এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে সুরা মুজাদালাহর ২২ নম্বর আয়াত নাজিল হয়
বদর যুদ্ধের প্রাক্কালে কুরাইশ কাফেলার গতিবিধি অনুসরণের জন্য একদল সাহাবিকে পাঠিয়ে আবু উবাইদাকে(রা.) তাঁদের আমির নিযুক্ত করেন। ওহুদ যুদ্ধে মুসলিমরা পরাজয়ের মুখে পড়লে এবং ‘মুহাম্মদ কোথায়? মুহাম্মদ কোথায়?’ বলে অবিশ্বাসীরা জোরে জোরে চিৎকার করতে থাকলে, আবু উবাইদা (রা.) বুক পেতে রাসুল (সা.)-কে অবিশ্বাসীদের তির থেকে রক্ষা করেছিলেন। এই কাজটিতে তিনি ছিলেন দশজনের একজন।
বদর যুদ্ধের দিন আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ (রা.) যুদ্ধের ময়দানে এমন বেপরোয়াভাবে শত্রুপক্ষের ওপর আক্রমণ চালাতে থাকেন যে তারা ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে। কিন্তু শত্রুপক্ষের এক লোক বারবার ঘুরেফিরে তাঁর সামনে এসে দাঁড়াতে লাগল। আর আবু উবাইদা (রা.) তার সামনে থেকে সরে যেতে লাগলেন, যেন তাকে এড়িয়ে যাচ্ছেন। লোকটি এবার ভিড়ের মধ্যে প্রবেশ করল।
আবু উবাইদা (রা.) সেখানেও তাকে এড়িয়ে চললেন। অবশেষে সে শত্রুপক্ষ ও আবু উবাইদা (রা.)–র মাঝখানে এসে বাধা হয়ে দাঁড়াল। আবু উবাইদা (রা.) তখন তাকে তলোয়ার দিয়ে আঘাত করলেন। লোকটি মাটিতে গড়িয়ে পড়ল। গড়িয়ে পড়া সেই লোকটি ছিল আবু উবাইদা (রা.)–এর কাফির পিতা আবদুল্লাহ ইবনুল জাররাহ।
এই ঘটনার প্রেক্ষাপটে সুরা মুজাদালাহর ২২ নম্বর আয়াত নাজিল হয়। আল্লাহ বলেন, ‘তুমি এমন কোনো সম্প্রদায় পাবে না, যারা আল্লাহ ও পরকালে বিশ্বাস করে, অথচ ভালোবাসে তাদের যারা আল্লাহ ও তার রাসুলের বিরোধিতা করে; হোক না তারা তাদের পিতা, পুত্র, ভ্রাতা বা জ্ঞাতিগোত্র। আল্লাহ তাদের অন্তরে বিশ্বাসকে সুদৃঢ় করেছেন ও নিজের রুহ দিয়ে তাদের শক্তিশালী করেছেন। তিনি তাদের প্রবেশ করাবেন জান্নাতে, যার নিচে নদী বইবে। সেখানে তারা চিরকাল বাস করবে। আল্লাহ তাদের ওপর প্রসন্ন এবং তারাও আল্লাহর অনুগ্রহে সন্তুষ্ট। এরাই আল্লাহর দল। দেখো, আল্লাহর দলই সফলকাম হবে।’ (সুরা মুজাদালাহ, আয়াত: ২২)