হজের দিনগুলোয় মুঠোফোনের ব্যবহার
হজ ব্যবস্থাপনার অনেকাংশই এখন তথ্যপ্রযুক্তিনির্ভর। তথ্যপ্রযুক্তিকে ব্যবহার করে হজের প্রাক্-নিবন্ধন ও নিবন্ধন করছেন হজযাত্রীরা। ব্যাংকে হজ প্যাকেজের টাকা জমা দেওয়ার পর ব্যাংক থেকে নিবন্ধন সনদ পাচ্ছেন, যাতে প্যাকেজ সম্বন্ধে বিস্তারিত থাকছে।
হজযাত্রীর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ অনেক ভুল–বোঝাবুঝি দূর করে সার্বিক অভিজ্ঞতাকে উন্নততর করা সম্ভব হয়েছে। হজের ওয়েবসাইটে ট্র্যাকিং নম্বর যেমন H176FE00518 দিয়ে সার্চ দিলে তথ্যও পাওয়া যাচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন পর্যায়ে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হচ্ছে। কিয়স্কের মাধ্যমে ট্রিটমেন্ট কার্ড প্রদানের ফলে সৌদি আরবে চিকিৎসাসেবা গ্রহণে কম সময় লাগছে। সৌদি আরবে হারানো হজযাত্রীদের সেবা প্রদান দ্রুততার সঙ্গে করা যাচ্ছে। আর এই সবই করা যায় মুঠোফোনের মাধ্যমে।
প্রযুক্তির যেসব সেবা
হজযাত্রীর পক্ষে তাঁর হজ এজেন্সি এবং বাংলাদেশ ও সৌদি সরকারের বিভিন্ন দপ্তর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করছে। ফলে সার্বিকভাবে তাঁর প্রশাসনিক কাজগুলোয় সময় কম লাগছে। তবে হজযাত্রী নিজে তাঁর মুঠোফোনে ‘ই-হজ বিডি’ অ্যাপের মাধ্যমে হজসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য পেতে পারেন। এ ছাড়া ২০২৩ সালে সৌদি সরকারের বায়োমেট্রিক ভিসা অ্যাপের মাধ্যমে হজযাত্রী ঘরে বসেই ভিসার একটি ধাপ সম্পন্ন করতে পেরেছেন।
মিনা ও আরাফাতে মুঠোফোন
তুলনামূলকভাবে অনেক মানুষ মিনা ও আরাফাতে অবস্থান করেন বলে হজের সময় সেখানে মোবাইল নেটওয়ার্ক ভালো পাওয়া যায় না। মোবাইল ফোনের চার্জ নিয়ে সমস্যা হয় এবং অনেক অ্যাপ চালু থাকায় ডেটা বেশি ব্যবহৃত হয়। দরকার না হলে এ সময় মোবাইল ডেটা অপশন বন্ধ রাখতে পারলে ভালো, তা না হলে পাওয়ার ব্যাংক সঙ্গে রাখতে হবে।
হজের সময় প্যাকেজ সংযোগ
হজ উপলক্ষে সৌদি আরবে মোবাইল ফোন সংযোগদাতা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান হজের বিশেষ সিমকার্ড বা সংযোগ চালু করে। হজযাত্রী নিজের পাসপোর্ট ও ভিসা দেখিয়ে আঙুলের ছাপ দিয়ে (বায়োমেট্রিক পদ্ধতি) রিয়ালের (সৌদি মুদ্রা) বিনিময়ে সিম কিনতে পারবেন। কেনার আগে সিমের কথা বলার রেট ও ইন্টারনেট ডেটার চার্জ কেমন, তা ভালো করে জেনে নেবেন।
ইন্টারনেটসহ সিম ব্যবহার করে যোগাযোগমাধ্যম সিগন্যাল, মেসেঞ্জারে কথা বলা যায়। সৌদি আরবে হোয়াটসঅ্যাপে কথা বলা যায় না, কিন্তু মেসেজ দেওয়া যায়, ছবি পাঠানো যায়। কথা রেকর্ড করে পাঠানো যায়। গ্রুপ তৈরি করে অন্য সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ব্যবহার করতে পারেন।
হজের সময় টাকার দরকার হলে
বয়োবৃদ্ধরা হারিয়ে যাওয়ার ভয়ে নগদ টাকা বহন করেন না। বাংলাদেশের কিছু ব্যাংক হজের সময় সৌদি আরবের রিয়াল খরচ করার জন্য হজ কার্ডের সেবা চালু করেছে। সৌদি আরবের মক্কা–মদিনায় এটিএম বুথ লেনদেনের সুবিধা দেয়। হজে গিয়ে চাইলে কার্ড ব্যবহার করা যায়। কার্ডের মাধ্যমে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।
লেখক: তথ্যপ্রযুক্তি উদ্যোক্তা এবং বেসিসের সাবেক সহসভাপতি