানেন।

আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষর করলে সরকারের একটা জবাবদিহি আসবে বলে মনে করেন জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সালমা আলী। তিনি বলেন, কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি যৌন হয়রানি বন্ধে ২০০৯ সালে হাইকোর্টের একটি রায় ছিল। সংবিধানের ১১১ ধারা অনুযায়ী যখন কোনো আইন থাকে না, তখন এ রায়গুলো আইন বলে বিবেচিত হয়। কিন্তু বাস্তবে একটা আইন হওয়া দরকার। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ১০ ধারায় যৌন হয়রানির বিষয়ে একটা সেকশন ছিল। ২০০৩ সালে অপব্যবহার হতে পারে বলে তা সরিয়ে দেওয়া হয়। যৌন হয়রানির অভিযোগ প্রমাণ করা সবচেয়ে বেশি চ্যালেঞ্জের, যার কারণে আসামিরা পার পেয়ে যাচ্ছে। অপরাধ প্রমাণিত হওয়ার আগপর্যন্ত এটা গোপন রাখতে হবে। কেননা, অপরাধ প্রমাণ হওয়ার আগপর্যন্ত অভিযুক্ত ব্যক্তিও অপরাধী নয়। প্রত্যেক কর্মীকে এসব বিষয়ে সচেতন করতে হবে।

আইএলও সনদ ১৯০–এ অনুস্বাক্ষর বাংলাদেশকে প্রগতিশীল রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এনে দেবে বলে জানান কেয়ার বাংলাদেশের উইমেন অ্যান্ড গার্লস এমপাওয়ারমেন্ট প্রোগ্রামের পরিচালক হুমাইরা আজিজ। তিনি বলেন, হয়রানিমুক্ত কর্মপরিবেশ তৈরিতে বিভিন্ন সংগঠন বিভিন্ন খসড়া আইন তৈরি করেছে। বিভিন্ন স্তরে এগুলো আলোচনা ও পর্যালোচনাও হয়েছে। এসব খসড়াকে দ্রুত যুগোপযোগী আইনে রূপ দেওয়া প্রয়োজন। তাহলে নারী শ্রমিকদের অধিকার নিশ্চিত ও কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানি রোধ করা সম্ভব হবে। হয়রানি ও সহিংসতা নারী শ্রমিক ও পুরুষ শ্রমিকের জীবনে ভিন্ন ভিন্ন প্রভাব ফেলে। সবার জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষরের জন্য বিভিন্ন পর্যায়ের নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে কথা বলা দরকার। শুধু পোশাকশিল্প খাত মালিক নয়, সব খাতের নিয়োগকর্তাদের সঙ্গে আলোচনার উদ্যোগ নেওয়া দরকার।

সূচনা বক্তব্যে কেয়ার বাংলাদেশের প্রমোটিং ওয়ার্কার ওয়েল বিইং প্রজেক্টের টিম লিডার মো. বাবুল আজাদ বলেন, ৬ কোটি ৩৫ লাখ শ্রমিকের মধ্যে ২ কোটি নারী শ্রমিক, যা ৩২ শতাংশ। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের নারীশিক্ষা, রাজনীতি ও মাতৃমৃত্যুর হার রোধে অনেক অগ্রগতি হলেও কর্মক্ষেত্রে হয়রানি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। কর্মক্ষেত্রের পরিবেশ আরও উন্নত করা প্রয়োজন।

সুপারিশ

কেয়ার বাংলাদেশ আয়োজিত ভার্চ্যুয়াল সংলাপে কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি হয়রানির ধরন, কারণ ও এ থেকে বেরিয়ে আসার জন্য বিভিন্ন সুপারিশ এসেছে:

শিগগিরই আইএলও সনদ ১৯০ অনুস্বাক্ষর করতে হবে এবং তা বাস্তবায়নের জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে।

প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের অন্তর্ভুক্ত করে শ্রম আইন সংশোধন ও যুগোপযোগী করা প্রয়োজন।

পোশাক খাতসহ সব খাতে নারী শ্রমিকদের সন্তানের জন্য দিবাযত্ন কেন্দ্রের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

শ্রম আইনে জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা ও হয়রানি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

যৌন সহিংসতা ও হয়রানি রোধে ২০০৯-এর নীতিমালার সঠিক প্রয়োগ নিশ্চিত করতে বিভিন্ন কারখানা ও প্রতিষ্ঠানকে তদারকি ও পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে হবে।

নারীদের কর্মক্ষেত্রে যাতায়াতের জন্য অফিস পরিবহন নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

শ্রমিক সংগঠনে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে ৩৩ শতাংশ নারী কোটা থাকা প্রয়োজন।

শ্রমিকদের, বিশেষ করে নারী শ্রমিকদের শ্রমআইন ও তাঁদের অধিকার বিষয়ে সচেতন করতে প্রচারণা চালাতে হবে।

মালিক ও শ্রমিকদের সম্পর্কোন্নয়ন ও অসন্তোষ নিরসনে নিয়মিত আলাপ-আলোচনা করা জরুরি।

নারীর জন্য মর্যাদাপূর্ণ সুন্দর কর্মপরিবেশ তৈরিতে নিজ নিজ ক্ষেত্র থেকে উদে্যাগ নিতে হবে।

#LetsWorkTogether

সম্মানিত আলোচক: মো. মুজিবুল হক: সংসদ সদস্য; সভাপতি, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। শিরীন আখতার: সংসদ সদস্য। মো. মোস্তাফিজুর রহমান: যুগ্ম মহাপরিদর্শক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তর। খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম: সিনিয়র রিসার্চ ফেলো, সিপিডি। অ্যাড. সালমা আলী: সভাপতি, জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতি। শিপ্রা চৌধুরী: প্রশিক্ষণ ও জেন্ডার কর্মকর্তা, বেটার ওয়ার্ক প্রজেক্ট, আইএলও। তানিয়া হক: অধ্যাপক, উইমেন অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। তানিয়া মুনশি: পরিচালক, সেপাল গ্রুপ। তাসলিমা ইয়াসমীন: সহযোগী অধ্যাপক, আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। হুমায়রা আজিজ: পরিচালক, উইমেন অ্যান্ড গার্লস এমপাওয়ারমেন্ট প্রোগ্রাম, কেয়ার বাংলাদেশ। আবুল কালাম আজাদ: যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র। রাজেকুজ্জামান রতন: প্রেসিডেন্ট, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট। চৌধুরী আশিকুল আলম: সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন সংঘ। নাসরিন আক্তার দিনা: সাধারণ সম্পাদক, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল নারী শাখা। নাজমা আক্তার: প্রতিষ্ঠাতা, আওয়াজ ফাউন্ডেশন। সানজিদা সুলতানা: ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী পরিচালক, কর্মজীবী নারী। কল্পনা আক্তার: নির্বাহী পরিচালক, বিসিডব্লিউএস। মাহমুদা বেগম: নির্বাহী পরিচালক, এসওএফ। ইয়াকুব হোসেন: নির্বাহী পরিচালক, ভিলেজ এডুকেশন রিসোর্স সেন্টার। কোহিনুর মাহমুদ: পরিচালক, বিলস। মো. বাবুল আজাদ: টিম লিডার, প্রমোটিং ওয়ার্কার ওয়েল বিইং প্রজেক্ট, কেয়ার বাংলাদেশ।

■ সঞ্চালক: ফিরোজ চৌধুরী: সহকারী সম্পাদক, প্রথম আলো