পবিত্র আশুরা পালিত হচ্ছে
রাজধানীসহ সারা দেশে পালিত হচ্ছে পবিত্র আশুরা। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে গত বছরের মতো এবারও সীমিত কর্মসূচি চলছে।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে সীমিত আকারে তাজিয়া মিছিল বের করা হয়। হোসেনি দালানের উত্তর গেট দিয়ে মিছিল শুরু হয়। দক্ষিণ গেটে গিয়ে তাজিয়া মিছিল থামবে। মিছিলে উড়ানো হয়েছে কালো-লাল-সবুজের নিশান। এ সময় মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা বুক চাপড়ে ‘হায় হোসেন, হায় হোসেন’ ধ্বনি তোলেন। তাজিয়া মিছিলের অনুষ্ঠান চলবে পবিত্র জুমার নামাজের আগপর্যন্ত। মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের বেশির ভাগের পরনে ছিল কালো পোশাক।
তাজিয়া মিছিলে অংশ নিয়েছেন মো. সেলিম নামের এক যুবক। তিনি বলেন, ‘আমাদের বাপ-দাদার আমল থেকে আশুরার আয়োজন চলছে। এ জন্য আমরাও পালন করছি। দুই বছর ধরে হোসেনি দালানের ভেতরেই অনুষ্ঠান করছি বলে কষ্ট লাগছে।’
সকাল থেকেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান নেন হোসেনি দালানে। সেখানে পুলিশের পাশাপাশি র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) সদস্যদের নজরদারি করতে দেখা গেছে।
হোসেনি দালানের ব্যবস্থাপনা উপকমিটির সদস্য ও তাজিয়া মিছিলের যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ বাকের রেজা মজলুম প্রথম আলোকে বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে হোসেনি দালানের ভেতরেই সীমিত আকারে এবারের আশুরা পালিত হচ্ছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আগামী বছর আবার বড় আকারে মিছিল বের করা হবে।
সারা বিশ্বের মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও শোকাবহ দিন আজ ১০ মহররম। দিনটি পবিত্র আশুরা নামেও পরিচিত। সৃষ্টির শুরু থেকে মহররমের ১০ তারিখে, তথা আশুরার দিন অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ফলে, আশুরার মর্যাদা ও মাহাত্ম্য উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।
আরবি ‘আশারা’ শব্দের অর্থ দশ। আর আশুরা মানে দশম। হিজরি ৬১ সনের এই দিনে সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে যুদ্ধ করতে গিয়ে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসাইন (রা.) এবং তাঁর পরিবারের সদস্যরা কারবালার ময়দানে ইয়াজিদের সৈন্যদের হাতে শহীদ হন।
পবিত্র আশুরা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে সাম্য, ন্যায়ভিত্তিক ও শান্তিপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মুসলিম উম্মাহর ঐক্য, সংহতি ও অব্যাহত অগ্রগতি কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতীয় জীবনে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে পবিত্র আশুরা থেকে শিক্ষা নিতে হবে।
আশুরা উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। জাতীয় দৈনিকগুলো আশুরার তাৎপর্য নিয়ে বিশেষ প্রবন্ধ ও নিবন্ধ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন বেসরকারি রেডিও-টিভি চ্যানেল আজ বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে।