কন্যাশিশুর স্বপ্নে গড়ি আগামীর বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস উপলক্ষে ‘আনটিল ইউ হিয়ার মি’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে অতিথিরা। ১০ অক্টোবর ঢাকার প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কার্যালয়েছবি: প্রথম আলো

অংশগ্রহণকারী

সারাহ্ কুক

ব্রিটিশ হাইকমিশনার, বাংলাদেশ

হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন

নরওয়ে অ্যাম্বাসেডর, বাংলাদেশ

মো. ইউসুফ ফারুক

ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মাইক্রোসফট বাংলাদেশ

কবিতা বোস

কান্ট্রি ডিরেক্টর, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

সানজিদা হোসেন এষা

সহযোগী, ইয়ুথ ফর চেঞ্জ

তাসনিম আজিজ রিমি

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী

আয়েশা খাতুন

শিক্ষার্থী, দ্বাদশ শ্রেণী       

ফাহমিদা হক নিশি

নির্বাহী পরিচালক,  ইয়েস বিডি

নিশাত সুলতানা

ডিরেক্টর, ইনফ্লুয়েন্সিং, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

‘আনটিল ইউ হিয়ার মি’ শীর্ষক অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারীরা। ১০ অক্টোবর ঢাকার প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কার্যালয়ে
ছবি: প্রথম আলো

আলোচনা

সারাহ্ কুক

ব্রিটিশ হাইকমিশনার, বাংলাদেশ

আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিবস। এ দিবস মনে করিয়ে দেয় যে মেয়েদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য নেতৃত্ব গঠনে বিনিয়োগ জরুরি। শিক্ষা কন্যাশিশুদের স্বপ্নপূরণ এবং সমাজে তাদের মতামতের গুরুত্ব প্রতিষ্ঠায় জ্ঞান ও দক্ষতা তৈরি করে। শিক্ষা অর্থনৈতিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রাখে। চাহিদামতো চাকরির সুযোগ, কর্মক্ষেত্রে মতামতের গুরুত্ব প্রতিষ্ঠা ও অর্থনৈতিক স্বাধীনতা অর্জনে শিক্ষা দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলে।

শিক্ষা কন্যাশিশুদের সমাজে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়ে তোলে। এটি পরবর্তী প্রজন্মের নেতৃত্ব গড়ে তুলতে সহায়তা ও অনুপ্রেরণা জোগায়। কন্যাশিশুদের ভবিষ্যৎ নির্মাণে শিক্ষায় বিনিয়োগ আমার অগ্রাধিকার তালিকায় প্রথমে থাকবে। কন্যাশিশুর শিক্ষায় বিনিয়োগ যুক্তরাজ্য সরকারেরও প্রথম অগ্রাধিকার। জেন্ডার সমতা এবং বিশ্বব্যাপী কন্যাশিশু ও নারীদের অধিকার নিশ্চিত করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

প্রত্যেক কন্যাশিশুর অন্তত ১২ বছরের মানসম্পন্ন শিক্ষা অর্জনের অধিকার রয়েছে। দারিদ্র্য নির্মূল, জেন্ডার সমতা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন, বিশ্বব্যাপী শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বিষয়টি আমাদের কাজের কেন্দ্রে রয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে যুক্তরাজ্য সরকার বিশ্বব্যাপী ১০ মিলিয়ন কন্যাশিশুর শিক্ষা নিশ্চিত করতে সাহায্য করেছে। কন্যাশিশুদের শিক্ষা নিয়ে আমরা বাংলাদেশের সঙ্গেও কাজ করছি। শিক্ষার ক্ষেত্রে বাল্যবিবাহের প্রতিবন্ধকতা সম্পর্কে কন্যাশিশুরা আমাদের জানিয়েছে। কন্যাশিশুদের শিক্ষা নিশ্চিতকরণ ও ক্ষমতায়ন করতে পারলে তারাই ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেবে।

হকোন অ্যারাল্ড গুলব্র্যান্ডসেন

নরওয়ে অ্যাম্বাসেডর, বাংলাদেশ

নরওয়ের দিক থেকে আমরা ছেলে ও মেয়েশিশু উভয়ের জন্য  জেন্ডার সমতা ও বর্ধিত সুযোগ নিশ্চিত করার চেষ্টা করি। গত বছর এ বিষয়ে একটি নতুন কর্মপরিকল্পনা শুরু করেছি। এ কর্মপরিকল্পনার মূল লক্ষ্য হলো, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টের পঞ্চম লক্ষ্যটি বাস্তবায়ন করা। কন্যাশিশুরা শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধকতা, বয়স, জেন্ডার পরিচয়সহ বিভিন্ন কারণে বৈষম্যের শিকার হতে পারে। এসব বিষয় মাথায় রেখে পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ কর্মপরিকল্পনার পাঁচটি লক্ষ্য রয়েছে।

প্রথমত, প্রত্যেক মানুষের তার নিজের দেহ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে। দ্বিতীয়ত, ক্ষতিকর চর্চা ও সহিংসতা থেকে মুক্ত থেকে প্রত্যেকের জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে। তৃতীয়ত, কর্মক্ষেত্রে প্রবেশের ক্ষেত্রে সবার অধিকার রয়েছে। চতুর্থত, প্রত্যেকের জনজীবনে অংশগ্রহণের রাজনৈতিক অধিকার রয়েছে। পঞ্চমত, জলবায়ু, জ্বালানি ও খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রত্যকের বিভিন্নভাবে অংশগ্রহণের অধিকার রয়েছে।

সমাজ পরিবর্তনে কাজ করা মানুষদের ওপর সব সময়ই চাপ থাকবে। কিন্তু তাঁদের বলার ও তা নিয়ে কাজ করার অধিকার সব সময়ই থাকতে হবে। সবার জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ে তুলতে হবে। এ ক্ষেত্রে ডিজিটাল জগতে সহিংসতার মতো ক্ষতিকর বিষয়গুলো প্রতিরোধ করতে হবে।

মো. ইউসুফ ফারুক

ব্যবস্থাপনা পরিচালক, মাইক্রোসফট বাংলাদেশ

কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে আমাদের বৈচিত্র্য, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি  নিশ্চিত করতে হয়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারীদের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি খাতে নিয়ে আসা একটি চ্যালেঞ্জ। আলোচনায় এসেছে, এখনো কিছু অঞ্চলে বাল্যবিবাহের হার ৯০ শতাংশ। এ থেকে বেরিয়ে আসার অনেক পথ আছে। বিশেষ করে প্রযুক্তি এ ক্ষেত্রে ভূমিকা

রাখতে পারে।

চ্যাটজিপিটির প্রধান প্রযুক্তি কর্মকর্তা একজন নারী। মাইক্রোসফটে আমার রিপোর্টিং ম্যানেজারও একজন নারী। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমরা ‘ডিজি গার্লস’ নামের একটি কর্মসূচি চালু করেছি। এ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার্থীদের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হবে। ‘প্রযুক্তিতে নারী’ (ওমেন ইন টেক) নামেও একটি কর্মসূচি আছে। এ কর্মসূচি নারীদের জন্য বিশেষভাবে সাজানো হয়েছে। তা ছাড়া এগুলো বৈশ্বিক কর্মসূচি।

কেবল স্মার্টফোন ও ইন্টারনেট থাকলেই এসব কর্মসূচিতে যুক্ত হওয়া যাবে। যেসব নারী ডেভেলপার হতে চান, তাঁদের জন্য ‘কোড ফর গার্লস’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। নারীদের জন্য আমাদের অনেক প্ল্যাটফর্ম আছে। যেগুলো প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বিস্তৃত।

কবিতা বোস

কান্ট্রি ডিরেক্টর, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

শিশুরা যেন শৈশব থেকেই বৈষম্যহীন পরিবেশে বড় হয়, সে জন্য প্ল্যান ইন্টারন্যা-শনাল বাংলাদেশ শুরু থেকেই মাঠপর্যায়ে কাজ করছে। এ ক্ষেত্রে কন্যাশিশুদের আমরা প্রাধান্য দিই। শিক্ষা কন্যাশিশুর পরিবার, ভবিষ্যৎ, রাষ্ট্র ও সমাজের জন্য অবদান রাখবে। বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে নরওয়ে অ্যাম্বাসির সঙ্গে সরাসরি কাজ করছি। দুর্যোগ মোকাবিলা ও প্রযুক্তি খাতে নারীরা আগের তুলনায় অনেক এগিয়েছেন। তবে সামাজিক পর্যায়ে নারীর অংশগ্রহণে ঘাটতি রয়েছে। শিক্ষিত হলেও অনেক ক্ষেত্রে নারীদের চাকরি করতে দেওয়া হয় না। আবার চাকরিজীবী নারীরা গর্ভধারণ ও সন্তান জন্মদানের পর পারিবারিক চাপে চাকরি ছাড়তে বাধ্য হন।

দুর্যোগ মোকাবিলা ও জলবায়ু পরিবর্তনে নারী নেতৃত্ব নিয়ে আমরা কাজ করছি। কন্যাশিশুর চোখে দুর্যোগ, জলবায়ু পরিবর্তনকে দেখা ও তাদের প্রজননস্বাস্থ্য নিয়ে আগামী বছরগুলোতে আমরা কাজ করে যাব। আমাদের উদ্যোগগুলো নারী ও কন্যাশিশুদের জন্য একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ তৈরি করবে।

সানজিদা হোসেন এষা

সহযোগী, ইয়ুথ ফর চেঞ্জ

তথ্যপ্রযুক্তি খাতে নারীরা নানারকম বাধার সম্মুখীন হয়। বেশির ভাগ পরিবার নারীর শিক্ষা ও চাকরির চেয়ে বিয়েকে বেশি গুরুত্ব দেয়। সে জন্য তাঁদের চাকরিক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করা হয়। বিজ্ঞান, গণিত, প্রযুক্তি, আইসিটি ও গবেষণামূলক কাজে নারীদের প্রবেশাধিকার খুবই কম। তাদের প্রশিক্ষণের অভাব রয়েছে। পরিবার থেকেই নারীশিশুর প্রতি বৈষম্যের শুরু হয়। অনেক প্রতিষ্ঠান প্রযুক্তি খাতকে পুরুষনির্ভরশীল মনে করে। এ খাতে চাকরির আবেদেনের ক্ষেত্রে নারীদের নিরুৎসাহিতও করা হয়।

অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার কারণে ইচ্ছা থাকলেও মেয়েরা অগ্রসর হতে পারছে না। এ ক্ষেত্রে মোবাইল, ল্যাপটপ, ইন্টারনেট ইত্যাদি ডিভাইস–সংক্রান্ত সুবিধা ও ভর্তুকিমূলক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। আইসিটি খাতে নারীদের ভীতির অন্যতম কারণ সাইবার বুলিং ও অনলাইনে অনিরাপত্তা। এ জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন আরও শক্তিশালী করে তুলতে হবে। নারীদের জন্য একটি নিরাপদ অনলাইন প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে হবে।

তাসনিম আজিজ রিমি

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী

বাংলাদেশের বাংলাদেশের ভোলায় বাল্যবিবাহের হার সবচেয়ে বেশি। ভোলার প্রত্যন্ত অঞ্চল চরপাতিলায় বাল্যবিবাহের হার ৯০ শতাংশের বেশি। সমাজে কিছু প্রচলিত রীতিনীতি বাল্য-বিবাহের অন্যতম কারণ। তা ছাড়া নারীশিক্ষায়ও ঘাটতি রয়েছে। আর তাঁদের ভবিষ্যতের জন্য আয়–রোজগারের পথটি এখনো উন্মুক্ত নয়। এ জন্য বিয়ের মাধ্যমে মেয়েরা স্বাবলম্বী ও নিরাপত্তা পাবেন বলে মনে করা হয়। বাল্যবিবাহ ও অপরিপক্ব গর্ভধারণে শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যঝুঁকি সম্পর্কে বেশির ভাগ মানুষ ধারণা রাখে না। অসচ্ছল পরিবারগুলো কন্যাসন্তানকে দ্রুত বিয়ে দিয়ে দায়মুক্ত হতে চায়। গ্রামাঞ্চলে ভুয়া পরিচয়পত্র তৈরি করে বাল্যবিবাহ দেওয়া হয়। দেশে বাল্যবিবাহ রোধে আইনের যথাযথ প্রয়োগ হলে বাল্যবিবাহ সহজে প্রতিরোধ করা যেত। বাল্যবিবাহ রোধে অসচ্ছল পরিবারগুলোর কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা দরকার। নারীশিক্ষার মান উন্নয়ন করা প্রয়োজন। বাল্যবিবাহ বন্ধে অর্থনৈতিক মুক্তি ও সামাজিক কুসংস্কার দূর করা জরুরি।

আয়েশা খাতুন

শিক্ষার্থী, দ্বাদশ শ্রেণী       

আমরা কন্যাশিশুরা পড়াশোনার সময় দারিদ্র্য, বাল্যবিবাহ,  জেন্ডার ভিত্তিক বৈষম্য ও নিরাপত্তার সমস্যায় পড়ি। মাসিক চলাকালে শিক্ষ-াপ্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যায় না। দারিদ্র্যের কারণেই মূলত বাল্যবিবাহ হয়। মেয়েদের বড়জোর পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করানো হয়। তারপর আর পড়াতে চায় না। কারণ, বিয়ে দিলে অন্য ঘরে চলে যাবে। ফলে খরচ কমবে। একসময় সংসারের দায়িত্ব নেবে বলে ছেলেদের বেশি পড়ানো হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দূরত্বের কারণে কন্যাশিশু ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। শিক্ষকদের দ্বারাও মেয়েরা অনেক সময় যৌন হয়রানির শিকার হয়।

বাল্যবিবাহ ঠেকাতে পরিবারের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি ও এনজিও সংস্থাগুলো ঝরে পড়া শিশুদের দায়িত্ব নিতে পারে। কারিগরি শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ করা ও বিভিন্ন প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মেয়েদের আত্মবিশ্বাসী করে গড়ে তোলা দরকার, যেন তারা নিজেরাই নিজেদের খরচ বহন করতে পারে।

ফাহমিদা হক নিশি

নির্বাহী পরিচালক,  ইয়েস বিডি

জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অন্যান্য দেশে একটা বিরূপ প্রভাব দেখা যাচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগের ফলে সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বন্যা আমাদের কাছে আরও স্পষ্ট করে তুলছে যে জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগের ফলে নারী ও কন্যাশিশুরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুর্যোগে আক্রান্ত এলাকা ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে যথাযথ স্যানিটেশন থাকে না, যা তাদের স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলে।

দুর্যোগে অভিভাবকেরা নিরাশ্রয় হয়ে যাওয়ায় কন্যাশিশুদের তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দিতে চান। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে নারী নেতৃত্ব বাড়াতে আরও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে। দুর্যোগ–পরবর্তী সময়ে মেয়েদের স্কুলে ফেরত আনা নিশ্চিত করতে

হবে। দুর্যোগকালে শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে ভ্রাম্যমাণ স্কুল তৈরি করা যেতে পারে। সরকারি, বেসরকারি ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নেটওয়ার্ক স্থানীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে দিতে হবে। তাহলে এ–সংক্রান্ত উদ্যোগগুলো বাস্তবায়ন করা সহজ হবে।

নিশাত সুলতানা

ডিরেক্টর, ইনফ্লুয়েন্সিং, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ

প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের জন্য আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। বাংলাদেশ সরকার আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবসের প্রতিপাদ্যের বাংলা নির্ধারণ করেছে ‘কন্যাশিশুর স্বপ্নে গড়ি আগামীর বাংলাদেশ’। সাম্প্রতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশ এখনো বাল্যবিবাহের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম ও বিশ্বে চতুর্থ। এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশকে বাল্যবিবাহমুক্ত করতে প্রায় ২১৫ বছর সময় প্রয়োজন।

২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ১১৬ জন কন্যাশিশু হত্যা, ধর্ষণসহ নানা ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশের নারীরা শিক্ষা, মেধা ও যোগ্যতায় অনেক দূর এগিয়ে গেছেন। এ ধারাবাহিকতা অবশ্যই চলমান থাকবে। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ কন্যাশিশুদের স্বপ্নগুলো পূরণের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। একদিন নিশ্চয়ই আমাদের লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারব। প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের এবারের থিম হলো ‘ইউনাইট ফর পিস’। আমরা সারা বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করি। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী সুরক্ষিত না থাকলে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে না।