আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.)যেভাবে মুসলমান হলেন
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) ছিলেন একজন ইহুদি পাদরি। তিনি ইহুদি ধর্মের গ্রন্থ সম্পর্কে ভালোভাবে জানতেন। সেখানে বর্ণিত শেষ নবীর আলামত সম্পর্কে তাঁর জানা ছিল। তিনি ছিলেন হজরত ইয়াকুব ইবনে ইউসুফ (আ.)-এর বংশধর।
রাসুল (সা.) যখন মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করতে এলেন, তখন মদিনার লোকজন দলে দলে রাসূল (সা.)-কে দেখতে আসছিল। তাদের সঙ্গে আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.)-ও এলেন। মুহাম্মদ (সা.)-ই ইহুদিদের ধর্মগ্রন্থে বর্ণিত শেষ নবী কি না তা যাচাই করতে তিনি রাসূল (সা.)-কে কয়েকটি প্রশ্ন করলেন।
আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) রাসুল (সা.) এর নূরানী চেহারা দেখেই অনুভব করতে পারেন যে, সত্যিই ইনি আল্লাহর প্রেরিত শেষ নবী। রাসুলুল্লাহ (সা.) উপস্থিত নব্য মুসলমানদের মধ্যে ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করছিলেন। তিনি সেদিন রাসুল (সা.)–এর কথা শুনে কোনো প্রশ্ন না করেই চলে গেলেন।
দ্বিতীয় দিন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে উপস্থিত হয়ে তাঁর সঙ্গে কিছুক্ষণ একান্ত আলোচনাকালে এমন কিছু প্রশ্ন করলেন, যার উত্তর নবী ছাড়া অন্য কারো পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয়।
এ সম্পর্কে হজরত আনাস (রা.)–এর একটি বর্ণনা আছে। আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) নবী (সা.)-এর কাছে এসে বললেন, আমি আপনাকে তিনটি প্রশ্ন করছি। এগুলোর ঠিক উত্তর নবী ছাড়া অন্য কেউ জানে না। প্রশ্নগুলো হলো: ১. কিয়ামতের সর্বপ্রথম আলামত কী? ২. জান্নাতবাসীদের সর্বপ্রথম কী খাবার দেওয়া হবে? ৩. কী কারণে সন্তান আকৃতিতে কখনো পিতার মতো, কখনো মায়ের মতো হয়?
নবীজি (সা.) বললেন, বিষয়গুলো সম্পর্কে এইমাত্র জিবরাইল (আ.) আমাকে জানিয়ে গেলেন। এর উত্তর হলো: ১. কিয়ামত কাছাকাছি হওয়ার সর্বপ্রথম আলামত লেলিহান আগুন, যা মানুষকে পূর্বদিক থেকে পশ্চিম দিকে ধাবিত করে নিয়ে যাবে এবং সবাইকে একত্র করবে। ২. সর্বপ্রথম খাদ্য যা জান্নাতবাসী খাবে তা হলো মাছের কলিজার বাড়তি অংশ। ৩. যদি নারীর আগে পুরুষের বীর্যপাত ঘটে, তবে সন্তান পিতার মতো হয়। কিন্তু আগে যদি নারীর হয়, তবে সন্তান মায়ের মতো হয়।
আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রা.) বললেন, আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে আল্লাহ ছাড়া কোনো মাবুদ নেই এবং নিশ্চয়ই আপনি আল্লাহর রাসুল। (বুখারি, হাদিস:৩৯৩৮)