পৃথিবীর সব স্থানের মুসলিমরা কাবামুখী হয়ে নামাজ পড়েন
কাবা মক্কা নগরে অবস্থিত ইসলামের প্রধান উপাসনাগৃহ। হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তাঁর পুত্র ইসমাইল (আ.) এটি প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলমানরা একে বায়তুল্লাহ বা আল্লাহর বিশিষ্ট উপাসনাগৃহ বলে জ্ঞান করেন। এর অন্য নাম বায়তুল হারাম বা পবিত্র গৃহ। হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আবির্ভাবের আগেও এটি পৌত্তলিক আরবদের একটি পবিত্র ধর্ম-মন্দিরের মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত ছিল। কাবায় তাঁরা ৩৬০টি মূর্তি প্রতিষ্ঠা করেন। অষ্টম হিজরিতে মক্কা বিজয়ের পর মুহাম্মদ (সা.) কাবাকে পৌত্তলিকতামুক্ত করতে এসব মূর্তি অপসারণ করেন। পৃথিবীর সব স্থানের মুসলমানরা বর্তমানে কিবলা বা কাবামুখী হয়ে নামাজ পড়েন। সংগতিসম্পন্ন মুসলমানদের জন্য কাবা জিয়ারত বা হজ পালনকে অন্যতম ফরজ বা অবশ্যকর্তব্য বলে পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
হজের সময় হাজিদের কাবাঘর তাওয়াফ বা প্রদক্ষিণ করতে হয়। প্রতিবছর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে লাখো ধর্মপ্রাণ মুসলমান কাবায় হজ পালনে সমবেত হন। কাবাগৃহের দেয়ালগাত্রে হাজরে আসওয়াদ বা কালো পাথর স্থাপিত আছে। কথিত আছে, অতি প্রাচীনকালে এ প্রস্তরটি বেহেশত হতে পতিত হয়েছিল। হজের সময় হাজিরা এ প্রস্তরটিকে সম্মানের সঙ্গে চুম্বন করেন। কাবাগৃহের কাছেই রয়েছে মাকামে ইব্রাহিম বা ইব্রাহিমের দাঁড়ানোর স্থান ও বিখ্যাত জমজম কূপ। বরকতময় পবিত্র বায়তুল্লাহ শরিফ পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ঘর। বিশ্ব মুসলিমের কেন্দ্র পবিত্র কাবা। মক্কায় হারাম শরিফের মধ্যমণি কাবা। ইংরেজি কিউব শব্দটি আরবি কাবা থেকে গ্রহণ করা হয়েছে। কাবাঘর প্রায় বর্গাকৃতির। কাবা শরিফের দরজা একটি এবং দরজাটি কাবাঘরের পূর্ব দিকে অবস্থিত।
কাবাঘরের ছাদে উন্নত মানের সাদা মার্বেল পাথর লাগানো আছে। এ পাথরগুলো সূর্যতাপ নিয়ন্ত্রণকারী। ছাদের মধ্যে চারদিকে আধা মিটার উঁচু দেয়াল আছে। এতে কাবা গিলাফ ও বাবে কাবা পর্দা আটকানো থাকে। ১৩৬৩ হিজরিতে বাদশা আবদুল আজিজ কাঠের দরজা লাগান, যা তৈরি করতে তিন বছর লেগেছিল। ১৩৯৬ হিজরিতে বাদশা খালেদ ওই দরজা পরিবর্তন করে একটি সোনার দরজা লাগান। এতে ৯৯ হাজার ৯৯৯ ধরনের মোট ২৮৬ কিলোগ্রাম খাঁটি সোনা লেগেছে। দরজাটি দুই পাল্লাবিশিষ্ট, মাঝখানে তালা আছে। এতে আল্লাহ ও পবিত্র কোরআনের আয়াত লেখা।