মালদ্বীপবাসী শাবান মাস থেকেই রমজানের প্রস্তুতি নিতে থাকেন। সরকারিভাবে মসজিদগুলোতে সৌন্দর্য বাড়ানোর কাজ চলে। সরকারি চাঁদ দেখা কমিটি যখন নতুন চাঁদের ঘোষণা দেয়, তখন দ্বীপজুড়ে শুরু হয় আনন্দ–উল্লাস। রাস্তাঘাটগুলো নতুন আলোতে ঝলমল করে। সমুদ্রপাড়ে সাহ্রি পর্যন্ত চলে অনুষ্ঠান।
মালদ্বীপবাসী রমজানকে বরণ করে নেন ভিন্নভাবে। রাজধানী মালের পাশে বসে রমজান-মেলা। এই মেলা তাঁদের রমজানের এক ঐতিহ্যবাহী আয়োজন। মেলায় খাবারদাবার ও পোশাক পাওয়া যায় বিশেষ মূল্যে।
রমজানকে স্বাগত জানিয়ে কর্মঘণ্টা কমিয়ে আনা হয়। গ্রাম্যবাজার থেকে শুরু করে সুপারশপে সর্বত্র চলে দাম কমানোর হিড়িক। কে কোন পণ্যে কত কম দিয়ে ক্রেতাকে আকৃষ্ট করতে পারে, চলে সেই প্রতিযোগিতা। বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় চাল, ডাল, ছোলা, চিনি ও ফলমূলের ওপর থাকে সর্বোচ্চ ছাড়।
রমজানজুড়ে পুরো মালদ্বীপে নানা ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। তাতে থাকে হামদ, নাত, কবিতা আবৃত্তি ও কোরআন তিলাওয়াত প্রতিযোগিতা। সন্ধ্যার পর সবাই মিলে ইফতার করেন। ইফতারের পরে আয়োজন করা হয় ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান রাইবো।
মালদ্বীপে রান্নার প্রধান উপাদান হলো মাছ ও নারকেল। তাদের অধিকাংশ খাবারেই মাছ ও নারকেল ব্যবহার করা হয়। নারকেল দিয়ে তারা সালাদও তৈরি করে। নারকেল দিয়ে তৈরি হয় নানা পদের মুখরোচক পানীয়। মাছ দিয়ে তৈরি হয় স্যুপ। তাদের ইফতারে খেজুর ও শরবতের সঙ্গে থাকে বোকিবা নামের একধরনের মিষ্টান্ন।
অন্যান্য খাবারের মধ্যে থাকে গোল ও শুকনা মিষ্টি গুলহা, মাশরুশি একধরনের মাছ ভাজা, আর ফানিবুক কেক।
রমজানের আনন্দকে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য তাঁরা বাড়ি বাড়ি ইফতার পৌঁছে দেন, বিশেষ করে যাঁদের সঙ্গে সম্পর্ক দুর্বল, তাঁদের বাড়িতে। তাঁরা দরিদ্র ও অসহায় ব্যক্তিদের মধ্যে ঈদের সামগ্রী বিতরণ করেন