তাহাজ্জুদ নামাজের গুরুত্ব
মধ্যরাতে যখন লোকেরা গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন, পূণ্যার্থী তখন ঘুম থেকে জেগে ইবাদত-বন্দেগি করেন। সুবহে সাদিকের আগ পর্যন্ত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করেন। সুবহে সাদিক হয়ে গেলে এ নামাজ আর পড়া যায় না। যদি রাত দ্বিপ্রহরের পর ঘুম থেকে জেগে ওঠার সম্ভাবনা না থাকে, তাহলে এশার নামাজের পর এবং বিতরের আগে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করতে হয়। তবে রাতের শেষাংশে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে তাতে সওয়াব বেশি।
তাহাজ্জুদের মাধ্যমে বান্দার সঙ্গে আল্লাহর সরাসরি সম্পর্ক স্থাপিত হয়। রাতের শেষ প্রহরে আল্লাহ বান্দাদের প্রতি তাদের কাজের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনার আহ্বান জানান।
আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেছেন যে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি রাতের শেষ এক-তৃতীয়াংশে আল্লাহ জমিনের কাছাকাছি আসমানে নেমে এসে তাঁর বান্দাদের আহ্বান জানিয়ে বলেন, কে আছ যে আমার কাছে প্রার্থনা করবে, যাতে আমি তার প্রার্থনার জবাব দিতে পারি? কে আছ যে আমার কাছে কিছু চাইবে, যাতে আমি তাকে তার প্রার্থিত বস্তু দিতে পারি? কে আছ যে আমার কাছে ক্ষমা চাইবে, যাতে আমি তাকে ক্ষমা করতে পারি?’ (বুখারি ও মুসলিম)
আল্লাহ যেখানে নিজে বান্দার কাছে প্রার্থনা ও ক্ষমার আহ্বান জানান, সেখানে বান্দার প্রার্থনা ও ক্ষমার আবেদন পূর্ণ হওয়ার সম্ভাবনা সর্বোচ্চ।
তাহাজ্জুদের মাধ্যমে বান্দা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ও নৈকট্য লাভ করেন। দিনের নামাজ আদায় করলে প্রকাশ্য সদকা হয়। আর তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করলে গোপন সদকা হয়। তাহাজ্জুদের নামাজ বান্দাকে শয়তানের কুমন্ত্রণা থেকে মুক্ত রাখতে সক্ষম করে। এ ছাড়া শত্রুর ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য তাহাজ্জুদের গুরুত্ব রয়েছে। তাহাজ্জুদ নামাজে রাসুল (সা.)–এর সুন্নতের অনুসরণ তো হয়ই, এতে আত্মারও উন্নয়ন হয়।
মক্কায় অবতীর্ণ সুরা মুজ্জাম্মিলের আয়াতসংখ্যা ২০। এ সুরার শুরুতে আল্লাহ-তাআলা রাসুল (সা.)-কে রাত জেগে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়ার আদেশ দেন। কারণ আল্লাহ তখন তাঁকে নবুয়তের জন্য প্রস্তুত করতে চাচ্ছেন। আত্মসংযমের জন্য বেশি কার্যকর ও কোরআন তিলাওয়াতের সেরা সময় তাহাজ্জুদ। মধ্যরাতের পর শয্যাত্যাগ করাকে তাহাজ্জুদ বলা হয়। তাহাজ্জুদ নামাজের সময় হলো রাত ২টার পর থেকে ফজরের ওয়াক্ত শুরু হওয়ার আগপর্যন্ত।