যে কাজ সমাজ–জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে
সুরা হুজুরাত পবিত্র কোরআনের ৪৯তম সুরা। হুজুরাত মানে অন্দরমহল। সুরাটি মদিনায় অবতীর্ণ। এর ২ রুকু, ১৮ আয়াত। এই সুরার তিন অংশ: ১. রাসুলের সঙ্গে বিশ্বাসীদের ব্যবহার, ২. মুমিনদের বৈশিষ্ট্য, এবং ৩. আল্লাহর রাসুল (সা.)–কে প্রকৃত মর্যাদা প্রদান।
সুরাটির প্রথম অংশে রাসুলের প্রতি মুমিনদের আচরণ কেমন হওয়া উচিত এবং না করলে তার দুর্ভাগ্যজনক পরিণামের বর্ণনা করা হয়েছে। আবার রাসুলের প্রতি যথাযোগ্য আচরণের সুফলের বর্ণনাও এতে করা হয়েছে।
সুরার দ্বিতীয় অংশে মুমিনদের বৈশিষ্ট্য এবং অন্য মুমিন ও মানুষের সঙ্গে মুমিনদের আচরণ, আর তা না করার পরিণাম সম্পর্কে বর্ণনা করা হয়েছে।
তৃতীয় অংশে এসে সুরাটি পরিণতিতে পোঁছেছে। আল্লাহর রাসুল (সা.)–কে প্রকৃত মর্যাদা দিয়ে আর তাঁর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে মুমিনদের নিজেদের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার মাধ্যমে আল্লাহর পুরস্কারের কথা এসেছে। সুরাটি শেষ হয়েছে আল্লাহর মহত্ব প্রকাশ করে।
এই সুরায় অসত্য, মিথ্যা, সন্দেহ উদ্রেককারী, গুজব বা শত্রুতার সৃষ্টি হয়—এমন কিছুর প্রচার থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। সংবাদ যাচাই না করে গুজব ছড়ানো ভয়াবহ পাপ। আল্লাহ বলেছেন, ‘হে মুসলমানরা, যদি কোনো পাপাচারী লোক কোনো খবর নিয়ে আসে, তাহলে তা যাচাই করে দেখবে যেন অজ্ঞতাবশত কোনো জাতির ওপর আক্রমণ করা না হয়। এমন কাজ করলে তোমাদের নিজেদের কার্যকলাপ সম্পর্কে অনুতাপ করতে হবে।’ (সুরা হুজুরাত, আয়াত: ৬)
রাসুল (সা.)–ও বলেছেন, ‘সব শোনা কথা (যাচাই-বাছাই করা ছাড়া) বলা কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য যথেষ্ট।’ (আবু দাউদ, হাদিস: ৪৯৯২)
আল্লাহ সুরা হুজুরাতে সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করে বা সমাজ–জীবনে বিপর্যয় সৃষ্টি করে, এমন কিছু করা থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন, যেমন: ১. উপহাস করা, ২. খোঁটা দেওয়া, ৩. মন্দ নামে ডাকা, ৪. অনুমান করা, ৫. দোষ অনুসন্ধান, ও ৬. কুৎসা করা।