সুরা ওয়াকিয়ার সারকথা
সুরা ওয়াকিয়া পবিত্র কোরআনের ৫৬ তম সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ। এর ৩ রুকু, ৯৬ আয়াত। ওয়াকিয়া মানে মহাঘটনা। এই সুরায় আল্লাহর অসীম ক্ষমতা, কিয়ামতের ভয়াবহতা, ভূমিকম্প, বজ্রপাত, ঝড়ঝঞ্ঝা, শেষ বিচার, জান্নাতের নিয়ামত এবং জাহান্নামের শাস্তির কথা রয়েছে।
এ সুরায় বলা হয়েছে কিয়ামতের দিন মানুষের বিভিন্ন অবস্থা ও অবস্থানের কথা। বলা হয়েছে যে কিয়ামতের দিন পৃথিবী প্রকম্পিত হবে এবং পাহাড় ছিন্নভিন্ন হয়ে যাবে। শেষ বিচারের দিন মানুষ তিন ভাগে বিভক্ত হবে—১. আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্তরা, ২. ডান হাতের সঙ্গীরা, এবং ৩. বাম হাতের সঙ্গীরা।
হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.)–এর দেওয়া বর্ণনা আছে যে, ‘প্রতি রাতে যে সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করে, দারিদ্র্য কখনো তাকে স্পর্শ করবে না।’ এ জন্য এই সুরাটিকে সুরা গনি বা ধন লাভের সুরা-ও বলা হয়।
হজরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা.)–এর দেওয়া বর্ণনা আছে যে, ‘প্রতি রাতে যে সুরা ওয়াকিয়া পাঠ করে, দারিদ্র্য কখনো তাকে স্পর্শ করবে না।’ এ জন্য এই সুরাটিকে সুরা গনি বা ধন লাভের সুরা-ও বলা হয়।
সুরা ওয়াকিয়ায় আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমরা ভাগ হয়ে যাবে তিন ভাগে। তখন ডান হাতের সঙ্গীরা? কী হবে ডান হাতের সঙ্গীদের? আর বাম হাতের সঙ্গীরা? কী হবে বাম হাতের সঙ্গীদের? আর যারা আগে যাবে তারা তো আগেই থাকবে ।’
কিয়ামতে মানুষ তিন ভাগে বিভক্ত হবে: সৌভাগ্যবান, দুর্ভাগা, ভালো কাজে অগ্রগামীরা। ভালো কাজে অগ্রগামী কারা? তারা পাবে অনন্ত পুরস্কার। তারা আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত।
সৌভাগ্যবান লোকদের থাকবে পুরস্কার। সৌভাগ্যবান লোক হবে কারা?
দুর্ভাগা লোক হবে কারা? দুর্ভাগাদের পরকালীন কঠিন শাস্তির বিবরণ।
পুনরুত্থানের পক্ষে অকাট্য যুক্তি।
কোরআন আল্লাহর মর্যাদাবান কিতাব।
এই কিতাবকে প্রত্যাখ্যান করা বিরাট বোকামি।
সৌভাগ্যবানদের শুভ পরিণতি।
আল্লাহর বার্তা প্রত্যাখ্যানকারীদের অশুভ পরিণতি।
এই সুরার মাধ্যমে কেয়ামত সম্পর্কে জানা যায়। যখন কেয়ামত সংঘটিত হবে তখন পৃথিবীতে ভূমিকম্প তৈরি হবে। পাহাড় তুলা হয়ে উড়ে যাবে।
আল্লাহ বলেন, যখন যা আসার তা আসবে, আর তাকে কেউ অস্বীকার করতে পারবে না। তখন কাউকে কাউকে নিচে নামানো হবে এবং কাউকে কাউকে ওপরে ওঠানো হবে। পৃথিবী তখন প্রবল ঝাঁকুনিতে প্রকম্পিত হবে, পাহাড়গুলো যাবে ভেঙেচুরে। ধুলোয় গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে যাবে।
এ সুরায় আল্লাহর অস্তিত্ব, তার একত্ব এবং অসীম কুদরতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘তোমরা যে-পানি পান কর সে সম্পর্কে কি তোমরা চিন্তা করেছ? তোমরাই কি তা মেঘ থেকে নামিয়ে আন, না আমি তা বর্ষণ করি? আমি তো ইচ্ছা করলে তা নোনা করে দিতে পারি। তবু কেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো না? তোমরা যে আগুন জ্বালো, তা কি লক্ষ করে দেখেছ? তোমরাই কি গাছ সৃষ্টি করেছ (যার থেকে আগুন তৈরি হয়), না আমি? আমি একে করেছি এক নিদর্শন ও মরুবাসীদের জন্য প্রয়োজনীয় বস্তু। সুতরাং তুমি তোমার মহান প্রতিপালকের নামের পবিত্র মহিমা ঘোষণা করো।আমি শপথ করছি অস্তগামী নক্ষত্ররাজির, অবশ্যই এ মহাশপথ, যদি তোমরা জানতে।’
যাঁরা পবিত্র, তাদেরই কোরআন স্পর্শ করা উচিত। বিভিন্ন হাদিসেও ওজু ছাড়া কোরআন স্পর্শ না করতে বলা হয়েছে।
আল্লাহ বলেন, নিশ্চয়ই এ সম্মানিত কোরান, যা সুরক্ষিত আছে কিতাবে, পূত-পবিত্র ছাড়া অন্য কেউ তা স্পর্শ করবে না। এ বিশ্বজগতের প্রতিপালকের কাছ থেকে অবতীর্ণ। তবুও কি তোমরা এ বাণীকে তুচ্ছ গণ্য করবে?’