নিগাসের বিরুদ্ধে আবিসিনীয়দের বিদ্রোহ

বাবার বরাত দিয়ে জাফর ইবনে মুহাম্মদ আমাকে বলেছেন, আবিসিনীয়রা একযোগে নিগাসের কাছে গিয়ে বলল, ‘আপনি আমাদের ধর্ম ত্যাগ করেছেন!’

তারপর তারা তাঁর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করল।

নিগাস জাফর আর সঙ্গীদের জন্য এক জাহাজ প্রস্ত্তত করলেন, তাঁদের ডেকে বললেন, ‘জাহাজে উঠে তৈরি হয়ে যান। যদি আমি পরাজিত হই, যেখানে খুশি চলে যাবেন। আর যদি জয়লাভ করি, তাহলে যেখানে আছেন তখন সেখানেই থাকবেন।’

তারপর একটা কাগজ নিয়ে তাতে লিখলেন, ‘তিনি [রাসুল (সা.)] সাক্ষ্য দেন যে, আল্লাহ্‌ ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, মুহাম্মদ আল্লাহ্‌র দাস ও রাসুল। তিনি সাক্ষ্য দেন যে মরিয়মের ছেলে ঈসা (আ.) আল্লাহ্‌র দাস, রাসুল, আত্মা ও বাণী—যা তিনি মরিয়মের ভেতর নিক্ষেপ করেছিলেন।’ লিখে সে কাগজ তার জামার ডান কাঁধের কাছে পকেটে রেখে দিলেন। তারপর তিনি গেলেন আবিসিনীয়দের কাছে। তারা সবাই তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিল। তিনি বললেন, ‘হে জনগণ, তোমাদের ওপর কি আমার সবচেয়ে বেশি দাবি নয়?’

তারা বলল, ‘নিশ্চয়ই।’

‘তাহলে তোমাদের মধ্যে আমার জীবন কী রকম কাটছে বলে মনে করো তোমরা?’

ওরা বলল, ‘চমৎকার।’

‘তোমাদের সমস্যাটা কী তাহলে?’

‘আপনি আমাদের ধর্ম ত্যাগ করেছেন। আপনি বলছেন ঈসা একজন ক্রীতদাস।’

‘তোমরা ঈসাকে কী বলো?’

‘আমরা বলি, তিনি ঈশ্বরের ছেলে।’

জামার ওপরে বুকের কাছে হাত রাখলেন নিগাস, যার অর্থ হয়, ‘তিনি সাক্ষ্য দেন যে মরিয়মের ছেলে ঈসা এর চেয়ে বেশি কিছু ছিলেন না।’

‘এর’ বলতে তিনি যা লিখেছিলেন, তা বুঝিয়েছিলেন। ওরা সব খুশি হয়ে চলে গেল।

এই সংবাদ পৌঁছাল রাসুলে করিমের (সা.) কানে।

নিগাসের মৃত্যুর পর তিনি তাঁর জন্য মোনাজাত করেছিলেন, তাঁর পাপ ক্ষমা করার জন্য আল্লাহ্‌র দরবারে হাত তুলেছিলেন।

অনুবাদ: শহীদ আখন্দ

প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশিত ‘সিরাতে রাসুলুল্লাহ (সা.)’ বই থেকে