মহানবী (সা.)-এর আঙুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার বিবরণ আছে সুরা কমরে
সুরা কমরের শুরুতেই আছে মহানবী (সা.)-এর আঙুলের ইশারায় চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার বিবরণ। নবীজি (সা.) তখন মক্কার অবিশ্বাসী ও ইহুদিদের একত্ববাদের দাওয়াত দিচ্ছেন। আবু জাহেলের নেতৃত্বে একদল অবিশ্বাসী ও ইহুদিরা এসে জানাল, মুহাম্মদ (সা.) যদি চাঁদকে দ্বিখণ্ডিত করে দিতে পারে তাহলে তারা আল্লাহর রাসুল হিসেবে তাঁকে মেনে নেবে।
জিলহজ মাসের ১৪ তারিখ নবীজি (সা.) আল্লাহর কাছে দোয়া করে আঙুলের ইশারা করলে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। ইহুদিরা ইসলাম গ্রহণ করলেও অবিশ্বাসীরা তাঁর এই মোজেজাকে জাদু বলে আখ্যায়িত করে।
চাঁদ এত স্পষ্টভাবে দুই টুকরা হয়েছিল যে ওই দুই টুকরার ব্যবধানের মধ্য দিয়ে হেরা পর্বত দৃষ্টিগোচর হয়েছিল।
আবু জাহেল বলল, এটা জাদু। তাকে মক্কার বাইরে থাকা লোকেরা এসেও চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হওয়ার সংবাদ দেয়। তারপরও সে বলে, এটা জাদু।
সুরা কমর পবিত্র কোরআনের ৫৪তম সুরা। এটি মক্কায় অবতীর্ণ। এর ৩ রুকু, ৫৫ আয়াত। কমর অর্থ চাঁদ। রাসুল (সা.)–এর নবুওয়াতের সত্য প্রমাণের জন্য কুরাইশরা চন্দ্রকে দ্বিখণ্ডিত করতে বললে মহানবী (সা.) তাঁর আঙুলের ইশারা করলে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত হয়ে যায়। এ সুরায় বলা হয়েছে, নুহ (আ.)-এর সম্প্রদায়, আদ জাতি, লুত (আ.)-এর সম্প্রদায় এবং ফেরাউন সত্যের আমন্ত্রণ পেয়েও তা অস্বীকার করেছিল। এর পরিণতিতে তারা চিরতরে হারিয়ে যায়।
এ সুরার শুরুতেই অলৌকিক ঘটনাটি বর্ণনা করা হয়েছে। বলা হয়েছে হজরত মুহাম্মদ (সা.)–এর দেখানো নিদর্শন, কাফেরদের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া এবং তাদের পরিণতি সম্পর্কে। অবিশ্বাসীরা নিদর্শন দেখলেও যে তা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, এটাই তাদের চিরন্তন স্বভাব। আল্লাহ প্রাচীন উদাহরণ দিয়ে টেনে এনেছেন আদ, সামুদ ও ফেরাউনসহ নুহ (আ.) ও লুত (আ.)–এর জাতি তা অস্বীকার করার পরিণতির কথা।
বিভিন্ন জাতিকে আল্লাহ বিভিন্ন উপায়ে শাস্তি দিয়েছেন। বেশির ভাগই প্রাকৃতিক শক্তি দিয়ে। তাদের পরিণতির বর্ণনা দেওয়ার পরপরই আল্লাহ বারবার বেছেন, ‘আমি এ কোরআনকে উপদেশ লাভের সহজ উৎস বানিয়ে দিয়েছি। এমতাবস্থায় উপদেশ গ্রহণকারী কেউ আছে কি?’
এরপর আল্লাহ আগের জাতিগুলোর সঙ্গে বর্তমানের তুলনা টেনে আখিরাতে এর ভয়ংকর পরিণতির কথা বর্ণনা করেছেন। আল্লাহর কাছে সবার কর্মকাণ্ডেরই লিপিবদ্ধ আছে, যা সহজভাবে পরিণতি নির্ধারণ করা হবে। বিশ্বাসীদের ভালো পরিণতির কথা দিয়ে সুরার ইতি টানা হয়েছে।